আর্মেনিয়ার দাবি ‘গণহত্যা', প্রতিবাদে অনড় তুরস্ক
২৩ এপ্রিল ২০১৫১৯১৫ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় ২৪ এবং ২৫ এপ্রিল – এই দুই দিনে প্রায় ১৫ লাখ মানুষ মারা গিয়েছিল আর্মেনিয়ায়৷ সেই যুদ্ধের পর ধ্বংস হয়ে যায় তখনকার অটোমান সাম্রাজ্য৷ অটোমানদের হামলাতেই নিহত হয়েছিল ১৫ লক্ষ মানুষ৷ আর ১৯২৩ সালে অটোমান সাম্রাজ্যের ভস্মের ওপরই গড়ে ওঠে আধুনিক প্রজাতান্ত্রিক তুরস্ক৷ তাই আর্মেনিয়া আর তুরস্কের বিরোধটাও ঐতিহাসিক৷
সেই ইতিহাসকে স্মরণ করেই প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরুর শতবর্ষ পূর্তি উদযাপন করতে চলেছে আর্মেনিয়া৷ সে আনুষ্ঠানিকতায় নিজেরা শতবর্ষ আগের ব্যাপক হত্যাকাণ্ডকে ‘গণহত্যা' হিসেবেই উল্লেখ করছে আর্মেনিয়া, সঙ্গে এ-ও চাইছে, সারা বিশ্বও সেই হত্যাকাণ্ডকে গণহত্যাই বলুক৷
পশ্চিমা রাষ্ট্রচিন্তাবিদ এবং ঐতিহাসিকদের অনেকে আগে থেকেই ১৯৪৫ সালের সেই ভয়াল হত্যাকাণ্ডকে ‘বিশ শতকের প্রথম গণহত্যা' হিসেবে উল্লেখ করে আসছেন৷ অন্তত ডজনখানেক পশ্চিমা সরকারও এ বিষয়ে একমত৷ সম্প্রতি পোপ ফ্রান্সিসও এক'শ বছর আগের হত্যাকাণ্ডটিকে ‘গণহত্যা' বলেছেন৷ বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে ভ্যাটিকানের প্রতি আনুষ্ঠানিকভাবে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে তুরস্ক৷ মঙ্গলবার আর্মেনিয়ার সেই হত্যাকাণ্ডকে ‘গণহত্যা'র স্বীকৃতি দেয়ার প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে অস্ট্রিয়ার পার্লামেন্টে৷ আঙ্কারায় অস্ট্রীয় রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠিয়েও প্রতিবাদ জানিয়েছে তুর্কি সরকার৷ তবে এসবের পরও বিতর্ক এবং কথার লড়াই চলছে৷
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়িপ এর্দোয়ান বলেছেন, আর্মেনিয়া তুরস্ককে অপমান করার জন্যই এক'শ বছর আগের হত্যাকাণ্ডকে ‘গণহত্যা' হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করছে৷ কিন্তু এ উদ্যোগ শুধু আর্মেনিয়া বা অস্ট্রিয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই৷ বুধবার ইউরোপীয় পার্লামেন্টেও আর্মেনিয়ার কথিত হত্যাকাণ্ডকে ‘গণহত্যা'র স্বীকৃতি দেয়ার প্রস্তাব পেশ করেছে৷ বৃহস্পতিবার এক স্মারকসভায় জার্মান প্রেসিডেন্ট ইওয়াখিম গাউক বহুল আলোচিত হত্যাকাণ্ডটিকে ‘হত্যাকাণ্ড' হিসেবে উল্লেখ করতে পারেন৷
এসিবি/এসবি (এপি, এএফপি, ডিপিএ, রয়টার্স)