আরজি কর-কাণ্ড: মেয়েরা রাত দখলের আন্দোলনে
১৪ আগস্ট ২০২৪এই আন্দোলনের নাম দেয়া হয়েছে 'মেয়েরা রাত দখল করো'। প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী রিমঝিম প্রথমে ফেসবুকে মেয়েদের পথে নামার ডাক দেন। তিনি বলেছিলেন, কলকাতার যাদবপুরে এইট বি বাসস্ট্যান্ডের সামনে জমায়েত হয়ে প্রতিবাদ জানানোর জন্য।
সেই পোস্ট ভাইরাল হয়। এখন কলকাতার প্রায় তিনশ'টি জায়গায় মেয়েদের রাত দখলের ডাক দেয়া হয়েছে। দিল্লি, বেঙ্গালুরু, মুম্বই সর্বত্র এই ডাক ছড়িয়ে পড়েছে। সর্বত্রই বলা হয়েছে, রাত সাড়ে এগারোটায় জমায়েত হয়ে প্রতিবাদে সামিল হতে। সামাজিক মাধ্যমের পোস্টারে বলা হচ্ছে, স্বাধীনতার মধ্যরাতে নারী স্বাধীনতার জন্য এই জমায়েত। বলা হচ্ছে, 'জাস্টিস ফর আরজি কর'। সারারাত তাদের বিক্ষোভ দেখানোর কথা।
এই জমায়েতে কোনো দলের পতাকা থাকবে না, কোনো দলের প্রতীক থাকবে না বলে জানানো হয়েছে। রিমPfম সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, ''কোনো ঘটনা ঘটলে কলকাতা তো প্রতিবাদের বার্তা দেয়। সেই বাবনা থেকে পোস্ট দিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম, পরিচিতজনেরা আসবেন। সেটা যে এরকম আকার নেবে ভাবিনি।''
'রিক্লেম দ্য নাইট'
এই আন্দোলন শুরু হয়েছিল যুক্তরাজ্যের লিডসে, নারী স্বাধীনতা নিয়ে আন্দোলনের অংশ হিসাবে। সেসময় উত্তেজনার পর পুলিশের পরামর্শ ছিল, মেয়েরা যেন রাতে বাড়ি থেকে বাইরে না বেরোয়। তারই প্রতিবাদে শুরু হয়েছিল, মেয়েদের রাত দখলের আন্দোলন।
অ্যামেরিকাতেও গত শতকের সাতের দশকে একটি নারীপন্থি সংগঠন এই আন্দোলনের ডাক দেয়।
সুখেন্দু শেখর রায়ও প্রতিবাদে
তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায় প্রথমে বলেছিলেন, তিনি মেয়েদের প্রতিবাদে সামিল হবেন। কারণ তারও এক কন্যা ও নাতনি আছে। মেয়েদের বিরুদ্ধে যথেষ্ট নৃশংসতা হয়েছে। সকলে মিলে তা প্রতিহত করতে হবে।
এরপর বিজেপি আইটি সেলের প্রধান অমিত মালবীয় কটাক্ষ করে বলেন, এ সবই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুরোনো পরিচিত খেলা।
এরপর সুখেন্দু শেখর বলেছেন, ''বিজেপি-র আইটি সেল চরিত্র হনন করতে উদ্য়োগী হয়েছে। আমি তাই একা প্রতিবাদ জানাবো। আরজি করের ঘটনার যারা প্রতিবাদ করছেন, তাদের প্রতি আমার সমর্থন জানিয়ে আমি বিকেল পাঁচটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত যোধপুর পার্কে নেতাজি মূর্তির সামনে বসে থাকব। সাবেক মুখ্যমন্ত্রী অজয় মুখোপাধ্যায় নিজের সরকারকে বর্বরোচিত বলে নিজে ধরনা দিয়েছিলেন। সেখান থেকে আমি অনুপ্রেরণা পেয়েছি।''
তৃণমূলের প্রতিক্রিয়া
তৃমমূলের নেতা কুণাল ঘোষ এবং দেবাংশু ভট্টাচার্য দেবের অভিযোগ, এই আন্দোলন আসলে বকলমে বাম ও বিজেপি-র আন্দোলন। তার ফাঁদে না পড়ার জন্য তারা আবেদন জানিয়েছেন।
কুণাল বলেছেন, ''সিপিএম, বিজেপি-র বকলমা ইভেন্টে যাবেন না।'' দেবাংশু বলেছেন, ''লাল হায়েনারা কিন্তু হাইজ্যাক করার অপেক্ষায় বসে আছে।''
প্রতিবাদ চলছে
কলকাতা-সহ জেলায় সরকারি হাসপাতালে জুনিয়র ডাক্তার ও পড়ুয়াদের বিক্ষোভ চলছে। দোষীদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন।
বামেরাও আন্দোলনে পথে নেমেছে। আরজি করে বাম ছাত্র-যুবরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছে।
দিল্লিতেও সরকারি হাসপাতালে জুনিয়র ডাক্তাররা মঙ্গলবার কর্মবিরতি পালন করেছেন। তারা স্বাস্থ্য সচিবের সঙ্গে কথা বলেছেন। তারা জানিয়েছেন, আরজি করের ঘটনার উপযুক্ত তদন্ত করে দোষাীদের শাস্তি দিতে হবে।
জিএইচ/এসিবি (পিটিআই, এএনআই)