ইউরোপে একঘরে হয়ে পড়লো জার্মানির এএফডি
২৪ মে ২০২৪আসন্ন ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচনের ঠিক আগে ইউরোপের চরম দক্ষিণপন্থি শিবিরে ভাঙন দেখা যাচ্ছে৷ পার্লামেন্টে ‘আইডেন্টিটি অ্যান্ড ডেমোক্র্যাসি' নামের সংসদীয় গোষ্ঠী বৃহস্পতিবার জার্মানির এএফডি দলকে বহিষ্কার করেছে৷ অর্থাৎ আগামী ৬ থেকে ৯ই জুন পার্লামেন্ট নির্বাচনের পর এএফডি দলের সদস্যরা সেই গোষ্ঠীর অংশ হতে পারবেন না৷ এতকাল দলের নয় জন সদস্য সেই গোষ্ঠীর মধ্যে ছিলেন৷ ফ্রান্সের ন্যাশানাল ব়্যালি, ইটালির লিগ এবং বেলজিয়াম, ডেনমার্ক ও চেক প্রজাতন্ত্রের দলগুলি জার্মানির এএফডি দলের সঙ্গে আর কোনো সম্পর্ক রাখতে প্রস্তুত নয়৷ এভাবে তারা নির্বাচনে ভোটারদের কাছে আরো গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠার আশা করছে৷ ইসিআর নামের অন্য এক সংসদীয় গোষ্ঠীর অংশ হিসেবে ইটালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির ব্রাদার্স অফ ইটালি দলও সেই পথেই চলতে আগ্রহী৷
ইউরোপের চরম দক্ষিণপন্থি শিবিরের একাধিক দল মূল স্রোতের রাজনীতিতে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করতে আগ্রহী৷ এমন শক্তি ইতোমধ্যেই ইটালির জোট সরকারের শরিক হয়েছে৷ ফ্রান্সে জনমত সমীক্ষায় ন্যাশানাল ব়্যালি যথেষ্ট এগিয়ে রয়েছে৷ প্রথমে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচন, তারপর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও সাফল্যের আশা করছেন দলের নেত্রী মারিন ল্য পেন৷ ভোটারদের কাছে ‘স্বাভাবিক' বিকল্প হিসেবে নিজেদের তুলে ধরতে অনেক বিষয়ে সুর নরম করে দায়িত্বজ্ঞান দেখাতে আগ্রহী চরম দক্ষিণপন্থি শিবির৷ কিন্তু একাধিক দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য ও কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়ছে জার্মানির এএফডি দল৷ ফলে জার্মানির বাকি রাজনৈতিক দলগুলি এএফডি-র সঙ্গে কোনোরকম সহযোগিতার পথে যেতে নারাজ৷ মূল স্রোতের দলগুলির দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তারা আরো ফায়দা তুলতে চায়৷
ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচনে শীর্ষ প্রার্থী মাক্সিমিলিয়ান ক্রা একাধিক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ায় চরম অস্বস্তিতে পড়েছে এএফডি দল৷ রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে তাঁর সন্দেহজনক সম্পর্কের তদন্ত চলছে৷ তার উপর ইটালির এক সংবাদপত্রের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে তিনি জার্মানির নাৎসি জমানার এসএস বাহিনীর অপরাধ লঘু করে দেখানোর চেষ্টা করেছেন৷ চাপের মুখে এএফডি ক্রা-কে নির্বাচনি প্রচার থেকে দূরে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ তবে শুধু শীর্ষ প্রার্থী নয়, এএফডি দলের অন্যান্য অনেক নেতাও সম্প্রতি বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছেন৷ জার্মানি থেকে দশ লাখ বিদেশিকে জোর করে আফ্রিকায় পাঠানোর ষড়যন্ত্রেও দলের নাম জড়িয়ে পড়েছে৷ জনমত সমীক্ষায় দলের প্রতি সমর্থনও আগের তুলনায় কিছুটা কমে গেছে৷
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন অবশ্য ইউরোপের চরম দক্ষিণপন্থি শিবিরের সব দল সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছেন৷ তাঁর মতে, নাম ভিন্ন হলেও তারা সবাই আসলে এক৷ পুটিনের হাতের পুতুল হিসেবে এই শক্তি ইউরোপের মূল্যবোধ নষ্ট করতে চায় বলে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘এক্স'-এ মন্তব্য করেছেন৷
এসবি/এসিবি (এএফপি, ডিপিএ)