1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অদূর ভবিষ্যতে কি লগ্নি পাবে চলচ্চিত্র শিল্প

৯ মে ২০২০

বাংলা চলচ্চিত্র শিল্পের ভবিষ্যৎ ঘিরে ধোঁয়াশা৷ লকডাউনের জেরে অর্থনীতির অবস্থা বেহাল হওয়ায় নতুন ছবি তৈরিতে লগ্নি আসার সম্ভাবনা কম৷ ফলে একটা বন্ধ্যা দশা চলতে পারে কলকাতার ফিল্ম এবং টেলিভিশন শিল্পের৷

https://p.dw.com/p/3byAQ
ছবি: S. Bandopadhyay

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে লকডাউন চলছে ভারতে৷ কবে লকডাউন উঠবে, তা নিশ্চিত নয়৷ এর ফলে দেশের অর্থনীতি বিপন্ন৷ শিল্প ক্ষেত্রে দুরবস্থা৷ টালিগঞ্জের চলচ্চিত্র শিল্পেরও একই হাল৷ অর্থনীতিতে সার্বিক মন্দার ফলে অদূর ভবিষ্যতে হাল ফেরার সম্ভাবনা কম৷ একটি ছবি নির্মাণে যে অর্থের প্রয়োজন, তার লগ্নি হবে কি না, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় চলচ্চিত্র মহল৷ শুধু সিনেমা নয়, অপেক্ষাকৃত অল্প পুঁজির প্রয়োজন হলেও টেলিভিশন ধারাবাহিক নিয়েও উদ্বেগ রয়েছে৷

মার্চ মাস থেকে লকডাউন চলছে৷ সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করার জন্য বন্ধ সব সিনেমা হল৷ এর ফলে নতুন ছবি মুক্তি পাচ্ছে না৷ চলতি মাসে মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল রাজ চক্রবর্তীর ‘ধর্মযুদ্ধ’, অনিকেত চট্টোপাধ্যায়ের ‘হবুচন্দ্র রাজা গবুচন্দ্র মন্ত্রী’, অভিজিৎ গুহের ‘বিয়ে ডট কম’, সৌকর্য ঘোষালের ‘রক্তরহস্য’-সহ বিভিন্ন ছবির৷ কোনোটাই মুক্তি পায়নি৷ আগামী মাসেও ছবি মুক্তি পাবে কিনা, তা কেউ জানে না৷ ইতিমধ্যেই বিপুল টাকা বিনিয়োগে যে ছবির নির্মাণ শেষ হয়েছে, তা দিনের আলো দেখেনি৷ সেখানে নতুন ছবির জন্য প্রযোজকদের এগিয়ে আসার সম্ভাবনা কতটা, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে৷

নির্মল ধরের

লকডাউনের শেষে টলিউডের ব্যবসায় কতটা ক্ষতি হতে পারে, তা নিয়ে হিসেবনিকেশ চলছে৷ সঠিক অঙ্ক কত, তার আঁচ করা মুশকিল৷ কলকাতার ঐতিহ্যশালী প্রেক্ষাগৃহ ‘প্রিয়া’-র কর্ণধার অরিজিৎ দত্ত ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘শুধু মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি নয়, কত ছবি মাঝপথে থমকে৷ শ্যুটিং করা যাচ্ছে না৷ মাস্ক পরে মেক-আপ করা যাবে না৷ সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা যাবে না৷ ফলে সেই টাকা আটকে আছে৷ সবমিলিয়ে ৭০০ কোটি টাকার টার্নওভারে গরমিল হয়ে গেল৷’’ পরিচালক অভিজিৎ গুহ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমার ছবির পোস্ট প্রোডাকশন হয়ে গিয়েছে৷ কিন্তু, যাঁদের তা হয়নি, তাঁরা এখন শ্যুটিং করবেন কী করে৷ স্টুডিও ভাড়া দিতে হচ্ছে, হোর্ডিংয়ের টাকা মেটাতে হচ্ছে৷ সিরিয়ালের ক্ষেত্রেও সেই শ্যুটিংয়ের সমস্যা৷ এই পরিস্থিতিতে কাজ করাই যাবে না৷’’

লকডাউন উঠে গেলেই যে ছবি মুক্তি পাবে, এ কথাও বলা যাচ্ছে না৷ অরিজিতের বক্তব্য, ‘‘ব্যাপারটা সারা বিশ্বের সঙ্গে যুক্ত৷ বিদেশে হল না খুল ছবির ব্যবসা ভালো হবে না৷ এটা বুঝে ছবির মুক্তি পিছিয়েও দেওয়া হতে পারে৷ তাতে প্রযোজকের বিনিয়োগ আটকে থাকবে৷’’ 

এই পরিস্থিতিতে একের পর এক স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবি তৈরি করা হচ্ছে ঘরে বসে৷ অরিন্দম শীলের ‘ঝড় থেমে যাবে একদিন’, অপরাজিতা আঢ্যের ‘শামুক’, পায়েল সরকারের ‘একটি তারা’, উইন্ডোজ-এর ‘শিল্পী’ ইত্যাদি ছবি তৈরি হচ্ছে নামমাত্র খরচে৷ লাগছে না টেকনিশিয়ান, মেক-আপ আর্টিস্ট, চিত্রগ্রাহকদের৷ এতে কি কলাকুশলীদের একটা অংশের রুটি-রুজিতে টান পড়তে পারে? নির্মল ধরের বক্তব্য, ‘‘এই আশঙ্কার ভিত্তি নেই৷ ছবি নির্মাণ মানে বিরাট আয়োজন৷ কলাকুশলী ছাড়া ছবি তৈরি হয় না৷ লকডাউনের পর যদি শ্যুটিং করার মতো অবস্থা আসে, তাহলে ওঁদের লাগবেই৷'' এই কলাকুশলীদের অনেকেই আর্থিক সংকটে রয়েছেন৷ তাঁরা দৈনিক পারিশ্রমিকের ভিত্তিতে কাজ করেন৷ আর্টিস্ট ফোরাম-এর সম্পাদক, অভিনেতা অরিন্দম গঙ্গোপাধ্যায় ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এখনো পর্যন্ত আমরা আবেদনের ভিত্তিতে ৬১৪ জন কলাকুশলীকে মাথাপিছু ২ হাজার টাকা করে অর্থসাহায্য দিয়েছি৷ এই মাসেও সাহায্য তুলে দেওয়া হবে৷ বিভিন্ন প্রযোজক সংস্থা থেকেও ফেডারেশনের তহবিলে দান করা হয়েছে৷’’

ডয়চে ভেলের কলকাতা প্রতিনিধি পায়েল সামন্ত৷
পায়েল সামন্ত ডয়চে ভেলের কলকাতা প্রতিনিধি৷
স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য