এবার দুর্নীতির দায়ে চাপের মুখে ম্যার্কেলের শিবির
৮ মার্চ ২০২১করোনা মহামারি মোকাবিলায় জার্মানির প্রাথমিক সাফল্যকে মূলধন করে জনসমর্থন আদায় করার উপায় আর নেই৷ অন্তত ক্ষমতাসীন জোটের প্রধান শরিক রক্ষণশীল শিবির সম্পর্কে মানুষের ধারণা আরও নেতিবাচক হয়ে উঠছে৷ একাধিক রাজ্য এবং সেপ্টেম্বর মাসে সংসদ নির্বাচনের আগে এমন ভাবমূর্তি দুই রক্ষণশীল দলের পক্ষে মোটেই সুখকর নয়৷ তার উপর দীর্ঘ ১৬ বছর পর চ্যান্সেলর হিসেবে অবসর নিচ্ছেন আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷ ফলে সেই শূন্যস্থান পূরণ করার চাপও রয়েছে৷ মোটকথা করোনা সংকটের জের ধরে জার্মানির দলীয় রাজনীতিতে অনিশ্চয়তার মাত্রা বেড়েই চলেছে৷ মূল স্রোতের রাজনৈতিক দলগুলির প্রতি জনসমর্থনের দাঁড়িপাল্লা বাকি বিশ্বের কাছে তেমন গুরুত্বপূর্ণ না হলেও চরম দক্ষিণপন্থি এএফডি দল জনরোষের আরও ফায়দা তুলতে সমর্থ হলে দুশ্চিন্তার কারণ রয়েছে বৈকি৷
করোনা সংকট মোকাবিলার ক্ষেত্রে ভুলত্রুটি, ঢিলেমি, দূরদর্শিতার অভাব থেকে শুরু করে দুর্নীতির দায়ে প্রবল চাপের মুখে রয়েছে ম্যার্কেলের নেতৃত্বে সিডিইউ ও বাভেরিয়ার সিএসইউ দলের রক্ষণশীল শিবির৷ ফলে জনমত সমীক্ষায় এই শিবিরের প্রতি সমর্থন কমেই চলেছে৷ আগামী সপ্তাহান্তে জার্মানির দুটি রাজ্যে নির্বাচনে সেই জনরোষের প্রতিফলন দেখা যাবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ ফলে রাইনল্যান্ড প্যালাটিনেট ও বাডেন-ভ্যুর্টেমব্যার্গ রাজ্য সরকারের নেতৃত্ব ছিনিয়ে নেবার আশা কার্যত ছেড়ে দিচ্ছে সিডিইউ দল৷
ম্যার্কেলের দলের এমন করুণ অবস্থার পেছনে একাধিক ব্যর্থতা কাজ করছে৷ কমপক্ষে মানুষের মনে সেই ধারণাই সৃষ্টি হয়েছে৷ বিধিনিয়মের ক্ষেত্রে অস্পষ্টতা, টিকাদান কর্মসূচির ধীর গতি, সেই বিশাল কর্মযজ্ঞে ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে ঢিলেমি, দ্রুত করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থায় বিলম্বের কারণে বিরক্তি ও হতাশা বেড়ে চলছিল৷ এবার রক্ষণশীল শিবিরের দুইজন সংসদ সদস্য করোনা সংকটের ফায়দা তুলে দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ার ফলে সেই বিরক্তি ক্ষোভ ও রোষে পরিণত হচ্ছে৷ সিএসইউ দলের সংসদ সদস্য গেয়র্গ ন্যুসলাইন মাস্ক কেনার বরাতের বিনিময়ে এক কোম্পানির কাছ প্রায় ছয় লাখ টাকার ঘুষ নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে৷ অন্যদিকে সিডিইউ দলের সংসদ সদস্য নিকোলাস ল্যোবেল নিজের কোম্পানির মাধ্যমে মাস্ক কেনার ক্ষেত্রে আড়াই লাখ ইউরো কমিশন আদায় করেছে৷ চাপের মুখে দুই দলই দুর্নীতি বরদাস্ত করবে না বলে জানিয়েছে৷ ল্যোবেল রবিবার সংসদীয় দল থেকে পদত্যাগের ঘোষণা করলেও সংসদ সদস্য হিসেবে থেকে যেতে চান বলে জানিয়েছেন৷ অর্থ এবং অন্যান্য সুযোগসুবিধার লোভে তিনি এমনটা করছেন বলে সমালোচনা শোনা যাচ্ছে৷
জোট সরকারের ছোট শরিক হিসেবে সামাজিক গণতন্ত্রী এসপিডি দল আপাতত সমালোচনা থেকে রেহাই পাচ্ছে৷ ভাইস চ্যান্সেলর ও দলের চ্যান্সেলর পদপ্রার্থী ওলাফ শলৎস বরং আরও দক্ষতার সঙ্গে করোনা সংকট মোকাবিলার অঙ্গীকার করছেন৷ এক সাক্ষাৎকারে তিনি আগামী মাসগুলিতে টিকাদান কর্মসূচির গতি বাড়াতে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার দাবি করেছেন৷
এসবি/কেএম (এএফপি, রয়টার্স)