সহায়তার উদ্যোগ
২৫ এপ্রিল ২০১২জাতিসংঘের পরিকল্পনা ছিল আড়াই লাখ মানুষকে সহায়তা দেওয়ার৷ কিন্তু সিরিয়ার পরিস্থিতি বিবেচনায় এনে সংখ্যাটি বাড়িয়েছে আন্তর্জাতিক এই সংগঠন৷ পাঁচ লাখ মানুষকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হবে এবার৷ জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, খাদ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে বাধার সম্মুখীন হচ্ছে সংস্থাটি৷ তবুও সিরিয়া আরব রেড ক্রিসেন্ট এর অনুরোধে সহায়তার পরিমাণ বাড়ানো হচ্ছে এবং সিরিয়ায় প্রয়োজনীয় অনুমতি পেলে এই কর্মসূচির পরিধি বাড়ানো হবে৷
বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির নির্বাহী পরিচালক এরথারিন কাজিন বিবৃতিতে বলেছেন, যেহেতু সহিংসতা অব্যাহত রয়েছে, এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর বাসিন্দারা তাদের পরিবারের জন্য খাবার সংগ্রহ করতে কঠোর পরিশ্রম করছে৷ বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি সিরিয়ার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে খাদ্য স্বল্পতার আশঙ্কার বিষয়ে উদ্বিগ্ন৷
বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির মুখপাত্র এলিজাবেথ বায়ার এক সংবাদ সম্মেলনে এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘এপ্রিলের শেষ নাগাদ আমরা আড়াই লাখ মানুষের কাছে খাদ্য সহায়তা পৌঁছাতে চাই৷ এবং এরপর আমরা আগামী কয়েক সপ্তাহে পাঁচ লাখ মানুষের কাছে সহায়তা পৌঁছানোর লক্ষ্যে কাজ করব৷''
সিরিয়ার মানুষের কাছে খাদ্য সহায়তা পৌঁছাতে গিয়ে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে বিশ্ব খাদ্য সংস্থা, সংবাদ সম্মেলনে একথা স্বীকার করলেন এলিজাবেথ৷ একই সঙ্গে তিনি বলেন, যে পাঁচ লাখ মানুষের কাছে খাদ্য সহায়তা পৌঁছানোর চেষ্টা করা হচ্ছে, তারা সিরিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলের বাসিন্দা৷ বলাবাহুল্য সিরিয়ার মোট জনসংখ্যা দুই কোটি ত্রিশ লাখের কিছু কম৷
এলিজাবেথ আরও বলেন, সিরিয়ার আরো ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় খাদ্য সরবরাহ করতে অনুমতি প্রয়োজন এবং সেই অনুমতির জন্য প্রায় সব আন্তর্জাতিক সংস্থাই অপেক্ষা করছে৷ বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির ফ্যামিলি পার্সেলে মূলত চাল, ডাল, চিনি, রান্নার তেল, পেস্তা এবং প্যাকেটজাত মাংস রয়েছে৷
বলাবাহুল্য, জাতিসংঘের সহায়তা সংস্থাগুলো বাধার কারণে সিরিয়ার অনেক এলাকায় সহায়তা পৌঁছাতে পারছে না৷ তবে গতমাসে সিরিয়ার কর্তৃপক্ষকে সঙ্গে নিয়ে এক যৌথ মুল্যায়নে দেখা গেছে, সেদেশের কমপক্ষে দশ লাখ মানুষের মানবিক সহায়তা প্রয়োজন৷
বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি গত এক মাস ধরে সিরিয়ার হোমস, হামা, ইডলিব এবং দামেস্কের প্রত্যন্ত অঞ্চলসহ কয়েক এলাকায় এক লাখ মানুষকে মানবিক সহায়তা প্রদান করেছে৷ এলিজাবেথের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির খাদ্য সহায়তা সড়ক পথে তুরস্ক থেকে কিংবা সমুদ্র পথে সিরিয়ার বন্দরনগরী তার্তুস হয়ে দামেস্কে পৌঁছায়৷ এরপর সেখান থেকে রেড ক্রিসেন্টের মাধ্যমে সিরিয়ার বিভিন্ন এলাকায় সহায়তা পৌঁছাচ্ছে৷ এভাবে সিরিয়ার ১৪টি প্রদেশের মধ্যে ১১টিতে সহায়তা পাঠানো সম্ভব৷
এদিকে, যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও সিরিয়ায় সহিংসতা অব্যাহত রয়েছে৷ মঙ্গলবার রাজধানী দামেস্কে একটি গাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটেছে৷ পৃথক আরেকটি ঘটনায় রাজধানীতে মারা গেছে কমপক্ষে তিন সেনা কর্মকর্তা৷ জাতিসংঘ ও আরব লিগের বিশেষ দূত কোফি আনানের মধ্যস্থতায় গত ১২ই এপ্রিল থেকে যুদ্ধবিরতি চলছে সিরিয়ায়৷
প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন