দেশ ছেড়েছেন আসিয়া বিবির আইনজীবী
৩ নভেম্বর ২০১৮প্রায় এক দশক ধরে জেলে থাকা আসিয়া বিবি'র মামলাটি লড়ছিলেন সাইফ-উল-মুলুক নামের ঐ আইনজীবী৷ গেল সপ্তাহে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট আসিয়ার মৃত্যুদণ্ডাদেশ রহিত করে৷
এই রায়ের প্রতিবাদে কট্টর ইসলামপন্থিরা লাহোর ও ইসলামাবাদে মূল সড়কগুলো অবরোধ করে৷ তারা যেই বিচারকরা এই রায় দিয়েছেন এবং যাঁরা আসিয়াকে মুক্ত করতে সহযোগিতা করেছেন, প্রকাশ্যে তাঁুদের মৃত্যু কামনা করেন৷
আইনজীবীর দেশত্যাগ
‘‘এই অবস্থায় আমার পাকিস্তানে অবস্থান করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে,'' বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন সাইফ-উল-মুলুক৷ ৬২ বছর বয়সি এই আইনজীবী শনিবার ভোরে ইউরোপের উদ্দেশে রওনা হন৷
‘‘আমাকে বেঁচে থাকতে হবে৷ আসিয়া বিবি'র জন্য আইনি লড়াই চালিয়ে যেতে হবে,'' বলেন তিনি৷
পাকিস্তানে ব্লাসফেমি একটি ভয়ঙ্কর অপরাধ৷ সেখানে এমনকি অনেকের বিরুদ্ধে ইসলাম ও নবীকে অবমাননার অভিযোগ প্রমাণিত না হলেও উগ্রবাদীদের হাতে মৃত্যুর ভয়ে থাকতে হয়৷
সরকারের সঙ্গে চুক্তি
বিক্ষোভের মূল উদ্যোক্তা তেহরিক-ই-লাবায়েক (টিএলপি)-র প্রতিবাদের মুখে সরকার তাদের সঙ্গে একটি চুক্তিতে আসতে বাধ্য হয়৷ চুক্তির পর শুক্রবার রাতে বিক্ষোভ কর্মসূচি স্থগিত করে টিএলপি৷
এএফপি বলছে, পাঁচ দফা সেই চু্ক্তিতে বলা আছে যে, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিলে সরকার আপত্তি তুলবে না৷
মুলুক বলেন যে, রায়ের বিরুদ্ধে এমন প্রতিবাদ ও তার ফলে এই চুক্তি দুর্ভাগ্যজনক হলেও পাকিস্তানে তা অপ্রত্যাশিত নয়৷
‘‘সরকার যেভাবে তাদের বিক্ষোভে সাড়া দিলো, তা সবচেয়ে বেদনাদায়ক৷ দেশের সর্বোচ্চ আদালতের একটি রায়কেও বাস্তবায়ন করতে পারে না তারা,'' বলেন তিনি৷ যোগ করেন, ‘‘ন্যায়ের জন্য লড়াই চালিয়ে যেতে হবে৷''
সরকার ও প্রতিবাদকারীদের মধ্যে হওয়া চুক্তি অনুযায়ী, আইনি প্রক্রিয়া চলার সময় আসিয়া দেশ ছাড়তে পারবেন না৷
‘‘তাঁর জীবন তো একই রয়ে গেল৷ আগে কারাগারে ছিলেন, এখন নিরাপত্তার খাতিরে ঘরে বন্দি থাকবেন,'' মুলুক বলেন৷
আরেকবার আত্মসমর্পন
শনিবার পাকিস্তানের সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক ডন এই চুক্তির সমালোচনা করে একটি সম্পাদকীয় প্রকাশ করে৷ সেখানে এই চুক্তিকে ‘আরেকবার আত্মসমর্পন' বলে অভিহিত করা হয়৷
এর আগে, ২০১৫ সালে টিএলপি আরেকবার কয়েক সপ্তাহ ধরে ইসলামাবাদের রাস্তাঘাট বন্ধ করে রেখেছিল৷ তখন তারা ব্লাসফেমি আইনের আরো কঠোর প্রয়োগ দাবি করেছিল৷
তাদের সেই প্রতিবাদের কারণে তৎকালীন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী পদত্যাগ করতে বাধ্য হন৷
জেডএ/এসিবি (এএফপি)