বিক্ষুব্ধ সিরিয়া
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক চলছে ব্রাসেলসে৷ সেখানে হাজির হয়ে ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইলিয়াম হেগ, সিরিয়ার উপর জারিকৃত অস্ত্র নিষেধাজ্ঞায় পরিবর্তন আনার দাবি জানালেন৷ যাতে করে সেদেশের সরকারের বিরোধী পক্ষ সিরিয়ান ন্যাশনাল কাউন্সিলকে আরো সহায়তা প্রদান করা যায়৷
হেগ বলেন, ‘‘ আমরা তাদেরকে শক্তিশালী আর্থিক এবং কূটনৈতিক সমর্থন দিচ্ছি৷ জনগণের জীবন বাঁচাতে আমরা তাদেরকে বিভিন্ন উপকরণও প্রদান করছি৷ আমি মনে করি, এই সহায়তার মাত্রা আরো বাড়ানো যেতে পারে৷''
কিন্তু হেগের এই প্রস্তাবে সমর্থন খুব কমই মিলেছে৷ কার্যত এই ইস্যুতে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছেন ইইউ'র পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা৷ অস্ট্রিয়ার মিশায়েল স্পিনডেলেগার তাঁর সাইপ্রাস, সুইডেন এবং স্পেনের সহকর্মীদের সঙ্গে একই সুরে বলেন, ‘‘আমি নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছি না৷ আমি মনে করি, সিরিয়ায় আরো অস্ত্র পাঠানো অর্থহীন৷''
এখানে বলা প্রয়োজন, সিরিয়ার উপর ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিস্তৃত নিষেধাজ্ঞা রয়েছে৷ অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা ছাড়াও সেদেশের প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের ঘনিষ্ঠজনদের এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে৷ এমনকি তেল বিক্রি, বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞাও রয়েছে সিরিয়ার শাসকগোষ্ঠীর উপর৷ তবে এই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ চলতি মাসের শেষ অবধি৷
ব্রিটেন এবং ফ্রান্স চাচ্ছিল, সিরিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে সেখানে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার বিষয়টিতে পরিবর্তন আনা হোক৷ এতে করে সিরিয়া সরকারের বিরোধী পক্ষকে অস্ত্র সহায়তা প্রদানের পথ সুগম হবে৷
ব্রাসেলসের বৈঠকে অবশ্য ফ্রান্সকে বেশ শান্ত মনে হয়েছে৷ ফলে ব্রিটেন কার্যত বিদ্রোহীদের অস্ত্র প্রদান ইস্যুতে একা হয়ে পড়েছে৷ এমনকি ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক প্রধান ক্যাথরিন অ্যাশটনও সিরিয়ার বিদ্রোহীদের অস্ত্র সহায়তা প্রদানের বিপক্ষে৷ এসংক্রান্ত এক গোপন নথি, যা এএফপির কাছে রয়েছে, তাতে অ্যাশটন মন্তব্য করেছেন, ‘‘বিদ্রোহীদের অস্ত্র প্রদান করলে যুদ্ধক্ষেত্রে হয়তো সমতা আসবে৷ কিন্তু এতে করে সামগ্রিকভাবে চলমান সংঘাতকে আরো সামরিক করে তোলা হবে৷'' তাছাড়া আসাদ পরবর্তী সময়ে এসব অস্ত্রের ভবিষ্যত নিয়েও সন্দিহান অ্যাশটন৷
উল্লেখ্য, সিরিয়ায় ২০১১ সালের মার্চ মাস থেকে চলছে সরকারবিরোধী আন্দোলন৷ জাতিসংঘের হিসেব অনুযায়ী, সেই আন্দোলন শুরুর পর এখন অবধি প্রাণ হারিয়েছে প্রায় সত্তর হাজার মানুষ৷
এআই / জেডএইচ (এপি, এএফপি)