‘স্বেচ্ছায় দেশে ফেরার' প্রকল্প ব্যর্থ
২৬ ডিসেম্বর ২০১৭ফেডারাল অভিবাসন ও উদ্বাস্তু কার্যালয় বিএমএএফ-এর প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী এ বছর ‘‘স্বেচ্ছা প্রত্যাবর্তনের'' সংখ্যা গতবছরের তুলনায় প্রায় অর্ধেক, যদিও জার্মান সরকার প্রত্যাখ্যাত রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীদের দেশে ফেরার জন্য আর্থিক ও অপরাপর সুযোগ-সুবিধা যথাসাধ্য বাড়িয়েছেন৷
‘ডি ভেল্ট' পত্রিকার বিবরণ অনুযায়ী, ২০১৬ সালে ২৮,০০০-এর কম ব্যর্থ রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী স্বেচ্ছায় স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করেন, যেখানে ২০১৬ সালে স্বেচ্ছা প্রত্যাবর্তনকারীদের সংখ্যা ছিল ৫০,০০০-এর বেশি৷
‘বাম্ফ'-এর পরিসংখ্যান থেকে আরো দেখা যাচ্ছে যে, ব্যর্থ রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীদের সরকারিভাবে স্বদেশে ফেরত পাঠানোর সংখ্যাও ২০১৬ সালে ২৫,০০০-এর বেশি ছিল, কিন্তু ২০১৭ সালে তা কমে ২২,০০০-এর কিছু ওপরে দাঁড়িয়েছে৷
প্রত্যাখ্যাত অভিবাসীদের ‘ডিপোর্টেশান' বা স্বদেশে ফেরত পাঠানোর দায়িত্ব বর্তমানে একক রাজ্যগুলির উপর ন্যস্ত, বার্লিনের কেন্দ্রীয় সরকারের উপর নয়৷
‘ইনসেন্টিভ' বাড়ানো সত্ত্বেও
জার্মান সরকার বর্তমানে অবৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া চেষ্টা করছেন৷ তা সত্ত্বেও দৃশ্যত (সম্মতি সহকারে) ‘রিপ্যাট্রিয়েশান' বা (বিনা সম্মতিতে) ‘ডিপোর্টেশান', উভয়েরই সংখ্যা কমেছে৷
চলতি বছরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টোমাস ডেমেজিয়ের ঘোষণা করেন যে, সরকার প্রত্যাখ্যাত রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী ও অন্যান্যদের দেশে ফেরার জন্য আর্থিক সহায়তা আরো বৃদ্ধি করছেন৷ নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী যারা ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে স্বেচ্ছায় স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করবেন, তারা পরিবার পিছু ৩,০০০ ইউরো এবং একক ব্যক্তিরা ১,০০০ ইউরো করে অনুদান পাবেন৷
ডেমেজিয়ের মাত্র গত সপ্তাহে বলেন যে, পরিকল্পনার প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া ‘‘ইতিবাচক'' হয়েছে৷ এছাড়া তিনি অভিবাসীদের জন্য আরো বেশি ‘আটক ও প্রত্যবর্তন' কেন্দ্র খোলার ডাক দেন, যাতে বহিষ্কারের প্রক্রিয়া দ্রুততর হতে পারে৷
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি অনুযায়ী, বহিষ্কারের সংখ্যা আর বাড়ছে না, তার কারণ, ২০১৬ সালে অপ্রত্যাশিত সংখ্যক ব্যর্থ রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী নিজের উদ্যোগে জার্মানি পরিত্যাগ করেছেন৷ তাদের মধ্যে অনেকেই বলকান দেশগুলি থেকে আগত ইউরোপীয়, যারা ২০১৫ সালের উদ্বাস্তু সংকটের সময় তথাকথিত বলকান রুট ধরে মধ্যপ্রাচ্যের উদ্বাস্তুদের সঙ্গে জার্মানিতে এসে পৌঁছন৷
(রাজ)নীতির ফারাক
বহিষ্কার নিয়ে জার্মানির মুখ্য দু'টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে মতভেদ রয়েছে৷ ডেমেজিয়ের যে আরো বেশি ডিটেনশান সেন্টারের ডাক দিয়েছেন, সামাজিক গণতন্ত্রী বিধায়ক বুর্কহার্ড লিশকা তাকে একটি ‘‘ছল'' বলে অভিহিত করেছেন এবং বলেছেন যে, বহিষ্কারের পদ্ধতিতে স্থিতি আনার জন্য ফেডারাল সরকারের তাঁদের নিজেদের দায়িত্ব স্বীকার করা উচিত – একমাত্র তখনই গ্রহণযোগ্য হারে বহিষ্কারের ঘটনা ঘটবে৷
অপরদিকে চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের সিডিইউ দলের বিধায়ক আর্মিন শুস্টার বলেছেন যে, সরকার যদি ‘‘যারা জার্মানিতে সমস্যা সৃষ্টি করছে – যেমন অপরাধীদের'' অবিলম্বে বহিষ্কার করতে পারতেন, তাহলে পরিস্থিতি এতটা সমস্যাকর হতো না৷ যারা থাকার আশা নেই জেনেও জার্মানিতে আসছেন, এই পদক্ষেপ তাদেরও খানিকটা নিবৃত্ত করত, বলে শুস্টারের ধারণা৷
এসি/ডিজি (ডিপিএ, কেএনএ)