অন্তরিক্ষ-ডেভাস চুক্তির জেরে ইসরোর সাবেক চেয়ারম্যানের শাস্তি
২৫ জানুয়ারি ২০১২উপগ্রহ-ভিত্তিক এস-ব্যান্ড স্পেকট্রাম বন্টন নিয়ে এবার দুর্নীতির অভিযোগ উঠলো দেশের নামকরা মহাকাশ বিজ্ঞানিদের বিরুদ্ধে৷ মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর বাণিজ্যিক শাখা অন্তরীক্ষ এবং ব্যাঙ্গালোর-ভিত্তিক বেসরকারি মাল্টি-মিডিয়া কোম্পানি ডেভাসের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি সরকার বাতিল করে দিয়েছে৷ সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে যাবে বলে জানিয়েছে ডেভাস৷
এই চুক্তিতে বিতর্কিত ভূমিকার জন্য ইসরোর ভূতপূর্ব চেয়ারম্যান নামকরা মহাকাশ বিজ্ঞানী ড. মাধবন নায়ারসহ চারজন বিজ্ঞানীর বিরুদ্ধে যে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়, তাতে ভবিষ্যতে তাঁরা কোনো সরকারি পদ পাবেন না৷
এতে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রাক্তন চেয়ারম্যান মাধবন নায়ারের পাল্টা অভিযোগ ইসরোর বর্তমান চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে৷ তিনি বলেন, ‘‘ব্যক্তিগত আক্রোশ চরিতার্থ করতে প্রতিষ্ঠিত বিজ্ঞানীদের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে ইসরোর বর্তমান চেয়ারম্যান কে. রামকৃষ্ণান এটা করিয়েছেন৷ দেশের প্রথম সারির বিজ্ঞানিদের বিরুদ্ধে এই ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণে আমি দু:খিত৷ ভুল তথ্য দিয়ে সরকারকে বিভ্রান্ত করেছেন তিনি৷ এই ব্যবস্থায় প্রতিষ্ঠিত নিয়মবিধি লঙ্ঘিত হয়েছে৷ তাঁদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেয়া হয়নি৷ যদিও সরকারের কাছ থেকে কোনো লিখিত আদেশ এখনো পর্যন্ত আসেনি৷''
২০০৫ সালে সম্পাদিত এই চুক্তি খতিয়ে দেখতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কেন্দ্রীয় ভিজিলেন্স কমিশনারের নেতৃত্বে এক উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয় গতবছর মে মাসে৷ চুক্তিতে উপগ্রহ-ভিত্তিক গুরুত্বপূর্ণ এস-ব্যান্ডের একটা বড় অংশ কম টাকায় ভাড়া দেয়া হয় বেসরকারি কোম্পানি ডেভাসকে৷ সরকার এজন্য তৈরি করে ২৬৯ কোটি টাকায় জি-স্যাট-৬ এবং ১৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে জি-স্যাট-৬এ৷
বিজ্ঞানীদের মধ্যে এই কাজিয়া দেখে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি, বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ড. আবদুল কালাম মন্তব্য করেন, ইসরো প্রতিষ্ঠান যে-কোন ব্যক্তিবিশেষের চেয়ে বড়৷ এর সাফল্য অব্যাহত থাকবে৷
এই চুক্তিতে যদি আর্থিক লোকসান হয়ে থাকে, তার জন্য কী স্রেফ চারজন দায়ী? যদি তাই হয় তাহলে তাঁদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রুজু করা হচ্ছে না কেন? সরকার কি ব্যাপারটা ধামাচাপা দিতে চাইছেন? ব্যাপারটা রহস্যজনক, এমনটাই বললেন বিজেপি নেতা বলবীর পুঞ্জ৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক