1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সীমাবদ্ধতা নিয়েই চলছে বিকল্প উপায়ে পাঠদান

১ মে ২০২০

করোনার কারণে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকতে পারে৷ তাই ভার্চুয়াল মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পাঠদানের চেষ্টা চলছে৷ সংসদ টেলিভিশনের মাধ্যমে পাঠদান আগেই শুরু হয়েছে৷ এখন চেষ্টা চলছে অনলাইনে৷

https://p.dw.com/p/3bezW
ফাইল ছবি

ঢাকা ও ঢাকার বাইরে কমপক্ষে ৪০টি স্কুলে অনলাইন পাঠদান শুরু হয়েছে৷ শিক্ষার্থীদের কাছে এর রুটিনওনও পাঠানো হয়েছে৷ অনলাইনে দুইভাবে পাঠদান করা হচ্ছে৷ একটি হলো ভিডিও কনফারেন্স, আরেকটি ফেসবুক লাইভ৷  আধা ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টা পর্যন্ত চলে এই ক্লাস৷

তবে সব বিষয়ে ক্লাস নেয়া সম্ভব হচ্ছে না৷

চতুর্থ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা এই অনলাইন ক্লাসের সুযোগ পাচ্ছেন৷ চতুর্থ এবং পঞ্চম শ্রেণিতে সেই সব স্কুলই ক্লাসের ব্যবস্থা করছে, যাদের প্রথম শ্রেণি থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত আছে৷ প্রাইমারি স্কুলগুলো এখনো শুধু সংসদ টেলিভিশনের ওপরই নির্ভর করছে৷

মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে ফেসবুকের মাধ্যমে পাঠদান শুরু হয়েছে ১৭ এপ্রিল থেকে৷ শিক্ষকরা ফেসবুক লাইভে পাঠদান করেন৷ প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ ড. শাহান আরা বেগম জানান, ‘‘কবে স্কুল খুলতে পারবো তা তো অনিশ্চিত৷ প্রধানমন্ত্রী বলছেন সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকতে পারে৷ তাই আমরা চেষ্টা করছি ছাত্ররা যেন পিছিয়ে না যায়৷ আমরা সিলেবাস অনুযায়ী অনলাইনে পাঠ দানের ব্যবস্থা করেছি৷ শিক্ষকরাও বাসায় বসে রুটিন অনুযায়ী পাঠদান করছেন৷’’

ড. শাহান আরা বেগম

তিনি বলেন, ‘‘আমরা ভিডিও কনফারেন্সের চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু সেটা সম্ভব হচ্ছে না৷ কারণ, সবাই অ্যাপস ব্যবাহার করতে পারে না৷ ফেসবুকে প্রায় সবাই অভ্যস্ত৷ সেখানে শিক্ষার্থীরা প্রশ্নও করতে পারে৷ উত্তর দেয়া হয়৷ আমরা দেখেছি, ৯০ ভাগের মতো শিক্ষার্থী ফেসবুক ক্লাসে অংশ নিচ্ছে৷’’

উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজ ফেসবুক লাইভের পাশাপাশি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমেও পাঠদান শুরু করেছে৷ তারা তাদের ওয়েব সাইট ও ফেসবুক পেজে ক্লাস রুটিন ও সময় জানিয়ে দিচ্ছে৷ তবে প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ মো. আবুল হোসেন বলেন, ‘‘সবার ইন্টারনেট সুবিধা নেই৷ আবার থাকলেও ধীর গতির৷ ফলে ৫০ ভাগের বেশি শিক্ষার্থীকে আমরা অনলাইনে পাচ্ছি না৷’’

তিনি জানান, ‘‘শিক্ষকরা বাসা থেকে অথবা তার সুবিধামতো জায়গা থেকে অনলাইনে যুক্ত হচ্ছেন৷''

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ গোলাম ফারুক ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এই জরুরি পরিস্থিতিতে আমরা টেলিভিশনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পাঠদানের ব্যবস্থা করেছি৷ আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে অনলাইন এবং মোবাইল ফোন ব্যবহার করে পাঠদানের জন্য বলেছি৷ আমরা চেষ্টা করছি যাতে এই সময়ে শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে না পড়ে৷’’

সংসদ টেলিভিশনে প্রাক-প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত পাঠদান করা হচ্ছে৷ তবে এর মান নিয়ে এরই মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে৷ শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদ বলেন, ‘‘উদ্যোগটি ভালো৷ কিন্তু আমাদের কোয়ালিটি পাঠদানের দিকে নজর রাখতে হবে৷ মানসম্পন্ন পাঠ তৈরি করতে হবে৷ আমাদের সমস্যা হলো, আগে আমাদের প্রস্তুতি থাকে না৷ আমরা হঠাৎ করেই কাজ শুরু করি৷ টেলিভিশনের পাঠের মান নিয়ে আমার কাছে অনেকেই প্রশ্ন করেছেন৷’’ 

ড. সৈয়দ গোলাম ফারুক

বাংলাদেশে এখ মোট চালু টেলিভিশনের সংখ্যা জানা না থাকলেও ক্যাবল নেটওয়ার্কে যুক্ত টেলিভিশন সেটের সংখ্যা চার কোটির মতো বলে ক্যাবল নেটওয়ার্ক ওনার্স অ্যাসোসিয়েন সূত্রে জানা যায়৷ বিটিআরসি'র তথ্য মতে, দেশে মোট মোবাইল সংযোগ ১৬ কোটি ৬১ লাখ৷ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ১০ কোটি ৷ এর মধ্যে মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ৯ কোটি ৪২ লাখ আর ফেসবুক ব্যবহারকারী সাড়ে তিন কোটির মতো৷

অধ্যাপক কায়কোবাদ বলেন, ‘‘সবার বাড়িতে টেলিভিশন সেট নাই৷ তাই মোবাইল ফোনই এখন ব্যবহার করা উচিত৷ এটা দিয়ে কিভাবে পাঠদান করা যায় তা ভেবে দেখা উচিত৷ অনলাইন ছাড়াও মোবাইল এসএমএসের মাধ্যমে কী করা যায় সেটা দেখা উচিত৷ যারা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে আছে, তারা হয়ত কোনো না কোনোভাবে অনলাইনে যুক্ত হতে পারবে৷ কিন্তু প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের জন্য আমাদের ভাবতে হবে৷’’

বাংলাদেশে ই-লার্নিং নিয়ে ২০১১ সাল থেকে কাজ হচ্ছে৷ কিন্তু তা বেশিদূর এগোয়নি৷ এক হাজার ৫০০ মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমের মাত্র ১২ ভাগ এ পর্যন্ত ব্যবহার করা সম্ভব হয়েছে৷ অনলাইনে ডিজিটাল পাঠ্যবইও তেমন এগোয়নি৷ অধ্যাপক কায়কোবাদ বলেন, ‘‘আসলে যদি এটা বাস্তবায়ন সম্ভব হতো তাহলে ক্লাসরুম বা বাড়িতে বসে শিক্ষার্থীরা দেশের সেরা শিক্ষকদের পাঠ পেতে পারতো৷ তবে এই পরিস্থিতিতে যদি উন্নয়নহ ভবিষ্যতে অনেক কাজে দেবে৷''

ড. সৈয়দ গোলাম ফারুক  বলেন, ‘‘আমাদের বড় সমস্যা ইন্টারনেটের ধীর গতি৷তাছাড়া সবার হাতে এই সুবিধাও নেই৷ এর সমাধান করা গেলে পুরো শিক্ষা পদ্ধতিতেই আমূল পরিবর্তন আসবে৷ আমরা এখন তাই টেলিভিশন মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পাঠদানে জোর দিচ্ছি৷কমিউনিটি রেডিওকেও কাজে লাগাবো৷’’

এদিকে দেশের পাবলিক ওশ্ব প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অনলাইনে ভর্তি ও পাঠদানসহ সব ধরনের শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে বলেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়৷ এরই মধ্যে সাতটি পাবলিক এবং ৬৩টি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইন কার্যক্রম শুরু করেছে৷ বাংলাদেশ প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত মোট শিক্ষার্থী পাঁচ কোটির বেশি৷ 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান