‘অবৈধ বাংলাদেশি’ ধরতে নাগরিক তালিকা
২৯ ডিসেম্বর ২০১৭‘ন্যাশনাল রেজিস্টার অফ সিটিজেন্স' বা এনআরসি নামের ঐ তালিকার খসড়া রবিবার প্রকাশ করবে রাজ্য সরকার৷ ‘‘আসামে বসবাসকারী অবৈধ বাংলাদেশিদের খুঁজে বের করতে এই তালিকা তৈরি হয়েছে,’’ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী হিমান্ত বিশ্ব শর্মা৷ এনআরসি প্রকল্পেরও প্রধান তিনি৷ ‘‘তালিকায় যাদের নাম থাকবে না তাদের বিতাড়িত করতে হবে,’’ বলেন তিনি৷
তালিকা প্রকাশকে ঘিরে রাজ্যে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশংকা করছে স্থানীয় সরকার৷ তাই নিরাপত্তা রক্ষায় সেখানে প্রায় ৬০ হাজার পুলিশ ও প্যারামিলিটার পাঠানো হয়েছে৷
এনআরসি তৈরিতে ১৯৫১ সালের পর প্রথমবারের মতো আসামে আদমশুমারি করা হয়৷ গতবছর প্রথমবারের মতো আসামের ক্ষমতায় বসে হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল বিজেপি৷ নির্বাচনি প্রচারণার সময় দলটি অবৈধ মুসলিমদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়ার অঙ্গীকার করেছিল৷ মুসলিমদের জন্য স্থানীয় হিন্দুরা চাকরি থেকে বঞ্চিত হন বলে অভিযোগ হিন্দুদের৷
মুসলমান নেতারা বলছেন, মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের মতো তাদেরও রাষ্ট্রহীন করতে এনআরসিকে ব্যবহার করা হচ্ছে৷
নতুন দিল্লির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি৷
বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, বিতাড়ন পরিকল্পনা সম্পর্কে তাঁরা কিছু জানেন না৷ ‘‘আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিক কোনোভাবেই ভারতের সরকারের কাছ থেকে আমরা এ ব্যাপারে কোনো তথ্য পাইনি,’’ রয়টার্সকে বলেন তিনি৷
ধারণা করা হয়, আসামে বিশ লক্ষেরও বেশি মুসলিম আছেন যাদের শেকড় বাংলাদেশে রয়েছে৷
নাগরিক হওয়ার শর্ত
ভারতের নাগরিক হতে আগ্রহীদের প্রমাণ দেখাতে হবে যে ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের আগে থেকে তাঁরা বা তাঁদের পূর্বপুরুষ ভারতে বসবাস করছে৷ ‘‘আমার দাদা-দাদি, নানা-নানি, মা-বাবা সবাই ভারতে জন্মগ্রহণ করেছেন৷ কিন্তু আমরা এখন ভারতীয় হিসেবে আমাদের দাবির পক্ষে তথ্য উপস্থাপন করতে সমস্যায় পড়েছি৷ কারণ তাঁরা অশিক্ষিত ছিলেন৷ ফলে বৈধ তথ্যাদি রাখেননি,’’ বলেন আসিফুল রহমান৷ আসামের একটি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন তিনি৷
উল্লেখ্য বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় হাজার হাজার মানুষ ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলেন৷ তাঁদের বেশিরভাগই আসাম ও পশ্চিমবঙ্গে বসতি গড়েছিলেন৷ পশ্চিমবঙ্গেও অবৈধ মুসলিম অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর দাবি রয়েছে৷
জেডএইচ/ডিজি (রয়টার্স)
২০১৫ সালের এই ছবিঘরটি দেখে নিন...