বৈরিতা ভুলে সম্পর্ক শুরু করলো তুরস্ক-আর্মেনিয়া
২ সেপ্টেম্বর ২০০৯দুই দেশের পক্ষ থেকে দীর্ঘ প্রায় এক শতকের বৈরী সম্পর্কের অবসান ঘটানোর ঘোষণাটি আসে সোমবার৷ এক চুক্তি স্বাক্ষরের পর দুই দেশের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে তারা কূটনৈতিক সম্পর্ক শুরু করতে যাচ্ছে৷ এছাড়া আর্মেনিয়ার সঙ্গে সীমান্ত খুলে দেওয়ার কথাও জানিয়েছে তুরস্ক৷ তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আহমেত দাভোতগলু বলেছেন, যদি পরিকল্পনা অনুযায়ী সব পদক্ষেপ নেওয়া হয় তাহলে নতুন বছরের মধ্যেই সীমান্ত খুলে দেওয়া সম্ভব৷ উল্লেখ্য, ১৯৯৩ সালে আর্মেনিয়ার সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করে দেয় তুরস্ক৷
এদিকে, দুই দেশের এই নতুন করে সম্পর্কের সূচনাকে স্বাগত জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন৷ ই ইউ-র পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক বিভাগের প্রধান জাভিয়ের সোলানা এই চুক্তিকে ওই অঞ্চলে চলা দীর্ঘ বৈরিতা অবসানে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে প্রশংসা করেছেন৷ তিনি বলেছেন, ইউরোপের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে এই চুক্তি ভূমিকা রাখবে৷
ইউরোপীয় নিরাপত্তা ও সহযোগিতা সংগঠন ওএসসিই তুরস্ক এবং আর্মেনিয়ার এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে৷ ওএসসিই-র সভাপতি দেশ গ্রিসের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোরা বাকোয়ানিস বলেছেন, কেবল ককেসাস অঞ্চলেই নয় আশপাশের এলাকাতেও এই নতুন সম্পর্ক প্রভাব ফেলবে৷ রাশিয়ার পক্ষ থেকেও প্রশংসা এসেছে তুরস্ক এবং আর্মেনিয়ার জন্য৷ এদিকে তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী রেচেপ তাইয়েপ এরদোয়ান জানিয়েছেন যে দুই দেশের চুক্তি বাস্তবায়নের আগে তুর্কি সংসদকে তা অনুমোদন করতে হবে৷ আর্মেনিয়ার প্রেসিডেন্ট সার্জ সার্কসিয়ান আগামী ১৪ই অক্টোবর তুরস্ক সফর করবেন৷ তবে তিনি বলেছেন যে সীমান্ত খুলে দেওয়ার বিষয়টি স্পষ্ট না হওয়া পর্যন্ত তিনি তুরস্ক সফর করবেন না৷ উল্লেখ্য, গত বছর তুর্কি প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ গুল আর্মেনিয়া সফর করেছিলেন৷
এছাড়া এখনও দুই দেশের মধ্যে যে বিষয়টির মীমাংসা হয়নি তা হচ্ছে তুর্কি অটোমান আমলে সংঘটিত গণহত্যা প্রসঙ্গ৷ আর্মেনিয়া বরাবরই দাবি করে আসছে যে ১৯১৫ থেকে ১৯১৭ সালের মধ্যে তৎকালীন তুর্কি অটোমান কর্তৃপক্ষ আর্মেনিয়াতে গণহত্যা চালিয়েছিল যাতে প্রাণ হারায় দেড় মিলিয়ন মানুষ৷ তবে তুরস্ক দাবি করে আসছে যে গণহত্যা নয় বরং দুই পক্ষের সংঘর্ষে উভয় পক্ষের লোকজনই প্রাণ হারিয়েছিল৷ এবং এর পরিমাণ ছিল দেড় মিলিয়ন নয় বরং ছয় থেকে ১০ লাখ৷
প্রতিবেদক: রিয়াজুল ইসলাম, সম্পাদনা: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়