আঞ্চলিক নির্বাচনের আগে বিপর্যস্ত ম্যার্কেল শিবির
১১ মার্চ ২০২১আগামী রবিবার জার্মানির দুটি রাজ্যে নির্বাচনের আগে চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের রক্ষণশীল সিডিইউ দলের ভাবমূর্তি তলানিতে এসে ঠেকেছে৷ ম্যার্কেলের বিদায়ের ঠিক আগে দলের এমন সংকট বাকি নেতাদের জন্য চরম দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে উঠছে৷ এমন অবস্থায় সার্বিকভাবে জার্মানির দলীয় রাজনীতির সমীকরণে বড়সড় পরিবর্তনের পূর্বাভাষও দিচ্ছেন কিছু বিশেষজ্ঞ৷ বিশেষ করে সবুজ দলের আরও সাফল্যের সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়ে উঠছে৷ তবে সংসদে প্রধান বিরোধী দল হিসেবে চরম দক্ষিণপন্থি এএফডি দলের প্রভাব-প্রতিপত্তি আরও বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে৷
প্রায় এক বছর ধরে চলে আসা করোনা সংকটের মাঝে জার্মানির রক্ষণশীল শিবিরে দুর্নীতির অভিযোগ মানুষের মনে চরম বিরক্তি সৃষ্টি করছে৷ সংকট মোকাবিলায় সরকারের একের পর এক ব্যর্থতার পর সেই সংকটেরই ফায়দা তুলতে সরকারি শিবিরের দুই সংসদ সদস্যের কার্যকলাপ বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে৷ জনমত সমীক্ষা অনুযায়ী ম্যার্কেলের শিবিরের প্রতি সমর্থন কমে প্রায় ৩০ শতাংশে নেমে এসেছে৷ ফলে বাডেন-ভ্যুর্টেমব্যার্গ ও রাইনল্যান্ড প্যালেটিনেট রাজ্যের নির্বাচনের পর জোট সরকারের নেতৃত্ব দেবার আশা কার্যত ছেড়ে দিতে হচ্ছে সিডিইউ দলকে৷ এমন সংকট কাটিয়ে উঠতে না পারলে চলতি বছর বাকি নির্বাচনগুলিতেও খারাপ ফলাফলের আশঙ্কা করছে ম্যার্কেলের শিবির৷ বিশেষ করে ২৬শে সেপ্টেম্বর সাধারণ নির্বাচনকে ঘিরে বাড়তি দুশ্চিন্তা রয়েছে৷
অথচ এক বছর আগের চিত্র একেবারেই অন্যরকম ছিল৷ করোনা সংকট মোকাবিলা করতে ঠিক সময়ে জোরালো পদক্ষেপ নিয়ে যথেষ্ট প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন ম্যার্কেল৷ সরকারের প্রধান শরিক হিসেবে জনমানসে সিডিইউ ও বাভেরিয়ার সিএসইউ দলের ভাবমূর্তি যথেষ্ট উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল৷ কিন্তু লাগাতার লকডাউন, করোনার টিকাদান কর্মসূচির ধীর গতি, দ্রুত করোনা পরীক্ষায় বিলম্ব এবং স্পষ্ট ও জোরালো নেতৃত্বের অভাবের ফলে সরকারের প্রতি মানুষের আস্থা কমে চলেছে৷ জার্মানির ফেডারেল কাঠামোয় ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ বিষয়টিকে আরও জটিল করে তুলছে৷ করোনা মোকাবিলায় রাজ্য সরকারগুলি বিচ্ছিন্নভাবে নিজস্ব সিদ্ধান্ত নেওয়ার ফলে বিভ্রান্তি আরও বাড়ছে৷
সংকট সামাল দিতে জার্মানির রক্ষণশীল শিবির কিছু পদক্ষেপ নিচ্ছে৷ অভিযুক্ত দুই সংসদ সদস্য প্রবল চাপের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন৷ সংসদীয় দলের বাকি সদস্যরা করোনা সংকটের আর্থিক ফায়দা তুলে থাকলে শুক্রবারের মধ্যে তা স্বীকার করার জন্য সময় দেওয়া হয়েছে৷ তবে চাপে পড়ে এমন শুদ্ধিকরণ প্রক্রিয়ার আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে৷ এমন প্রেক্ষাপটে সিডিইউ দলের সদ্য নির্বাচিত নেতা আরমিন লাশেট আগামী নির্বাচনে চ্যান্সেলর পদপ্রার্থী হবার আশা ত্যাগ করবেন কিনা, তা নিয়ে জল্পনাকল্পনা চলছে৷ সে ক্ষেত্রে বাভেরিয়ার মুখ্যমন্ত্রী মার্কুস স্যোডার সেই ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারেন৷ আগামী ২৩শে মে-র মধ্যে বিষয়টির নিষ্পত্তি হবার কথা৷ সাধারণ নির্বাচনে রক্ষণশীল শিবির সাফল্য পেলে প্রায় ১৬ বছর পর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের জায়গায় তিনি জার্মানির আগামী চ্যান্সেলর হতে পারেন৷
এসবি/কেএম (রয়টার্স, এএফপি)