ভারতে অনাবৃষ্টি
৩ জুলাই ২০১২এবছর গোটা দেশে বর্ষা আসতে ইতিমধ্যেই দু'সপ্তাহ দেরি হয়ে গেছে৷ কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী শরদ পাওয়ার আজ কৃষি পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে সংবাদ মাধ্যমকে জানান, গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ এখনও পর্যন্ত ৩১ শতাংশ কম৷ বর্ষা বিলম্বিত হওয়ায় যেসব রাজ্যে বর্ষার গোড়াতে চাষাবাদ শুরু হয়, সেসব রাজ্যগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হবে৷ যেমন, মহারাষ্ট্র, কর্নাটক, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ এবং উত্তরপ্রদেশ ও বিহারের একাংশ৷
গতমাসে বৃষ্টি কম হওয়ায় ধান ও মোটা দানা শস্যের চাষ সময় মত শুরু করা যায়নি৷ ২৯শে জুন পর্যন্ত খরিফ মরশুমে ধান চাষ হয়েছে ৩০.৭২ হেক্টরে, মোটা দানা শস্য ১০.৫২ হেক্টরে, তেলবীজ ১০.৭৭ হেক্টরে এবং ডাল ৪ হেক্টর জমিতে৷ উল্লেখ্য, ভারতীয় কৃষি উৎপাদনে বৃষ্টি অত্যাবশ্যক৷ কারণ ৬০ শতাংশ জমি এখনও বৃষ্টি-নির্ভর৷ মাত্র ৪০ শতাংশ জমিতে আছে সেচের সুবিধা৷
চাষ ভালো হলে কৃষি আয় বাড়ে৷ আর্থিক প্রবৃদ্ধি হয় উর্ধমুখী৷ আর ভালো ফসল না হলে ছোট চাষিদের ঋণের বোঝা বইতে হয়৷ ঋণ শোধ করতে পারেনা৷ ঘটি-বাটি বন্ধক রাখতে হয়৷ অর্ধাহার অনাহার হয়ে ওঠে নিত্যসঙ্গী৷ অবস্থা চরমে উঠলে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে হয়৷
পাশাপাশি কৃষিমন্ত্রী একথাও বলেছেন, আতঙ্কিত হবার কারণ নেই৷ গত বছর খাদ্যশস্যের উৎপাদন হয়েছিল ২৫ কোটি টনের বেশি৷ সরকারের হাতে খাদ্যশস্যের মজুত যথেষ্ট আছে৷ রাজ্যগুলির দরকার হলে কেন্দ্রীয় সরকার বিভিন্ন স্কিমের অধীনে খোলা বাজারে তা ছাড়বে৷ তবে খাদ্যশস্য রপ্তানির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে মন্ত্রিসভা৷ রাজ্যগুলিকে জরুরি পরিকল্পনা তৈরি রাখতে বলা হয়েছে৷ মোটের ওপর পরিস্থিতি খুব ভালো না হলেও একেবারে খারাপ নয়৷ আবহাওয়া দপ্তরের ধারণা, জুলাই-অগাস্টে, বৃষ্টির ঘাটতি পুষিয়ে যাবে৷
অন্যদিকে, ভারতের বড় বড় জলাধারগুলিতে জলের মাত্রা নেমে গেছে৷ অবিলম্বে তা পূরণ না হলে বিদ্যুৎ, সেচের জল, পানীয় জলের ব্যাপক সমস্যা দেখা দিতে পারে৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ