নিষেধাজ্ঞার হুমকি
৩১ মার্চ ২০১২প্রেসিডেন্ট ওবামার হুমকি
ইতিমধ্যে ইরানের তেল রপ্তানির উপর নিষেধাজ্ঞাসহ কয়েক দফা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে অ্যামেরিকা ও ইউরোপ৷ তবুও ইরানকে নতি স্বীকার করাতে ব্যর্থ হয়ে এবার ইরান থেকে তেল আমদানিকারী দেশগুলোর উপর চাপ বাড়াতে এমনকি নিষেধাজ্ঞা আরোপের উদ্যোগ নিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা৷ কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্টের এমন পদক্ষেপকে ভালো চোখে দেখছে না বিশ্বের অনেক শক্তিধর দেশ৷ ইতিমধ্যে ওবামার এমন ঘোষণা প্রত্যাখ্যান করেছে চীন৷ অন্যান্য দেশও নিয়েছে এই ক্ষেত্রে মিশ্র অবস্থান৷
ওবামার হুমকির ব্যাপারে চীনের অবস্থান
ইরান থেকে তেল আমদানিকারী দেশগুলোর উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের মার্কিন ঘোষণার একদিন পরই তার সমালোচনা করেছে চীন৷ ইরান থেকে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে তেল আমদানিকারী দেশগুলোর অন্যতম চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শনিবার ওবামার পদক্ষেপের প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছে, অন্য কোন দেশকে শাস্তি দেওয়ার অধিকার এককভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেই৷ বিবৃতিতে বলা হয়, ‘‘চীন সবসময় অভ্যন্তরীণ আইনের উপর ভিত্তি করে এক দেশের ওপর আরেক দেশের এককভাবে নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিরোধিতা করে৷ এছাড়া এককভাবে তৃতীয় কোন দেশের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্তও গ্রহণযোগ্য হতে পারে না৷''
তবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের ঘোষণার বিরুদ্ধে বাকযুদ্ধ চালিয়ে গেলেও চীনের কর্মকাণ্ড পরষ্পর বিরোধী৷ সেটা হলো, একদিকে চীন বলছে ইরান থেকে প্রয়োজন মতো তেল আমদানি করার অধিকার তাদের রয়েছে৷ অন্যদিকে, সম্প্রতি ইরান থেকে তেল আমদানির হার হ্রাস করেছে বেইজিং৷ তবে তেল হ্রাসের কারণ মার্কিন চাপ কিনা তা স্পষ্ট নয়৷ কারণ সরকার এ ব্যাপারে স্পষ্ট কোন ব্যাখ্যা না দিলেও চীনের ব্যবসায়ী এবং শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, মার্কিন চাপের চেয়ে বরং তেলের দাম নিয়ে ইরানের সাথে মতভেদের কারণেই তেল আমদানির পরিমাণ কমানো হয়েছে৷ তবে খোলামেলাভাবে না বললেও ওয়াশিংটন বরাবরই ইরানের বদলে সৌদি আরব কিংবা অন্য কোন দেশ থেকে তেল আমদানির জন্য বেইজিং এর সাথে দেনদরবার করে আসছে৷ এ বছরের শুরুতে চীনা প্রধানমন্ত্রী ওয়েন জিয়াবাও সৌদি আরব সফরে গেলে, সৌদি সরকারও এ ব্যাপারে তাদের সম্মতির কথা জানিয়েছে৷
অন্যান্য দেশগুলোর প্রতিক্রিয়া
তবে ওবামার এই নতুন নিষেধাজ্ঞার হুমকির বাইরে রয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ের ১০টি দেশ এবং জাপান৷ কারণ তারা ইতিমধ্যে ইরান থেকে তেল আমদানি হ্রাস কিংবা বন্ধ করেছে৷ এর বাইরে অ্যামেরিকার নিষেধাজ্ঞার হুমকির মধ্যে রয়েছে ভারত, তুরস্ক, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং দক্ষিণ কোরিয়া৷ সৌল অবশ্য ইরান থেকে তেল আমদানি হ্রাসের ক্ষেত্রে ওয়াশিংটনের সাথে ঐকমত্যের কথা জানিয়ে দিয়েছে৷ কিন্তু জ্বালানির অভাবে থাকা ভারত ইরান থেকে নিজস্ব চাহিদার ১২ শতাংশ তেল আমদানি করে৷ তারা বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইইউ-এর একক নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে তার কান দেবে না৷ তবুও ভারত এবং তুরস্কও ধীরে ধীরে ইরান থেকে তেল আমদানি কমিয়েছে - এমনটিই জানা গেছে তাদের সাম্প্রতিক বাণিজ্যিক হিসাব থেকে৷
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই, এপি/রয়টার্স
সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম