1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কলকাতায় ঢোকা যাবে না পুজো মণ্ডপে

২০ অক্টোবর ২০২০

পুজো দেখার জন্য ভিড় করা যাবে না প্যান্ডেলে। স্পষ্ট নির্দেশ জারি করল কলকাতা হাইকোর্ট। সরকারের উপর বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

https://p.dw.com/p/3k9zV
ছবি: Sudipta Das/Pacific Press Agency/Imago Images

ঐতিহাসিক রায় কলকাতা হাইকোর্টের। এ বছর কলকাতার প্রতিটি পুজো প্যান্ডেলকে নো এন্ট্রি জোন হিসেবে চিহ্নিত করেছে হাইকোর্ট। অর্থাৎ, দর্শনার্থীরা মণ্ডপের ভিতরে ঢুকতে পারবেন না। ২৫ থেকে ৩০ জন পুজো কর্মকর্তাই কেবল মণ্ডপের ভিতর যেতে পারবেন। কিন্তু তাঁদের নাম ষষ্ঠীর আগেই মণ্ডপের বাইরে টাঙিয়ে দিতে হবে। এই নিয়ম যাতে রক্ষিত হয়, তার জন্য রাজ্য সরকার এবং পুলিশকে বিশেষ দায়িত্ব নিতে বলেছে হাইকোর্ট। পুজোর পরে নিয়ম কতটা পালন হলো, তা হলফনামা দিয়ে রাজ্য সরকারকে আদালতে জানাতে হবে।

করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও কলকাতায় রমরমিয়ে পুজোয় আয়োজন শুরু হয়েছিল। বাজারে তিল ধারণের জায়গা নেই, এত ভিড়। পুজোর এক সপ্তাহ আগে থেকেই বড় বড় প্যান্ডেলে দর্শনার্থীদের ভিড় শুরু হয়ে গিয়েছিল। করোনা পরিস্থিতি উপেক্ষা করেই মানুষ রাস্তায় নেমে পড়েছিলেন। তারই জেরে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল বেশ কিছু সংগঠন এবং ব্যক্তি। কলকাতার প্রাক্তন মেয়র এবং আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য আবেদনকারীদের হয়ে সওয়াল করেন আদালতে। উল্টো দিকে ছিলেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত। বিকাশবাবু ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ''প্রতিটি পুজো মণ্ডপকে যাতে কনটেনমেন্ট জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়, তার আবেদন করেছিলাম। বিচারপতি মণ্ডপগুলিকে নো এন্ট্রি জোন করে দিয়েছেন।''

হাইকোর্টে বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের এজলাসে মামলাটি শোনা হয়। দুই পক্ষের বক্তব্য শোনার পরে বিচারপতি জানান, মণ্ডপের পাঁচ থেকে ১০ মিটারের মধ্যে ব্যারিকেড করে দিতে হবে। যাতে কেউ ভিতরে ঢুকতে না পারেন। বিচারপতির মন্তব্য, খবরের কাগজে এখনই ভিড়ের যে ছবি বার হতে শুরু করেছে, তাতে তিনি আতঙ্কিত বোধ করছেন। করোনাকালে কোনও ভাবেই এমন দৃশ্য সমর্থন করা যায় না।

কলকাতায় প্রায় ৩০ হাজার পুজো হয়। প্রতিদিন লাখ লাখ মানুষ সেই পুজো দেখতে যান। বহু মণ্ডপে এর মধ্যেই ভিড় উপচে পড়তে শুরু করেছে। এই সময়ে হাইকোর্টের রায় সেই ভিড়ে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ আনতে পারবে। বিচারপতিও বলেছেন, মানুষ এ বার অনলাইনে পুজো দেখুন। রাস্তায় নেমে নয়।  

কলকাতা পুলিশের সংখ্যা ৩২ হাজার। পুজোর সংখ্যা ৩০ হাজার। ফলে পুলিশের পক্ষে ভিড় সামলে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা প্রায় অসম্ভব ব্যাপার ছিল। পুজো কমিটির পক্ষেও ভিড় সামাল দেওয়া সম্ভব হয় না। হাইকোর্টের রায়ের পরে একটা সমাধান সূত্রে পৌঁছনো গেল বলেই সকলে মনে করছেন। আদালত জানিয়ে দিয়েছে, পুজোর পরে সরকারকে হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে, নিয়ম ঠিক মতো পালন করা হয়েছে কি না। রায় দেওয়ার সময় বিচারপতি বলেছেন, পড়ুয়ারা এত শৃঙ্খলাবদ্ধ, তারা ছ'মাস স্কুল কলেজে যায়নি। তার মধ্যে এই জীবন সঙ্কটে কী ভাবে দুর্গাপুজো সেলিব্রেশন হচ্ছে?

এর আগে ঝাড়খণ্ড এবং ওড়িশা সরকারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে, মণ্ডপে কেউ ঢুকতে পারবেন না। পুজো দেখা যাবে না। শুধু কর্মকর্তারা পুজো করতে পারবেন। হাইকোর্টের রায়ে এ বার কলকাতাতেও সেটাই হতে চলেছে।

এসজি/জিএইচ (পিটিআই)