‘অবৈধ' গর্ভপাতের দায়ে সাংবাদিকের কারাদণ্ড
১ অক্টোবর ২০১৯মরক্কোর এক আদালত ২৮ বছর বয়সি সাংবাদিক হাজার রেইসনিকে অবৈধ গর্ভপাতের দায়ে এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে৷
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো রেইসনির বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাটির শুরু থেকেই সমালোচনা করে আসছিল৷ মরক্কোয় নারীদের দুরবস্থার এক উদাহরণ হিসেবেও মামলাটি তুলে ধরছে অনেক সংগঠন৷
গত ৩১ আগস্ট মরক্কোর রাজধানী রাবাতে এক স্ত্রীরোগবিশেষজ্ঞের ক্লিনিক থেকে বের হওয়ার সময় রেইসনিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ৷ তাঁর আইনজীবী আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডাব্লিউজ)-কে জানিয়েছেন যে, তাঁকে গ্রেপ্তারের পর একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং জোর করে তাঁর শারীরিক পরীক্ষা করা হয়৷
সেই ঘটনার কিছুদিন পরই রেইসনির বিরুদ্ধে গর্ভপাত এবং বিবাহ বহির্ভূত যৌনসম্পর্কে জড়ানোর অভিযোগ আনা হয়৷
রেইসনি অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, একটি রক্তের চাকের কারণে চিকিৎসা নিতে চিকিৎসকের কাছে গিয়েছিলেন তিনি৷ তবে, প্রসিকিউশন জানিয়েছে, হাজার রেইসনির স্বাস্থ্য পরীক্ষায় ‘স্বেচ্ছায় গর্ভপাতের' প্রমাণ মিলেছে৷
মরক্কোর দণ্ডবিধির ৪৯০ ধারা অনুযায়ী, বিবাহ বহির্ভূত যৌন সম্পর্ক অবৈধ৷ আর একজন নারীর জীবনের ঝুঁকি তৈরি হওয়ার ছাড়া অন্য কোনো কারণে গর্ভপাতও অবৈধ৷ রেইসনি যে স্ত্রীরোগবিশেষজ্ঞের কাছে গিয়েছিলেন তাঁকে অবৈধ গর্ভপাত করানোর দায়ে দুই বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে৷
আলোচিত এই সাংবাদিকের বাগদত্তা আমিন রিফাতকেও এক বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে৷ রেইসনির আইনজীবীরা অবশ্য আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে বলে জানিয়েছেন৷
সমালোচকরা অবশ্য বলছেন যে, মরক্কোর সরকার সমালোচক সাংবাদিকদের উপর দমনপীড়নের অংশ হিসেবে রেইসনিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ তিনি ‘আখবার আল ইয়াওম' নামের একটি পত্রিকার সাংবাদিক যেটি মাঝেমাঝেই সরকারের সমালোচনা করে প্রতিবেদন প্রকাশ করে৷ রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স পত্রিকাটিকে মরক্কোর যে কয়েকটি পত্রিকা এখনো স্বাধীন সাংবাদিককতার চর্চা করছে সেগুলোর একটি বলে উল্লেখ করেছে৷
মরক্কো সরকার অবশ্য গর্ভপাত মামলার সঙ্গে রেইসনির সাংবাদিকতার কোনো সম্পর্ক নেই বলে দাবি করেছে৷
এআই/এসিবি (এএফপি, রয়টার্স, এপি)