1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
বিচার ব্যবস্থাবাংলাদেশ

সুরক্ষা ও ন্যায় বিচারের নিশ্চয়তা কতটুকু?

সুলাইমান নিলয় উন্নয়ন পেশাজীবী ও ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক
২৫ অক্টোবর ২০২৪

প্রথম বাঙালি রাষ্ট্রপতি হিসেবে বাংলাদেশে আসেন ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জী। হিলারি ক্লিনটনও তখন বাংলাদেশে এসেছিলেন । সংবাদ মাধ্যমে এসব নিয়ে তুমুল আলোচনার মধ্যে আরেকটি বিষয়ও ছিল মিডিয়ার মনোযোগের কেন্দ্রে।

https://p.dw.com/p/4mDou
শিক্ষার্থীরা ঢাকায় হাই কোর্ট চত্বরে প্রতিবাদ করছেন৷ সেই দৃশ্য দেখা যাচ্ছে ছবিতে৷
শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশের ঢাকায় হাই কোর্ট চত্বরে প্রতিবাদ করছেন৷ছবি: Mortuza Rashed

এর সপ্তাহখানেক আগে ২৯শে এপ্রিল ছিল হরতাল। সেদিন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে গাড়ি পোড়ানো এবং সচিবালয়ে বিস্ফোরণের ঘটনায় দুটি মামলা হয়। ওই দুই মামলার আসামি মির্জা ফখরুলসহ বিএনপির শীর্ষ নেতাদের হন্যে হয়ে খুঁজছিল পুলিশ। তারা যাতে উচ্চ আদালতে পৌঁছে জামিন চাইতে না পারে, সেজন্য হাই কোর্টের বাইরে বিশেষ নজর রাখছিল আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

এর মাঝেই পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে উচ্চ আদালতে এসে অবস্থান নেয় বিএনপি নেতারা- এমন খবর চাউর হয় চারপাশে। কীভাবে বিএনপি নেতারা এসেছিলেন, সেটাতে নানা রঙচঙ লাগতে থাকে। জামিনের জন্য আগের রাত থেকে আদালত পাড়ায় অবস্থান নেয়ার খবর বেশ ব্যতিক্রম। বিরলও বটে। কারণ, এমনটা পূর্বে ঘটেছে বলে কোনো আইনজীবীই তখন নিশ্চিত করে আমাদেরকে জানাতে পারছিলেন না। সে কারণেই তৈরি হয় এর সংবাদ মূল্য।

আমরা খোঁজ খবর নিতে যাই। সেদিন বিএনপির কোন কোন নেতা এসেছিলেন, সেটা কিন্তু আমরা শেষ পর্যন্ত চোখে দেখে নিশ্চিত করতে পারিনি। তবে কিছু মানুষ যে আইনজীবীদের কক্ষে কক্ষে ছিলেন, সেটা ছিল নিশ্চিত। যা নানা লক্ষণেও প্রকাশিত হয়। সন্ধ্যার পর সাধারণত বৈকালিক চেম্বার করেন আইনজীবীরা। কিন্তু সেদিন সন্ধ্যার পর বিএনপির বড় বড় আইনজীবীরা আসেন উচ্চ আদালতে। ঢাকা কোর্টের একজন আইনজীবী অ্যারোসোল নিয়েও আসেন। রাতে ৪০-৪৫জনের খাবার রান্না হয়। মির্জা ফখরুল আদালতে নেই, এমনটা অনেকে নিশ্চিত করলেও এম কে আনোয়ারসহ অন্য অনেকের রাতে আইনজীবী কক্ষে অবস্থানের বিষয়টি কেউ অস্বীকার করেননি।

আরো অনেক আসামি বিএনপি নেতা তখনো আদালতের বাইরে। সুপ্রিম কোর্টে আসতে তাদেরকে যেন বাধা দেয়া না হয়, এমন আদেশ দেয় হাই কোর্ট। সেই আদেশ নিয়ে আদালতে প্রবেশ করেন মির্জা ফখরুল, ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা, স্থায়ী কমিটির আ স ম হান্নান শাহ ও খন্দকার মোশাররফ হোসেনরা। সেই বার হাই কোর্টের বিভক্ত আদেশেও এক সপ্তাহের জন্য মুক্ত পরিবেশে ঘোরা নিশ্চিত হয় ফখরুল-খোকাদের।

এই ঘটনার তিন বছর পর ২০১৫ সালের ৬ জানুয়ারি জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে গ্রেপ্তার হন মির্জা ফখরুল। গ্রেপ্তারের আগের রাতে তিনি প্রেসক্লাবেই অবস্থান করেছিলেন। সেবারও বিএনপির আইনজীবীরা মির্জা ফখরুলকে প্রেসক্লাব থেকে হাই কোর্টে আনতে আদালতের নির্দেশনা পেতে নানাভাবে চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সেটা তারা পাননি। অথচ জামিন কিন্তু ব্যক্তির অধিকার। যদি না এমন আশঙ্কা থাকে যে, তিনি বাইরে থাকলে বিচার প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে পারেন বা পালিয়ে যেতে পারেন।

আদালত রিপোর্টিং করতে গিয়ে আমরা দেখেছি, এক সময় গ্রেপ্তার-হয়রানি না করার নির্দেশনা চেয়ে অনেকে উচ্চ আদালতে আবেদন করতো। অনেক আবেদনে নির্দেশনা পাওয়াও যেতো। কিন্তু এক সময় এটা বন্ধ হয়ে যায়। এই বন্ধ হয়ে যাওয়া কি বিচারকদের বিচারিক মনের প্রতিফলন, নাকি অন্য কোনো দিকনির্দেশনায়, সেটা অবশ্য আমরা জানি না।

তবে এটা জানতে হবে। বিচারকরা যে সবকিছু থেকে স্বাধীন, সেটা আমাদের কাছে স্পষ্ট হতে হবে। বিচার বিভাগকে এমন হতে হবে যে, মানুষের মনে সন্দেহাতীতভাবে এই বিশ্বাস থাকে যে, তাদের উপর আইন বিভাগ ও শাসন বিভাগের হস্তক্ষেপ নেই। ব্যবসায়ী-কর্পোরেট-অলিগার্কদের প্রভাবও নেই।

দুনিয়াজুড়ে বিচারাঙ্গনেরবহুল আলোচিত একটি উক্তি হচ্ছে, ‘‘ন্যায় বিচার কেবল করলেই হবে না, বরং ন্যায়বিচার যে হয়েছে, সেটা স্পষ্টভাবে এবং সন্দেহাতীতভাবে দেখা যেতে হবে।'' গল্পটি বলেই ফেলি৷ শত বছর পূর্বে ক্ষতিপূরণ চেয়ে মোটর সাইকেল দুর্ঘটনার একটি মামলা হয় যুক্তরাজ্যের সাসেক্সে। সেই মামলায় বাদীপক্ষ যে চেম্বারকে তাদের পক্ষে নিয়োগ দেয়, সেই চেম্বারের একজন পার্টনার ছিলেন সেই আদালতের ডেপুটি ক্লার্ক। বিচারিক আদালতে শুনানির পর বিচারকরা রায়ের বিষয়ে নিজেদের মধ্যে আলাপ করতে খাস কামরায় যান, সেখানে তাদের সঙ্গে সেই ডেপুটি ক্লার্ক। যা হোক, বিচারকরা ফিরে এসে রায় ঘোষণা করেন। রায়ে বিবাদী পক্ষকে দোষী সাব্যস্ত করে জরিমানা করা হয়।

এর বিরুদ্ধে আপিল করেন বিবাদীপক্ষ। সেখানে তাদের একটি যুক্তি ছিল, বিচারকরা যখন সিদ্ধান্ত নিতে খাস কামরায় গিয়েছেন, তখন তাদের সাথে ডেপুটি ক্লার্কের সেখানে যাওয়া ঠিক হয়নি। উচ্চ আদালতের শুনানিতে বিচারিক আদালতের বিচারকদের প্রতি নোটিশ দেয়া হয়। এভিডেভিটে বিচারিক আদালতের বিচারকরা জানান, ডেপুটি ক্লার্ক তাদের সাথে থাকলেও তিনি আলোচনায় অংশ নেননি। রায়ে তাই তার প্রভাব নেই। বিচারিক আদালতের বিচারকদের এই এভিডেভিট গ্রহণ করেন উচ্চ আদালতের বিচারকরা। কিন্তু এরপরও তারা বিচারিক আদালতের দণ্ড খারিজ করে দেন। খারিজের রায়ে তাদের করা একটি একটি মন্তব্য গত এক শতাব্দী ধরে দেশে দেশে অসংখ্যবার বিচার অঙ্গনে উদ্বৃত হয়েছে।

কথাটি ছিল, ‘‘এটা কেবল মোটামুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। বরং মৌলিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যে, ন্যায় বিচার কেবল করলেই হবে না, বরং ন্যায়বিচার যে হয়েছে, সেটা স্পষ্টভাবে এবং সন্দেহাতীতভাবে দেখা যেতে হবে।' ("It is not merely of some importance but is of fundamental importance that justice should not only be done, but should manifestly and undoubtedly be seen to be done”.)

১৯২৩ সালের নভেম্বরে দেয়া এই রায়টি এসেছিল ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি লর্ড হেরাল্ডের নেতৃত্বাধীন একটি বেঞ্চ থেকে। মূল রায়টি লিখেছিলেনও তিনি, যাতে অন্য বিচারকরা তার সাথে একমত পোষণ করেছিলেন। শত বছর পর আমার জানতে ইচ্ছে করে, আমাদের বিচারকদের সাথে কি খাস কামরায় কেউ যেতে পারে? যায়? খাস কামরায় যাওয়ার পর কোনো বিচারককে কোনো প্রভাবশালী কি সরাসরি বা ফোনে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে? অন্তত সেই সুযোগ আছে কি-না?

তবে বাংলাদেশের বিচারাঙ্গনে আরো অনেক মৌলিক প্রশ্ন এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে। সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হচ্ছে, আমাদের বিচার বিভাগ কি আসলেই স্বাধীন? ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে হাই কোর্টের জ্যেষ্ঠতম বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন সুপ্রিম কোর্টে এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, "সচিবালয় না হলে আমাদের মনিটরিং, আমাদের কন্ট্রোলে যদি না আসে, জুডিশিয়াল পুলিশ বা অ‌্যাডমিনিস্ট্রেশন না আসে, তাহলে স্বাধীন হতে পারবো না।”

"অনেক সময় শোনা যায়, স্বাধীন হয়ে গেছি আমরা। এই দিকে সেক্রেটারিয়েট নাই। প্রধান বিচারপতি বারবার বলেন, আমাদেরকে দাও। মিনিস্ট্রি পাত্তাই দেয় না। মিনিস্ট্রি পাত্তা দিবে কেন? মিনিস্ট্রি হলো সরকারের। আমরা হলাম জুডিশিয়ারি, এই জুডিশিয়ারির কথা শুনবে কে?”

পরদিনই এটা নিয়ে কথা বলেন তৎকালীন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি জানান, এটা তার মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ার নয়।

তাহলে এটা কার এখতিয়ার। যার এখতিয়ার তার কাছে কি আইন মন্ত্রণালয় বিষয়টা কোনোদিন তুলেছে? দেশের বিচার বিভাগের স্বাধীনতার সাম্প্রতিক ইতিহাসে ফিরতে হলে ফিরতে হবে মাসদার হোসেন মামলার রায়ে, যা দেয়া হয় ১৯৯৯ সালের ২ ডিসেম্বর । এর আট বছর পর ২০০৭ সালের ১ নভেম্বর নির্বাহী বিভাগ থেকে আলাদা হয়ে বিচার বিভাগের কার্যক্রম শুরু হয়। বিচারপতি দস্তগীরের আক্ষেপ আমরা শুনেছিলাম এরও ১০ বছর পর। বিচার বিভাগ পৃথক হয়েছিল এখন থেকে ১৭ বছর আগে। এতদিনেও বিচার বিভাগীয় সচিবালয় হয়নি। সচিবালয় না হওয়ার দাবিটি অবশ্য পুরোপুরি সঠিক নয়। পুরাতন সড়ক ভবন সুপ্রিম কোর্টের অধীনে আসার পর সেখানে সচিবালয় উদ্বোধন করে একটি ফলকও লাগানো হয়েছিল। সেই ফলক একদিনে আছে কি-না, জানি না। তবে বিচার বিভাগের স্বাধীন সচিবালয় এখনো কার্যকারিতা পায়নি। অর্থাৎ এখনো দেখা যাচ্ছে না যে, বিচার বিভাগ স্বাধীন। কেউ যুক্তি দিতে পারেন, আদালতে ন্যায় বিচার হয়। আমি এটার বিরোধিতা করবো না। তবে হেরাল্ডের কথা অনুসারে কেবল বলবো, ন্যায় বিচার কেবল হলেই হবে না। ন্যায় বিচার যে হয়েছে, সেটা স্পষ্টভাবে এবং সন্দেহাতীতভাবে দেখা যেতে হবে।

আমাদের বিচারঙ্গনে আসামি, সাক্ষী, বাদী, আইনজীবী, বিচারকের নিরাপত্তা কি নিশ্চিতভাবে রয়েছে? জনপ্রিয় জনমত বা সরকারি মতের উর্ধ্বে উঠে কি বিচারকরা বিচার করতে পারেন? নিয়োগ কি স্বচ্ছভাবে হয়?

২০২৩ সালে ‘বিচার বিভাগ আসলে কতটা স্বাধীন'-শীর্ষক একটি কলাম লিখেছিলেন এখনকার আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। তিনি সেখানে বলেছিলেন, উচ্চ আদালতের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণের জন্য বিভিন্ন বিষয়ে সংস্কারের প্রস্তাব সরকারকে দেওয়া হয়েছিল (ইউএনডিপির পক্ষে এ বিষয়ে একটি বিস্তারিত গবেষণা আমি নিজেই করেছিলাম)। উচ্চ আদালত নিজেও বিভিন্ন রায়ে বিচারক নিয়োগে কিছু নির্দেশিকা দিয়েছেন। কিন্তু সে অনুযায়ী বাস্তবে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। নিম্ন আদালতের তুলনায় কিছু ক্ষেত্রে উচ্চ আদালতে সরকারের নিয়ন্ত্রণের সুযোগ রয়েছে আরও বেশি। হাইকোর্টে বিচারক পদে (বিশেষ করে উচ্চ আদালতের আইনজীবীদের মধ্য থেকে) নিয়োগ হয় সম্পূর্ণভাবে সরকারের মর্জিমতো।

আসিফ নজরুল যে স্বাধীনতার কথা বলেছেন, সেটি কি বিচার বিভাগে নিশ্চিত হয়েছে? তিনি বা তার মন্ত্রণালয় কি চাইলে বিচার বিভাগে এখন হস্তক্ষেপ করতে পারেন? আইনজীবীরা কি নির্ভয়ে আইনপেশা চর্চার সুযোগ পায়? মির্জা ফখরুল জামিন নিয়ে যতটা বিপদে ছিলেন, সেই বিপদে কি এখন অন্যরা রয়েছে? সব আসামিরা কি নির্ভরে ন্যায় বিচারই হবে বলে আশা করতে পারছে? কোনো নির্দোষ ব্যক্তি কি হয়রানির শিকার হয়ে যাচ্ছে নাতো?

অর্থ পাচারের একটি মামলায় তারেক রহমানকে খালাস দেয়া বিচারকের পরিণতি, সুখরঞ্জন বালীর অপহরণের অভিযোগ, গুমের শিকার হওয়ার পর বিএনপি নেতা সালাহ উদ্দিনের স্ত্রী হাসিনা আহমেদের রিট দিয়ে অনেকে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা পরিমাপ করেন। অনেকে আবার সাম্প্রতিক সময়ে আদালতে আসামিদের উপর হামলা, আইনজীবী নিয়োগে বাধা, আইনজীবীদের উপর হামলা বা উচ্চ আদালতের বিচারকদের পদত্যাগের ঘটনা দিয়ে স্বাধীনতা পরিমাপ করতে চান। এ সব বিষয়ে আমাদের বিচার বিভাগ কেন এমন উপসংহারে যেতে পারছে না, যেটা সর্বজনগ্রাহ্য হবে?

মানুষের জান-মালসহ সব অধিকারের ক্ষেত্রে সর্বশেষ ভরসা বিচার বিভাগ। অপরাধীর সাজা নিশ্চিত করার পাশাপাশি কোনো নিরাপরাধ মানুষ যাতে সাজা না পায়, সেটাও নিশ্চিত করা বিচার বিভাগের কাজ। এটা নিয়েও রয়েছে একটি গল্প। আমেরিকান বিচার ব্যবস্থার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তিগুলোর একটি ধরা হয়

ব্ল্যাকস্টোন ফর্মুলেশনকে। এই ব্ল্যাকস্টোন শব্দটি এসেছে অষ্টাদশ শতাব্দীর ব্রিটিশ আইন বিশেষজ্ঞ উইলিয়াম ব্ল্যাকস্টোনের নাম থেকে। তার একটি বিখ্যাত উক্তি হচ্ছে, একজন নির্দোষকে ভোগান্তিতে ফেলার চাইতে দশজন অপরাধীর ছাড়া পাওয়া ভালো। তবে এই তত্ত্ব অপরাধীকে দায়মুক্তি দেয়ার জন্য করা হয়নি। তবে একজন নির্দোষ যেন সাজা না পায়, সেই গুরুত্ব বোঝাতে এটা বলেছেন তিনি। আমাদের বিচার ব্যবস্থায় নির্দোষদের রক্ষাকবচ কি আমরা নিশ্চিত করতে পেরেছি?

বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের রায় হয়েছিল আওয়ামী লীগের আমলে। সেই আমলে বিচার বিভাগ পৃথক হয়নি। এরপর বিএনপি জামায়াতও ৫ বছর ক্ষমতায় ছিল। তারাও পৃথকীকরণের রায় বাস্তবায়ন করেনি। শেষ পর্যন্ত যতটুকু হয়েছে, সেটা হয়েছিল, ফখরুদ্দিনের অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে। এরপর দেড় দশক শাসন ক্ষমতায় ছিল আওয়ামী লীগ। তারা পৃথক সচিবালয়ের মাধ্যমে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেনি।

ক্ষমতায় থাকতে বিচার বিভাগকে স্বাধীন করার সুযোগ যারা পেয়েছিল, তারা সেটা করলে পরে ক্ষমতা ছাড়া হওয়ার পর তাদের নির্দোষদের রক্ষাকবচ হয়ে যেত বিচার বিভাগ। এখনকার ক্ষমতাসীনরা কি সেটা ভাববেন? এখনকার ক্ষমতাহীনরা সেই আত্মসমালোচনা করবেন?