আগামী সপ্তাহে তফশিল
২০ নভেম্বর ২০১৩বিরোধী দলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া রাষ্ট্রপতির সঙ্গে মঙ্গলবার দেখা করে রাজনৈতিক সমঝোতার জন্য সংলাপের উদ্যোগ নেয়ার অনুরোধ জানানোর পর এখনো সংলাপের কোনো লক্ষণ স্পষ্ট নয়৷ তবে সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, তাঁরা বিরোধী দলের সঙ্গে যে কোনো দিন যে কোনো জায়গায় সংলাপের জন্য প্রস্তুত আছেন৷ তাঁর মতে, রাষ্ট্রপতিকে বিরোধী ১৮ দলীয় জোট বেশ কিছু অসাংবিধানিক অনুরোধ করেছে৷ কিন্তু সংবিধানের মধ্যে থেকেই রাজনৈতিক সংকটের সমাধান খুঁজতে হবে বলে জানান তিনি৷ তিনি আরও বলেন, তাঁরা এখনো আশা করেন বিএনপি নির্বাচনকালীন সরকারে যোগ দেবে৷
ইনু বলেন, বিএনপি যোগ দিলে নির্বাচনকালীন সরকার সব দিক দিয়ে পূর্ণাঙ্গ হবে৷ তবে তারা যদি শেষ পর্যন্ত যোগ না দেয়, তাহলে সরকার বসে থাকবেনা৷ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার পর নির্বচানকালীন সরকার নির্বাচন কমিশনকে নির্বাচনের কাজে সহায়তা এবং রুটিন ওয়ার্ক করবে৷ যেখানে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি-র নেতৃত্বে বিরোধী ১৮ দলের কেউ নির্বাচনকালীন সরকারে যোগ দেয়নি, সেখানে এটা সর্বদলীয় সরকার হয় কীভাবে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন ‘‘এটা সর্বদলীয় সরকার নয়, বহুদলীয় সরকার৷''
এদিকে নির্বাচনকালীন সরকারের জন্য নতুন ৮ জন মন্ত্রী এবং প্রতিমন্ত্রী সোমবার শপথ নিলেও এখনো তাদের দপ্তর বণ্টন করা হয়নি৷ আর পুরনো মন্ত্রীদের মধ্য থেকে কারা থাকবেন, কারা বাদ পড়বেন, তা বুধবার সারাদিনও চূড়ান্ত হয়নি৷ এর ফলে সচিবালয়ে এক ধরনের স্থবিরতা বিরাজ করছে৷ মন্ত্রীরা নিজেরাই জানেন না তারা আছেন কি নেই৷ আবার কেউ কেউ নির্বাচনকালীন মন্ত্রিসভায় থাকার জন্য তদবিরও করছেন বলে জানা গেছে৷ তবে নীতি নির্ধারক পর্যায় থেকে জানা গেছে, বিএনপি শেষ পর্যন্ত যোগ দেয় কিনা তা দেখা হচ্ছে৷ তাদের জন্যই নতুন মন্ত্রীদের দপ্তর বণ্টন এবং এবং পুরনো মন্ত্রীদের বিদায়ের ব্যাপারে দেরি করা হচ্ছে৷
এদিকে নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ শাহনেয়াজ জানিয়েছেন, তাঁরা আগামী সপ্তাহে নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করবেন৷ এজন্য চলতি সপ্তহেই কমিশন বৈঠকে বসবে৷ তিনি জানান, সব দলের অংশগ্রহণে ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য তাঁরা প্রস্তুত৷ তাঁরা চান সব দল নির্বাচনে অংশ নিক৷ তবে এ জন্য তারা কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করবেন না৷ তাঁরা নিয়ম অনুযায়ী নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করে নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাবেন৷ তিনি জানান, তাঁরা রাষ্ট্রপতিকে নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতির বিষয়ে অবহিত করেছেন৷
এই নির্বাচনে বিএনপি-র অংশগ্রহণ এখনো অনিশ্চিত হলেও আওয়ামী লীগ মনোনয়নপত্র বিক্রি শেষ করেছে৷ শিগগিরই শুরু হবে মনোনয়ন চূড়ান্ত করার পালা৷ আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, বিএনপি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে না আসে, তাহলে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীদের নিরুত্সাহিত করা হবেনা৷ কারণ নির্বাচনে প্রার্থী বেশি হলে উত্সবের আমেজ চলে আসবে৷ ভোটার উপস্থিতি বাড়বে৷ এবার প্রতি আসনে আওয়ামী লীগের ৮ থেকে ১০ জন মনোনয়ন প্রার্থী আছে৷ জাতীয় পার্টিও বুধবার থেকে মনোনয়ন পত্র বিক্রি শুরু করেছে৷ জাতীয় পার্টি ৩০০ আসনেই প্রার্থী দিতে চায়৷
অন্যদিকে বিএনপি-র ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীর আবারো বলেছেন, তাঁরা নির্দলীয় সরকার ছাড়া নির্বাচনে যাবেননা৷ তিনি বুধবার দলের নেতা-কর্মীদের মাঠে নেমে চূড়ান্ত আন্দোলনে সামিল হওয়ার আহ্বান জানান৷ জানা গেছে, কোনো রাজনৈতিক সমঝোতা না হলে নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার পর থেকেই টানা হরতাল ও অবরোধ কর্মসূচিতে যাবে বিএনপি৷ বিএনপি এরই মধ্যে নির্বাচন কমিশনেরও পদত্যাগ দাবি করেছে৷