হংকংয়ে গ্রেফতার মিডিয়া টাইকুন জিমি লাই
১০ আগস্ট ২০২০হংকং-এ চীন যে নতুন ও অতি বিতর্কিত নিরাপত্তা আইন চালু করেছে, সেখানে বলা হয়েছে, বিদেশি শক্তির সঙ্গে হাত মিলিয়ে ষড়যন্ত্র, বিক্ষোভ দেখিয়ে জাতীয় স্বার্থ বিরোধী কাজ করলেই গ্রেফতার করা হবে। তখনই অধিকাররক্ষা কর্মীরা জানিয়েছিলেন, চীনের নতুন আইন গণতন্ত্রবিরোধী এবং তা হংকং-এর লোকেদের প্রতিবাদের অধিকার কেড়ে নেবে। তাঁদের আশঙ্কা সত্যি হলো। এর আগে এই আইন প্রয়োগ করে বিক্ষোভকারী ছাত্রদের গ্রেফতার করা হয়েছে। এ বার করা হলো মিডিয়া টাইকুনকে।
জিমি লাই-কে সোমবার গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁর এক সহযোগী মার্ক সাইমন জানিয়েছেন, বিদেশী শক্তির সঙ্গে হাত মেলানোর অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ সূত্র উদ্ধৃত করে এএফপি জানিয়েছে, জিমি লাইয়ের বিরুদ্ধে দুইটি অভিযোগ। বিদেশি শক্তির সঙ্গে হাত মেলানো এবং জালিয়াতি করা।
জাতীয় নিরাপত্তা আইনে এখনো পর্যন্ত যাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তার মধ্যে লাই হলেন সব চেয়ে হাই প্রোফাইল। পুলিশ জানিয়েছে, জাতীয় নিরাপত্তা আইনে সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর বাইরে আর কোনো তথ্য পুলিশ দেয়নি।
১৯৮৯ সালে বেজিং-এ গণতন্ত্রপন্থীদের যে ভাবে চীন মোকাবিলা করেছিল, লাই তার খোলাখুলি নিন্দা করেছিলেন। তিনি বরাবর গণতন্ত্রপন্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। চীনের সরকারি মিডিয়ার অভিযোগ ছিল, লাই বিদেশি শক্তির সঙ্গে হাত মিলিয়ে চীনের সর্বনাশ করতে চাইছেন। গত বছর হংকং-এ সরকার বিরোধী প্রচুর বিক্ষোভ হয়েছে। সেই বিক্ষোভের সূত্র ধরে লাই সহ ১৪ জন গণতন্ত্রপন্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। মিডিয়া গ্রুপগুলি আগেই এই নতুন আইন নিয়ে সাবধানবাণী শুনিয়েছিল।
কয়েক মাস ধরে বিক্ষোভ চলতে থাকার পর গত জুনে চীন এই নতুন আইন চালু করে। এই আইনে রাষ্ট্রদ্রোহ, বিধ্বংসী ও সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ অথবা বিদেশি রাষ্ট্রের সঙ্গে হাত মিলিয়ে চলা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পুলিশের কাছে ঢালাও ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। কোনো ওয়ারেন্ট ছাড়া তারা তল্লাশি করতে পারবে, সামাজিক মাধ্যম থেকে যে কোনো মেসেজ ডিলিট করতে পারবে এবং গ্রেফতার করতে পারবে।
নতুন আইনে পরিষ্কারভাবে বলা হয়েছে, সরকারের বিরুদ্ধে কোনোরকম উস্কানি দেওয়া যাবে না। তারা যে হংকং মিডিয়াকে শাসন করতে চায়, এ নিয়ে চীনও কোনো লুকোছাপা করেনি। আর তারা স্থানীয় ও বিদেশি এই দুই ধরনের মিডিয়াকেই শাসন করতে চায়। হংকং-এর রিপোর্টারদের মধ্যমেই মূল চীনের খবর এতদিন বাইরের দুনিয়ায় এসেছে। কিন্তু এখন সাংবাদিকদের আশঙ্কা, তাঁদের এই ধরনের রিপোর্টিং বিপদ ডেকে আনবে। লাই-এর গ্রেফতার তারই ইঙ্গিত।
জিএইচ/এসজি(রয়টার্স, এএফপি, এপি)