শফীর সমালোচনায় হাসিনা
১৪ জুলাই ২০১৩শনিবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানান, একজন ধর্মীয় নেতা হয়ে আল্লামা শফী নারীদের নিয়ে যে অশালীন বক্তব্য দিয়েছেন, তা তাকে বিস্মিত করেছে৷ একজন ধর্মীয় নেতার এধরনের বক্তব্য অনাকাঙ্খিত এবং নারীদের জন্য অবশ্যই অবমাননাকর৷
আল্লামা শফীকে ইঙ্গিত করে হাসিনা বলেন, ‘‘আমি তাকে বলতে চাই, তিনি কী কোনো মায়ের গর্ভ থেকে জন্ম নেননি? তিনি কি সেই মাকে সম্মান করেন না? তার কি স্ত্রী বা কোন বোন নেই?''
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘হেফাজত বর্তমানে বিএনপির সঙ্গে জোট বেঁধেছে৷ কিন্তু বিএনপির প্রধানতো একজন নারী৷ তাহলে তিনি কিভাবে তাকে নেতা হিসেবে মেনে নিয়েছেন?''
শেখ হাসিনা তাঁর বক্তব্যে নারীদের সোচ্চার হতে বলেছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘নারীদের বিরুদ্ধে যাতে আর কেউ কোন দিন অশালীন মন্তব্য করতে না পারে, সে জন্য নারী নেত্রীদের সোচ্চার হতে হবে৷''
তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মেসবাহ কামাল ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর এই সমালোচনা এবং নারী নেত্রীদের সোচ্চার হওয়ার আহ্বান যথেষ্ঠ নয়৷ নারীদের যাতে কেউ অবমাননা করতে না পারে, ধর্মের নামে কেউ যাতে নারীদের হেয় করতে না পারে সেজন্য সুনির্দিষ্ট আইন থাকা দরকার৷ নয়তো এই ধর্মান্ধ গোষ্ঠী থামবেনা৷ কারণ তাদের চিন্তা চেতনা মধ্যযুগীয়৷''
আল্লামা শফীকে অবশ্যই আইনের আওতায় আনতে হবে উল্লেখ করে ড. কামাল বলেন, ‘‘হেফাজত আসলে জামায়াতের আরেক রূপ৷ তাদের মুল উদ্দেশ্য একই৷ তারা দেশেকে অন্ধকার যুগে ফিরিয়ে নিতে চায়৷ আর দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি তাদের উত্থানের জন্য দায়ী৷''
বাংলাদেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দল ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কার্যকর কোন ব্যবস্থা নেয়না বলে মনে করেন মেসবাহ কামাল৷ তিনি বলেন, ‘‘আল্লামা শফীর মত চিন্তা বিকৃত মানসিকতার লোককে যারা ভোটের রাজনীতিতে ব্যবহার করেন তাদের রুচি এবং মানসিকতা নিয়েও প্রশ্ন তোলা যায়৷''
শফীদের এখনই প্রতিরোধ করতে হবে, বলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধ্যাপক৷ তাঁর কথায়, ‘‘নয়তো তারা দেশের জন্য আরো বড় কোন ক্ষতির কারণ হবে৷''
উল্লেখ্য, আল্লামা শফী সম্প্রতি হাটহাজারীতে এক ‘ইসলামি জলসায়' নারীদের ‘তেঁতুলের' সঙ্গে তুলনা করেন৷ তিনি তার বক্তব্যে নারীর শিক্ষা, চাকরি, ব্যবসা ও স্বাধীনভাবে চলাফেরার বিরুদ্ধে কথা বলেন৷ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হয়ে শফীর সেই বক্তব্য গণমাধ্যমেও প্রকাশিত হয়েছে৷