1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আশঙ্কায় রাখছে ভবিষ্যৎ

শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা
২৬ অক্টোবর ২০২০

দুর্গাপূজা হিন্দু বাঙালির সবথেকে বড় ধর্মীয় উৎসব হলেও কোভিড পরিস্থিতিতে তা নিয়ন্ত্রিত রাখা উচিত ছিল বলে মনে করেছিলেন অনেকেই৷ শেষ পর্যন্ত তা হল না, যা এখন থেকেই দুশ্চিন্তা ছড়াচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/3kRxX
ছবি: Rupak De Chowdhuri/Reuters

কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশএসেছিল একেবারে শেষ মুহূর্তে৷ তাও পূজামণ্ডপ জনশূন্য রাখার ওই রায় অনেককেই স্বস্তি দিয়েছিল৷ আদালত নির্দিষ্টভাবে বলে দিয়েছিল, সীমিতসংখ্যক কর্মকর্তা ছাড়া বাইরের কেউ মণ্ডপের ভিতরে ঢুকবেন না৷ দর্শনার্থীদের থাকতে হবে নির্দিষ্ট দূরত্বে৷ প্রথম দু'দিন, অর্থাৎ ষষ্ঠী ও সপ্তমীর দিন নিম্নচাপের কারণে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হওয়ায় জনসমাগম সেভাবে হয়নি৷ আশ্বস্ত হয়েছিলেন মানুষজন, যাঁরা ভয় পাচ্ছিলেন সংক্রমণ ছড়ানোর৷ কিন্তু পরের দু দিনে আবহাওয়ার উন্নতি হতেই ছবিটা পুরো পাল্টে গেল৷ অন্যবারের মতো বিপুল সংখ্যায় না হলেও বহু লোক সেজেগুজে নেমে পড়লেন শহর–মফস্সলের রাস্তায়, ঠাকুর দেখতে৷ ঠেকানো গেল না ভিড় এবং সংক্রমণের সম্ভাবনা৷ সেটাও এমন এক সময়ে, যখন পশ্চিমবঙ্গে সংক্রমণের হার বাড়তে শুরু করেছে, এবং সেটাও পুজোর কেনাকাটা করতে রাস্তাঘাটে, দোকান–বাজারে ভিড় হওয়ার কারণে৷ এবার পূজার ভিড় কোভিড পরিস্থিতিকে আরও কতটা খারাপ করে, সেটা বোঝা যাবে নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকেই৷ বলছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা৷

আমরা সত্যিই শঙ্কিত, নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে কী অবস্থায় যাবে: ডাঃ কৌশিক লাহিড়ি

ডাঃ কৌশিক লাহিড়ি কোভিড পরিস্থিতির শুরু থেকেই নজর রাখছেন সংক্রমণের হারের ওঠানামার দিকে৷ তিনি জানাচ্ছেন, সারা ভারতে যে সময় কোভিড সংক্রমণের হার চড়ছে, পশ্চিমবঙ্গে তখন সংক্রমণ আপাত স্বস্তির জায়গায় ছিল৷ কিন্তু সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝি নাগাদ বাংলায় বিশ্বকর্মা পূজা এবং পূজার বাজার পুরোদমে শুরু হয়ে গেল, যার প্রভাব অক্টোবরে এসে টের পাওয়া যাচ্ছে৷ নতুন সংক্রমণ দিনে এক হাজার বেড়ে গিয়েছে৷ অন্যদিকে পরীক্ষার হার কমছে৷ আর চার দিনের দুর্গাপূজার পর যে সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে, তা ওনাম উৎসব পরবর্তী কেরালার কথা মনে করিয়ে দিতে পারে৷ দক্ষিণ ভারতের যে রাজ্যটিতে উৎসবের জনসমাগমের কারণে কোভিড সংক্রমণ ১০ গুণেরও বেশি বেড়ে গিয়েছিল৷

অথচ দৃষ্টান্তযোগ্য উদাহরণ চোখের সামনেই ছিল৷ ডাঃ লাহিড়ি বলছেন, ‘‘মহারাষ্ট্রে গনেশ চতুর্থী কিন্তু এবার আটকানো হয়েছিল৷ এমনকি মধ্যপ্রদেশ, গুজরাট, মহারাষ্ট্র, এই তিনটে রাজ্যে ওদের যে ঐতিহ্যপূর্ণ গরবা নাচ, নবরাত্রি উৎসবে, সেটা এবার বন্ধ করা হয়েছে, নিষিদ্ধ করা হয়েছে৷ সেইগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের এবার সচেতন হওয়া উচিত ছিল৷’’ ডাঃ লাহিড়ি মনে করিয়ে দিলেন, ‘‘ঈদের সমাবেশ বন্ধ ছিল, মহররম হয়নি৷ সবথেকে বড় কথা, দেশের বাইরে যদি বলি, আমাদের স্মরণকালের মধ্যে এই প্রথম সৌদি আরবে হজ হয়নি৷ বাইরের কেউ হজ করতে যাননি, এই প্রথম৷’’

দুর্গাপূজার উৎসবের রেশ মিলিয়ে যাওয়ার আগেই আসছে বিহারিদের ছট পরব, তার পর দিওয়ালি এবং কালী পূজা৷ এসবের সম্মিলিত প্রভাবে সংক্রমণ কতটা ছড়াবে, তা বোঝা যাবে নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি থেকেই, যা যথেষ্ট উদ্বেগে রেখেছে চিকিৎসক মহলকে৷

১৬ অক্টোবরের ছবিঘরটি দেখুন...