‘আজীবন গণতন্ত্রীর বিদায়’
২০ মার্চ ২০১৩ছাত্রজীবন থেকেই জিল্লুর রহমানের ঘনিষ্ঠ এ শিক্ষাবিদ বলেন, তিনি ছিলেন সবার কাছে গ্রহণযোগ্য৷
আরেফিন সিদ্দিক ডয়চে ভেলেকে বলেন, ৫২'র ভাষা আন্দোলন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধসহ সব সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনে জিল্লুর রহমান ছিলেন সামনের সারিতে৷ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর এই নেতা বার বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন৷ তিনি বলেন, এই প্রজন্মও তাঁকে দেখেছে তার সংগ্রামী ভূমিকায়৷ এক এগারোর ঘটনায় সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্ব নিয়ে রাজনৈতিক নেতাদের গ্রেফতার এবং নির্যাতন চালায়৷ গ্রেফতার করা হয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে৷ তখন আওয়ামী লীগের হাল ধরেন জিল্লুর রহমান৷ বয়স তাঁকে দমাতে পারেনি৷ তিনি দৃঢ় মনোবল নিয়ে শেখ হাসিনাকে মুক্ত করার আইনি এবং রাজনৈতিক সংগ্রাম চালিয়ে যান৷ অবশেষে শেখ হাসিনা মুক্ত হলে ২০০৮ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করে৷ আর তিনি রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন৷
আরেফিন সিদ্দিক আরো বলেন, এই সংগ্রামী মানুষটি পাথর চাপা কষ্ট নিয়ে হাসিমুখে দেশের জন্য কাজ করেছেন৷ ২০০৪ সালের ২১শে আগষ্ট তিনি তাঁর সহধর্মিণী মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী আইভী রহমানকে হারান ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায়৷ যা তাঁর জীবনে সবচেয়ে শোকের আর দুঃখের ঘটনা৷ আর এই দুঃখ তিনি বয়ে বেড়িয়েছেন আরো প্রায় ৯ বছর৷ কিন্তু তিনি ঘাতকদের বিচার দেখে যেতে পারলেন না৷ যা আমাদের অপরাধী করে বলে জানান তিনি৷
জিল্লুর রহমান সর্বশেষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন ৪ঠা মার্চ সমাবর্তনে চ্যান্সেলর হিসেবে৷ আর সেই অনুষ্ঠানে ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জিকে সম্মানসূচক ডি লিট ডিগ্রি দেয়া হয়৷ আরেফিন সিদ্দিক জানান সেখানেও তিনি বলেছিলেন তরুনরাই পারবে সমাজের পরিবর্তন আনতে৷ আর তরুণ বয়সে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিসেবেই তিনি অংশ নিয়েছিলেন ভাষা আন্দোলনে৷
বাংলাদেশের রাজনীতিতে মূল্যবোধ এবং সুসংস্কৃতির প্রতীক জিল্লুর রহমান৷ তিনি নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে তাই বিরোধী দলের সঙ্গে সংলাপ করেন৷ আর তিনি ছিলে জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত৷ আরেফিন সিদ্দিক বললেন জাতি তাঁর মৃত্যুতে অভিভাবক শূন্য হয়ে পড়ল৷