দায়ী ‘সোলারিয়াম’
১৭ জুলাই ২০১৩জার্মানিতে ‘স্কিন ক্যানসার' বা ত্বকের ক্যানসারের টিউমারে আক্রান্ত হয় সবচেয়ে বেশি তরুণীরা৷ জার্মানির ক্যানসার সাহায্য সংস্থার প্রধান কর্মকর্তা গ্যার্ড নেটেকোভেন সম্প্রতি ‘নয়েন ওসনাব্রুকার সাইটুং'-কে বলেন, ত্বকের ক্যানসারের টিউমারের জন্য ব্যাপকভাবে দায়ী – অল্প বয়সি মেয়েদের ঘনঘন সোলারিয়াম, অর্থাৎ যেখানে ইলেকট্রিক রৌদ্রস্নানের ব্যবস্থা রয়েছে, সেখানে যাওয়া৷
ক্যানসারের ঝুঁকি, এই যেমন সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মির বিকিরণ অতিরিক্ত মাত্রায় শরীরের জন্য ক্ষতিকর, এ সম্পর্কে জনগণের কাছ থেকে আরো বেশি সচেতনতা প্রত্যাশা করেন গ্যার্ড নেটেকোভেন৷ কারণ গত কয়েক দশকে ত্বকের ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রায় চারগুণ বেড়ে গেছে, যা নিঃসন্দেহে আতঙ্কের ব্যাপার!
এ জন্য সোলারিয়াম পুরোপুরি ব্যবহার না করার পরামর্শ দিয়েছে জার্মানির ক্যানসার সাহায্য সংস্থা৷ কারণ, সোলারিয়ামে কৃত্রিমভাবে অতি বেগুনি রশ্মি তৈরি করা হয়, যা ত্বককে বাদামি করতে সাহায্য করে৷ সংস্থার প্রধান কর্মকর্তা গ্যার্ড নেটেকোভেন তাই এই অতি বেগুনি রশ্মির আইনগত নিয়মকানুনের সমালোচনা করেন৷ তিনি বলেন, সবচেয়ে বড় আতঙ্কের ব্যাপার হলো যে, সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মির বিকিরণের ভয়াবহতাকে মানুষ মোটেই গুরুত্ব দেয় না৷
তিনি আরো বলেন, দূর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, গরমকালে সমুদ্র সৈকত, সুইমিং পুল বা ফুটবল মাঠে ছোট-বড় সবাইকেই আগের মতো সূর্যস্নান করতে দেখা যায়৷ শিশু বা তরুণ-তরুণীদের জন্য এই সূর্যস্নান কতটা মারাত্বক – তা অনেকেই জানেন না৷ রোদে পুড়ে যাওয়া কালো দাগ পরবর্তীতে দুই, তিনগুণ বেড়ে মারাত্বক আকার ধারণ করতে পারে৷ যার ফলে তথাকথিত ‘ম্যালিগনেন মেলানোম' ক্যানসার হতে পারে৷ এমনকি, সূর্যস্নান করার জন্য সারা বছর ধরে ছুটিতে যাওয়ার যে প্রস্তুতি বা উত্তেজনা, সেই ভাবনাটাও অনেক সময় ত্বকের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার জন্য দায়ী হতে পারে৷
জার্মানির ক্যানসার সাহায্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর ২৩৪,০০০ জন মানুষ ত্বকের ক্যানসারে আক্রান্ত হয়৷ এবং এদের মধ্য মারা যায় অন্তত তিন হাজার মানুষ৷
২০১২ সাল থেকে জার্মানিতে সোলারিয়াম ব্যবহার করার জন্য বেশ কিছু নতুন নিয়ম করা হয়েছে৷ তবে যেগুলোর দিকে সবচেয়ে বেশি খেয়াল রাখতে হবে তা হচ্ছে, ইলেক্টিক যে যন্ত্রটি থেকে এভাবে কৃত্রিম উপায়ে রৌদ্রস্নান করা হয়, সেটা থেকে নির্ধারিত দূরত্ব বজায় রাখতে হবে৷ এছাড়া, এ সময় যন্ত্রটি আলোর নির্ধারিত মাত্রা যেন কখনই অতিক্রম না করে, সেদিকে নজর রাখতে হবে৷ আরো একটি নিয়ম হচ্ছে, সোলারিয়ামে এ বিষয়ে অভিজ্ঞ কর্মী থাকতে হবে, যিনি প্রয়োজনে এর সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে তথ্য দিতে পারবেন৷
প্রসঙ্গত, ২০০৯ সাল থেকে অপ্রাপ্তবয়স্ক, অর্থাৎ ১৮ বছর বয়সের নীচে ছেলে-মেয়েদের সোলারিয়াম ব্যবহার করা নিষিদ্ধ করা হয় জার্মানিতে৷