চীন থেকে এসেছেন প্রায় চার হাজার
৩০ জানুয়ারি ২০২০শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানন্দরের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শাহরিয়ার সাজ্জাদ জানান, ওই ব্যক্তির বয়স ৩৪ বছর৷ তিনি অনেক দিন ধরে চীনে সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করেন৷ ভোরে বিমানবন্দরে আসার পর তার শরীরের প্রচন্ড জ্বর দেখা যায়৷ তার শরীরে ১০৬ ডিগ্রী তাপমাত্রা ছিলো৷ তাকে প্রাথমিকভাবে কয়েক ঘন্টা পর্যবেক্ষণে রাখা হয় ৷ এরপর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়৷
তিনি বলেন,‘‘তার রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে আমরা পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছে৷ রিপোর্ট পেতে ২৪ ঘন্টা লাগবে৷ তখন বোঝা যাবে তিনি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত কিনা৷ আক্রান্ত না হলে তাকে আমরা ছেড়ে দেব৷ আর আক্রান্ত হলে তাকে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় চিকিৎসা দেয়া হবে৷
তার স্বজনরা যারা তাকে বিমানবন্দরে নিতে এসেছিলেন তারাও জ্বর দেখে তাকে বাড়িতে নিতে চায়নি৷ আর ওই ব্যক্তি নিজে থেকেই তার জ্বরের কথা জানান৷ তিনি নিজেও তাকে পরীক্ষার কথা বলেন৷ বাংলাদেশে আসার আগে চীনে তাকে তিনবার পরীক্ষা করা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন৷''
বাংলাদেশে এই প্রথম করোনা ভাইরাস আক্রান্ত সন্দেহে কাউকে কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হলো৷ এর আগে বেশ কয়েকজনকে অবজারভেশনে নেয়া হয়েছে বলে জানান এই চিকিৎসক৷
বিমানবন্দরের জরুরি হেলথ ডেস্কের ডা. জহিরুল ইসলাম জানান,‘‘চীন থেকে আসা যাত্রীদের আমরা ২১ জানুয়ারি রাত থেকে স্ক্যানিং করছি৷ এ পর্যন্ত আমরা তিন হাজার ৭৫৪ জনকে স্ক্যানিং করেছি৷ আমাদের গাইডলাইন হলো চীন থেকে কোনো যাত্রী আসলেই তাকে স্ক্যানিং করতে হবে৷ তার জ্বর বা সর্দি কাশি থাকলেই তাকে অবজারভেশনে রাখতে হবে৷ চায়না থেকে আসা ওই বাংলাদেশির জ্বর ছাড়াও সর্দি- কাশি আছে৷''
রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) করোনা ভাইরাসের পুরো বিষয়টি পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ করছে৷ আইইডিসিআর জানায়, চারটি হটলাইনের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে৷ বিমানবন্দরে চীন থেকে আসা যাত্রীদের একটি কার্ড দেয়া হচ্ছে৷ সেই কার্ডে তাদের করণীয় এবং যোগাযোগের ফোন নাম্বার আছে৷
চীন থেকে আসা নিবন্ধিতদের মধ্যে এপর্যন্ত ১০০ জন আইইডিসিআর-এর হটলাইনে লক্ষণ দেখে যোগাযোগ করেছেন৷ তবে তারা কেউই করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত নন ৷ প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা জানান,‘‘বুধবার ৫৪টি কল এসেছে৷ এরমধ্যে নয়টি কল ছিলো করোনা সম্পর্কিত৷ কিন্তু তাদের কারুরই করোনা পজিটিভ নয়৷করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের লক্ষণ পুরোপুরি স্পষ্ট হতে সর্বোচ্চ ১৪ দিন লাগে৷ আমরা এখন পর্যন্ত কোনো আক্রান্ত রোগী পাইনি৷''
এদিকে বিমানবন্দর ও স্থলবন্দর ছাড়াও সারাদেশের জেলা প্রশাসকদের চীন থেকে আসা ব্যক্তিদের তালিকা করতে বলা হয়েছে৷