1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘ইউনূসকে ঈর্ষা করে রাষ্ট্র'

১০ মার্চ ২০২৩

ইউটিউবে ‘ডয়চে ভেলে খালেদ মুহিউদ্দীন জানতে চায়' টকশো-তে আলোচক হিসেবে ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. মীজানুর রহমান ও সিনিয়র সাংবাদিক গোলাম মোর্তোজা৷

https://p.dw.com/p/4OX2h
ছবি: DW

ড. ইউনূসের সঙ্গে কেন খারাপ ব্যবহার করা হচ্ছে বারবার? ডয়চে ভেলে বাংলা বিভাগের প্রধান খালেদ মুহিউদ্দীনের প্রশ্নের উত্তরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. মীজানুর রহমান বলেন, ‘‘ইউনূস উদ্ভাবনী ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তি। ওঁর কর্মকাণ্ড সারা বিশ্বে সমাদৃত। তবে নোবেলের থেকে বেশি জরুরি রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা।''

ইউনূসের রাজনৈতিক দল গঠন প্রসঙ্গে সাবেক উপাচার্যের জানান, সেইসময় দেশে আধা সামরিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। প্রধান রাজনীতিকরা তখন জেলে। সেইসময়ে রাষ্ট্র ক্ষমতার কথা তুলেছিলেন ইউনূস। তাই দ্বন্দ্বের শুরু হয়।

সিনিয়র সাংবাদিক গোলাম মোর্তোজা বলেন, ‘‘ডক্টর ইউনূস তার জীবনের সেরা ভুল করেন রাজনৈতিক দল গঠন করে। ইউনূস দীর্ঘকালীন ক্ষমতায় যেতে চেয়েছিলেন। ''

ডক্টর ইউনূসের বিজ্ঞাপনের প্রসঙ্গ তোলেনখালেদ। মোর্তোজার বক্তব্য, ''যে ৪০ জন কথা বলেন, তারা ইউনূসের শুভানুধ্যায়ী। তাই নিজেরা খোলা চিঠি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীকে। তারা নিজেরাই অর্থ দিয়েছেন। এর সঙ্গেইউনূসের সম্পর্ক নেই। তারা বিবৃতি দিলে হয়তো ছোট করে প্রকাশ করত। সম্পূর্ণ কথা প্রকাশের জন্য হয়তো বিজ্ঞাপন দেয়া হয়েছে।'' 

ড. মীজানুর রহমান বলেন, ‘‘এই বয়ান ঢাকা থেকে তৈরি।''

খালেদ প্রশ্ন করেন, সরকারের কি নোবেলজয়ীর প্রতি কোনো ঈর্ষা রয়েছে?

গ্রামীণ ব্যাংক নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন ড. মীজানুর রহমান। তার দাবি, ইউনূস ছাড়াও ব্যাংক চলে। ঋণ আদায়, শাখা, আধুনিকায়ন সবটাই চলছে। আগের চেয়ে গ্রামীণ ব্যাংকের অবনতি হয়নি।

প্রফেসর ইউনূস নোবেল পাওয়ার পর আওয়ামী লীগ সংবর্ধনা দেয়নি বলে প্রশ্ন তোলেন খালেদ। মীজানুরের বক্তব্য, ''সবাইকে ফেলে দিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা নিয়ে নেব ইউনূসের মনোভাব ছিল।''

সিনিয়র সাংবাদিক গোলাম মোর্তোজা বলেন, ‘‘ইউনূসের বিরুদ্ধে তহবিল আত্মসাতের, পদ্মা সেতু ফান্ড খারিজের যে অভিযোগ আনা হয়েছিল, কোনো ভিত্তি নেই।''

তার কথায়, ''নোবেল প্রাপকের নথি সম্পূর্ণ স্বচ্ছ, কোনো কর ফাঁকির অভিযোগ নেই। তার গড়া প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে বিশ্ব নেতৃত্ব উদ্বিগ্ন। গ্রামীণ ফোনের একটি শেয়ারের মালিকও ইউনূস নন। তদন্ত প্রক্রিয়া আসলে হয়রানি করা হয়েছে। তাকে স্বাভাবিক কাজ করতে দেয়া হয়নি।''

খালেদের যুক্তি ছিল, ইউনূসের প্রতিটি পুরস্কারই করযোগ্য। ১৫ লাখ ডলার কর না দেয়ার অভিযোগের কথা বলেন তিনি। মোর্তোজার কথায়, ‘‘বারবার অভিযোগের জবাব দেন ইউনূস। অভিযোগের জবাব নিয়ে আর কথা বলেন না কেউ।''

মীজানুর রহমান বলেন, ‘‘টাকা এদিকওদিক করলে অভিযোগ করা যায়। ৪০-৫০টা প্রতিষ্ঠান হলে নিয়ম দেখা হয়।''

মোর্তোজার পাল্টা, গ্রামীণ টেলিকম নিয়ে তদন্ত চলমান। আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত বিষয় সামনে এলে রাষ্ট্র তা নিয়ে আলোচনা কলে মনে হয়, তদন্তের নামে হয়রানি হচ্ছে, তদন্ত হচ্ছে না।

ইউনূস সুবিচার পাবেন? খালেদের প্রশ্নের উত্তরে সাবেক উপাচার্যর দাবি, সুবিচার ইউনূস আগেও পেয়েছেন। ইউনূস আবার আগের মতো কিছু করুন এটা কোনো রাজনৈতিক দল চায় না। একবার ইউনূস চেষ্টা করেছিলেন।

বড় জাতীয় দুর্যোগে ইউনূসকে কি পাওয়া যায়? খালেদের প্রশ্নের উত্তরে মোর্তোজা বলেন, ‘‘রোহিঙ্গা সংকট শুরু হওয়ার পর ইউনূস জোরালো বক্তব্য় রাখেন। আন্তর্জাতিক বিশ্বের কাছে তুলে ধরেন। সমস্যার মূল জায়গা বঙ্গবন্ধুর পরে ইউনূসের নামটা বাংলাদেশের জন্য অনিবার্য হয়ে গিয়েছে এটা অনেকে মানতে পারছেন না। ইউনূসকে সঙ্গে নেয়া দরকার ছিল রাষ্ট্রের। তাকে ব্যবহার করা হয়নি। ঈর্ষা থেকেই এতকিছু করেছে রাষ্ট্র।''

মীজানুর বলেন, ‘‘পৃথিবীতে অনেক দেশে নোবেলজয়ী আছেন তবে কেউ রাজনৈতিক দল গঠন করতে চাননি।''

আরকেসি/এআই