ইংল্যান্ডেও মালালার আলো
১৯ জানুয়ারি ২০১৩বয়স মাত্র ১৪৷ তবে তারও বছর তিনেক আগে, অর্থাৎ ১১ বছর বয়সেই মালালা বুঝিয়ে দিয়েছিল অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে, অধিকার রক্ষার লড়াইয়ে নামতে বয়স বড় কথা নয়৷ বাড়ি পাকিস্তানের সোয়াত উপত্যকার কাছে৷ আগুনের পাশে থাকবেন আর আঁচ লাগবে না, তা তো হয় না, তাই তালেবানের বিধিনিষেধের কুফল মালালাকেও দেখতে হয়েছিল সেই বয়সেই৷ তালেবান মেয়েদের লেখাপড়ার বিরুদ্ধে প্রচার শুরু করায়, অনেক স্কুলে হামলা চালানোয় প্রতিবাদী মালালা দারুণ এক ভাষণ দিয়েছিল৷ সেখানে প্রশ্ন রেখেছিল, ‘‘তালেবানের কত দুঃসাহস যে মেয়েদের লেখাপড়া করার মৌলিক অধিকার কেড়ে নিতে চায়?''
সেই থেকে শুরু তালেবানের বিরুদ্ধে মালালা ইউসুফজাইর লড়াই৷ অসম এ লড়াইয়েও পেরে উঠছিল না তালেবান৷ শত হুমকির পরও নারী শিক্ষার পক্ষে লড়েই যাচ্ছিল মালালা৷ তারপর যে বিবিসি ব্লগে লিখে সবার নজর কেড়েছিল, সাহসি ভূমিকার জন্য পাকিস্তানে সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার পেয়েছিল এসব তো সবারই জানা৷ গত অক্টোবর মাসে মালালার কন্ঠ চিরতরে রুদ্ধ করতে গুলি করে এক তালেবান৷ তারপর পাকিস্তানে চিকিৎসা নিয়ে আরো উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে নিয়ে যাওয়া হয় ইংল্যান্ডের বার্মিংহামে৷
ক'দিন হলো সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছে মালালা৷ একেবারে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে আরো কিছুদিন লাগবে৷ কিন্তু এখন থেকেই ইংল্যান্ডের মুসলিম পরিবারগুলোতে শুরু হয়ে গেছে মালালাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখা- প্রতিবাদী মেয়েটি এবার এখানেও মেয়েদের লেখাপড়ার দিকে আগ্রহ বাড়ানোর জন্য কিছু করবে৷ ইংল্যান্ডেও কেন এমন ভাবনা? ওখানেও কিন্তু মেয়েদের মধ্যে, বিশেষ করে মুসলিম পরিবারের মধ্যে লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ বেশ কম৷ তাই ইংল্যান্ডের ইয়ং মুসলিমস সংগঠনের সাবেক প্রধান মরিয়ম দালে তাঁর ১৩ বছরের মেয়েটির লেখাপড়ায় আগ্রহ বাড়ানোর জন্য তাকিয়ে আছেন মালালার দিকে, তিনি বললেন, ‘‘আমার মেয়ে লেখাপড়া করতেই চায়না৷ আমি মনে করি, এমন মেয়েদের জন্য মালালা প্রেরণা হয়ে উঠবে, ওকে দেখে সব মেয়েই জানবে লেখাপড়ার জন্য জীবন উৎসর্গ করার কথাও ভাবা যায়৷''
মালালা তাই আর নানা দিক থেকে পিছিয়ে থাকা দেশগুলোর মেয়েদেরই প্রেরণা নয়, ও এখন ইংল্যান্ডের মতো দেশেও অনেকেরই পথ দেখানোর আলো৷
এসিবি/এআই (ডিপিএ, রয়টার্স)