1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

স্বপ্ন দেখাচ্ছে স্কেটবোর্ড

ওয়াসলাত হযরত-নাজিমি/এআই২ জুন ২০১৩

আফগানিস্তানে দ্বিতীয় আরেকটি ইনডোর স্কেটপার্ক তৈরি করা হয়েছে৷ মাজার-ই-শরিফের এই পার্কে ভর্তি হতে এখন অপেক্ষার তালিকায় আছে প্রায় তিনশো শিশু৷ স্কেটপার্কে খেলার জন্য তৈরি করা হয়েছে সর্বাধুনিক ব়্যাম্প৷

https://p.dw.com/p/18iFg
An Australian skate trainer trains the Afghan children in Kabul, Afghanistan.09.09.2012.Photo :(Skateistan) Afghan children are playing with skate in Kabul, Afghanistan.09.09.2012.Photo :(Skateistan) Skateistan gives permission to Deutsche-Welle to use these pictures (included in the link and the photos of Oliver sent previously).
ছবি: Skateistan

দু'দিকে খানিকটা ধনুকের মতো বাঁকানো প্লেটের নীচে জুড়ে দেওয়া হয় দুই জোড়া ছোট্ট চাকা৷ এরপর সেটার উপর দাঁড়িয়ে কখনো ঢালু থেকে উঁচুতে উঠতে হয়, আবার কখনো উঁচু থেকে ঢালুতে নামতে হয়৷ মাঝেমাঝে আবার ওঠানামার তীব্রতাকে কাজে লাগিয়ে খানিকক্ষণ শূন্যেও ভেসে বেড়ানো যায়৷ এই খেলার জন্য প্রয়োজন হয় স্টিল এবং মার্বেলের তৈরি বিশেষ ধরনের ব়্যাম্প৷ আর ধনুকের মতো বাঁকানো প্লেটটির নাম হলো ‘স্কেটবোর্ড'৷

আফগানিস্তানের কাবুলে প্রথম স্কেটপার্কটি তৈরি করা হয় ২০০৯ সালে৷ সেটার পর এবার আরেক শহর মাজার-ই-শরিফে তৈরি হয়েছে দ্বিতীয় স্কেটপার্কটি৷ জার্মানির কেন্দ্রীয় পররাষ্ট্র দপ্তর পার্কটি তৈরিতে অধিকাংশ সহায়তা করেছে৷ সপ্তাহে গড়ে হাজার খানেক শিক্ষার্থী স্কেটিংসহ অন্যান্য খেলাধুলা এবং শিক্ষা প্রকল্পের জন্য এই পার্ক ব্যবহার করতে পারে৷

Khorshid Skateboard-Lehrerin in Kabul Afghanistan
২০১২ সালে এক বোমা বিস্ফোরণে নিহত হন খুরশিদ, স্কেটবোর্ডিং প্রশিক্ষক ছিলেন তিনিছবি: Skateistan

মূলত স্কেটিং-এর মাধ্যমে পাঁচ থেকে সতের বছর বয়সি ছেলে-মেয়েদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস গড়ে তোলা হয়৷ যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানে এসবের বড় প্রয়োজন৷ স্কেটিস্তান নামক একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এই পার্কের দায়িত্বে রয়েছে৷ সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাতা এবং নির্বাহী পরিচালক অলিভার পেরকোভিচ এই বিষয়ে বলেন, ‘‘সমাজে এসব শিশুদের, বিশেষ করে প্রান্তিক শিশু এবং মেয়েদের অবস্থার পরিবর্তন আনতে প্রয়োজনীয় সুযোগ এবং উপকরণ দেওয়া প্রয়োজন৷''

‘স্কেটবোর্ডিং সহজ'

২০০৭ সাল থেকে আফগানিস্তানে কাজ করছেন পেরকোভিচ৷ সেবছর আফগানিস্তানে নিজের সংস্থাটি নিবন্ধন করেন তিনি৷ মূলত বিদেশি অর্থায়নে চলে এটি৷ ডয়চে ভেলেকে পেরকোভিচ বলেন, ‘‘আমি মনে করেছিলাম স্কেটবোর্ডিং সহজ৷ তাই রাস্তার শিশুদের নিয়ে আমি এই খেলা শুরু করি এবং বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ্য করি ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েরাও এটি চেষ্টা করছে, অথচ (আফগানিস্তানে) মেয়েদের সচরাচর কোনো খেলাধুলায় অংশ নিতে দেখা যায় না৷''

এভাবেই আফগান ছেলে-মেয়েদেরকে স্কেটবোর্ডিংয়ে উৎসাহিত করেছেন পেরকোভিচ৷ তাঁর এক সময়ের শিক্ষার্থী মদিনার বয়স এখন ১৪ বছর৷ কাবুলে স্কেটবোর্ডিং শিখে তিনি এখন প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করছেন৷ মাজারের সব ছেলে-মেয়েকে খেলাধুলায় অংশ নিতে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি৷ তবে শুধু স্কেটবোর্ডিং নয়, বাক্সেটবল এবং ফুটবলও খেলা যেতে পারে বলে মনে করেন মদিনা৷

‘শারীরিক এবং মানসিক উন্নয়ন'

আফগানিস্তানের জাতীয় অলিম্পিক কিমিটির চেয়ারম্যান জাহের আকবার মাজার-ই-শরিফের স্কেটপার্ক দেখে অত্যন্ত সন্তুষ্ট৷ খেলাধুলা ছাড়াও এই পার্কে শিশুদের ভাষা, তথ্য প্রযুক্তি শিক্ষা এবং ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে, যা তাদেরকে বর্হিবিশ্বের সঙ্গে আরো পরিচিত করে তুলবে বলে মনে করেন আকবার৷

পেরকোভিচ আরো মজার তথ্য জানালেন৷ এখন অবধি যত ছেলে-মেয়ে তাঁর প্রকল্পের আওতায় স্কেটবোর্ডিং শিখেছে, তাদের চল্লিশ শতাংশই নাকি মেয়ে৷ মাজার-ই-শরিফে সুযোগের অপেক্ষায় থাকাদের মধ্যেও আশি শতাংশ মেয়ে৷

Skaterpark in Mazar-e Sharif, Afghanistan für Kinder und Jugendliche. Copyright: Skateistan via: DW/ Waslat Hasrat-Nazimi
স্কেটবোর্ডিং এর জন্য প্রয়োজন হয় স্টিল এবং মার্বেলের তৈরি বিশেষ ধরনের ব়্যাম্পছবি: Skateistan

বাধা-বিপত্তি আর যুদ্ধের দামামা সত্ত্বেও স্কেটবোর্ডিংয়ের প্রতি আফগানদের আগ্রহে মুগ্ধ পেরকোভিচ৷ প্রচুর সমর্থনও পাচ্ছেন তিনি৷ বাল্খ প্রদেশের গভর্নর আত্তা মোহাম্মদ নূর স্কেটপার্কের জন্য ব্যবহৃত এলাকাটি ভাড়ামুক্ত করে দিয়েছেন৷ এই আফগান মনে করেন, ‘‘শিশুদের শারীরিক এবং মানসিক উন্নয়নের জন্য খেলাধুলা প্রয়োজন৷ আর খেলাধুলায় মত্ত থাকলে তারা মাদকাসক্তি, অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড কিংবা তালেবান থেকে দূরে থাকতে পারবে৷''

বর্তমানে আফগানিস্তানে স্কেটিস্তান ভালোভাবেই কাজ করতে পারছে৷ তবে আগামী বছর সেদেশ থেকে বিদেশি সেনা প্রত্যাহারের পর পরিস্থিতি কেমন হবে, তা নিয়ে খানিকটা চিন্তিত অলিভার পেরকোভিচ৷ বিশেষ করে আর্থিক বিষয়টি বিবেচনায় আনছেন তিনি৷ সেনারা চলে যাওয়ার পর বিদেশি অর্থদাতাদের আগ্রহও কমে যেতে পারে৷ এছাড়া, আর্থিক সহায়তা ছাড়া স্কেটপার্ক চালানো কঠিন হবে তাদের জন্য৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য