আওয়ামী লীগের প্রায় ৯৩ শতাংশ প্রার্থী কোটিপতি : সুজন
৪ জানুয়ারি ২০২৪বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) এক অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য পরিবেশন করে তারা ৷ সংবাদ সম্মেলনে সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার নির্বাচনের প্রার্থীদের নানা বিষয় নিয়ে এ প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন৷ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীদের হলফনামা বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদনটি তৈরি বলে দাবি করেছে সংগঠনটি৷
সুজনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের ২৬৫ জন প্রার্থীর বার্ষিক গড় আয় ২ কোটি ১৪ লাখ টাকা, গড় সম্পদমূল্য সাড়ে ২৮ কোটি টাকার বেশি৷ দলটির প্রার্থীদের ১৭০ জনই (৬৪ দশমিক ১৫ শতাংশ) পেশায় ব্যবসায়ী৷
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, এবারের নির্বাচনে ২৮টি রাজনৈতিক দল অংশ নিচ্ছে৷ স্বতন্ত্রসহ মোট প্রার্থী ১ হাজার ৯৪৫ জন৷ এর মধ্যে ১৪ জন ২টি করে এবং একজন ৩টি আসনে প্রার্থী হয়েছেন৷
সুজনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া ১ হাজার ৯৪৫ জনের মোট বার্ষিক আয় ১ হাজার ১১৪ কোটি টাকা৷ মোট সম্পদমূল্য ১৩ হাজার ৬২০ কোটি টাকা৷ সবচেয়ে বেশি আয় ও সম্পদ ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের৷ আয় ও সম্পদের দিক থেকে এর পরেই রয়েছেনস্বতন্ত্র প্রার্থীরা৷
উপস্থাপিত প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রার্থীদের প্রায় ৫৯ শতাংশ ব্যবসায়ী৷ আওয়ামী লীগের ২৬৫ প্রার্থীর মধ্যে ১৭০ জন (৬৪ দশমিক ১৫ শতাংশ) পেশায় ব্যবসায়ী৷ জাতীয় পার্টির ২৬২ প্রার্থীর মধ্যে ১৭৩ জন (৬৬ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ) ব্যবসায়ী৷ ৪৩৩ স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে ব্যবসায়ী ৩০২ জন (৬৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ)৷ ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তুলনায় এবার ব্যবসায়ী প্রার্থীর সংখ্যা বেড়েছে৷ গত নির্বাচনে ব্যবসায়ী প্রার্থী ছিলেন প্রায় ৫২ শতাংশ৷
সংবাদ সম্মেলনে সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘‘ক্ষমতার সঙ্গে জাদুর কাঠি জড়িত৷ ২০০৮ সাল থেকে দেখা যাচ্ছে, যে নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ছিল, সেখানে প্রার্থীদের মধ্যে আয়বৈষম্য কম ছিল৷ একতরফা নির্বাচনে এই বৈষম্য বেড়ে যায়, কারণ, এসব নির্বাচনে যেনতেন প্রার্থী দিলেও জিততে সমস্যা হয় না৷''
সংবাদ সম্মেলনে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও সুজনের নির্বাহী সদস্য শাহদীন মালিক বলেন, ‘‘আমাদের রাজনৈতিক দলের নেতাদের কার্যকলাপে মগের মুল্লুকও লজ্জা পাবে৷ এই নির্বাচন হচ্ছে আওয়ামী লীগ বনাম স্বতন্ত্র লীগের৷ নির্বাচনে জিতলে অধিকাংশ স্বতন্ত্র প্রার্থীই আওয়ামী লীগে যোগ দেবেন৷ ফলে আগামী সংসদে ২৮০ জনই সরকারি দলের হলে আশ্চর্য হবো না৷ গণতন্ত্রের যে ‘গ' আছে, সেটাও আগামী ২-৩ বছরের মধ্যে থাকবে না৷''
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সাবেক বিচারপতি এম এ মতিন৷ তিনি বলেন, ‘‘জনগণ এখন সংসদ থেকে কিছু আশা করে না৷ এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ তো জিতেই গেল৷ তবে এই নির্বাচন কেউ মেনে নেবে না৷ টানেলের শেষে নিশ্চয়ই আলো আসবে, ভবিষ্যতে বাংলাদেশে ভালো নির্বাচন হবে, এই আশা করি৷''
এসএইচ / এসিবি (প্রথম আলো)