সাইকেলের শহর হতে চায় বন
২৫ মার্চ ২০১৭পরিবেশবান্ধব যান হিসেবে সাইকেলের তুলনা নেই৷ জার্মানির কয়েকটি শহর তাই বাসিন্দাদের সাইকেল চালাতে উৎসাহ দিতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে, এসেছে সাফল্যও৷ বন শহরও চায় নিজেদের ২০২০ সাল নাগাদ নর্থ রাইন ওয়েস্টফেলিয়া রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে সাইকেলবান্ধব মহানগরীতে রূপ দিতে৷ সেটা করতে পারলে রাস্তাঘাটে গাড়ি চলাচলের ফলে সৃষ্ট কার্বন নির্গমনের হার কমানো যাবে অন্তত ২০ শতাংশ৷
কিন্তু কাজটা এত সহজ নয়৷ জার্মান সাইক্লিং ক্লাবের (এডিএফসি) ট্রাফিক প্ল্যানার ওয়ার্নার ব্যুচার বনের সাইকেল নগরী হওয়ার পথে সবচেয়ে বড় বাধার কথাটা সহজেই ধরিয়ে দিয়েছেন৷ তিনি মনে করেন, ‘‘বনে ট্রাফিক সমস্যা রয়েছে৷ আর সেটা হচ্ছে গাড়ি অনেক, কিন্তু সে তুলনায় রাস্তাঘাট কম৷''
বনের অর্থনীতি আসলে অফিসে কাজ করা কর্মচারী নির্ভর, শিল্পকারখানার শ্রমিক নির্ভর নয়৷ ফলে গাড়ি চালিয়ে অফিসে যাওয়া মানুষের সংখ্যা শহরে অনেক বেশি, যার প্রভাব পড়ছে রাস্তাঘাটের উপর৷ ব্যুচার বলেন, ‘‘সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে এই মানুষদের গাড়ির বদলে সাইকেল বা গণপরিবহণ ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করা৷''
তিনি মনে করেন না যে, নতুন রাস্তাঘাট নির্মাণ করা হলে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবে৷ বরং তাঁর মতে, রাস্তাঘাটে গাড়ির সংখ্যা কমানোর উপায় বের করতে হবে৷ তবে কাজটা যে কঠিন, তাও স্বীকার করেছেন ব্যুচার৷ ‘‘জার্মানিতে গাড়ির লবি এখনো অনেক শক্তিশালী'', বলেন তিনি৷
জার্মানিতে জ্বালানি উৎপাদনের পর কার্বন নির্গমনের দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎস হচ্ছে ট্রান্সপোর্ট৷ বন শহর সেই ২০১০ সালেই সাইকেলের ব্যবহার বৃদ্ধির পরিকল্পনার কথা ঘোষণা দিয়েছিল, যা ২০২০ সাল নাগাদ বাস্তবায়ন হওয়ার কথা৷ এ জন্য শহরের কেন্দ্রস্থলে গাড়ির বদলে সাইকেলের ব্যবহার বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে৷ সাইকেল চালানো সহজ করতে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে সাইকেলের লেনের সংখ্যা বাড়ানোর বিষয়টি৷ এছাড়া সাইকেল যাতে সহজে রাখা যায়, সেজন্য আরো নিরাপদ পার্কিং স্পট তৈরির পরিকল্পনাও রয়েছে নগর কর্তৃপক্ষের৷
কিন্তু পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ ততটা এগোয়নি৷ ২০২০ সাল নাগাদ বন শহরে স্পষ্ট সাইনসহ সাইকেল পাথের সংখ্যা ১৭৫টি করার কথা থাকলেও, এখন পর্যন্ত হয়েছে মাত্র ২৫টি৷ আর অল্প কিছু রাস্তায় পাশাপাশি সাইকেল চালানোর ব্যবস্থা রয়েছে৷ নগর কর্তৃপক্ষ অবশ্য আশাবাদী যে, ‘‘সাইকেলের রাজধানী'' হওয়ার পথে অনেকটাই এগিয়েছে তারা৷ এমনকি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এ শেষ হবে বলেও আশা করছেন তাঁরা৷
স্টুমাই জর্জ/এআই
ঢাকা শহরকেও কি এমন পরিবেশবান্ধব সাইকেলের শহর হিসেবে ভাবতে পারেন? লিখুন নীচের ঘরে৷