সংকট নিরসনে নতুন রাষ্ট্রপতি
২১ মার্চ ২০১৩রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের আয়োজন করবে নির্বাচন কমিশন৷ তারা সংবিধানের ১২৩(২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবেন৷ তফসিল অনুযায়ী রাজনৈতিক দলগুলো প্রার্থী দেবে৷ চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হওয়ার পর নির্ধারিত দিনে সংসদেই নির্বাচন পরিচালনা করবে নির্বাচন কমিশন৷ তাতে ভোট দেবেন ৩৫০ জন সংসদ সদস্য৷ আগামী ১৯শে জুনের মধ্যে এই নির্বাচন করতে হবে৷ সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহীন মালিক ডয়চে ভেলেকে বলেন, যেহেতু আওয়ামী লীগ তথা মহাজোট সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ, তাই তাদের প্রার্থীই ২০তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হবেন তা ধরেই নেয়া যায়৷ এই রাষ্ট্রপতির মেয়াদ হবে শপথ গ্রহণের দিন থেকে ৫ বছর৷
এদিকে সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমানের মৃত্যুতে জাতীয় সংসদের স্পিকার অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করছেন৷ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী হিসেবে স্পিকার আব্দুল হামিদ এবং সংসদ উপনেতা ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর কথা বিবেচনা করা হচ্ছে৷ তারা চাচ্ছে, সামনের জাতীয় নির্বাচনকে মাথায় রেখে আওয়ামী লীগের প্রতি অনুগত এমন কোন নেতাকে রাষ্ট্রপতির পদে বসাতে৷ তাই সাজেদা চৌধুরীর পাল্লাই ভারী বলে জানা গেছে৷
তবে সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক মনে করেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনকে রাজনৈতিক সংকট নিরসনে একটি সুযোগ হিসেবে কাজে লাগান যেতে পারে৷ নতুন রাষ্ট্রপতি ৫ বছরের জন্য দায়িত্ব পালন করবেন৷ তাই যদি সব দলের কাছে গ্রহণযোগ্য একজন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করা যায়, তাহলে বর্তমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে তিনি হয়তো একটি বড় ভূমিকা রাখতে পারবেন৷ বর্তমান সংবিধানে নির্বাচনের সময় রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা একই থাকে৷ কিন্তু তাঁর একটি নৈতিক ক্ষমতা আছে৷ সেই ক্ষমতা আর গ্রহণযোগ্যতার জোরে হয়তো নিরপেক্ষ নির্বাচনের বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারবেন তিনি৷ দুই দলকেই তাদের অনড় অবস্থান থেকে যৌক্তিক অবস্থানে নিয়ে আসতে পারবেন৷
তবে সবকিছুই নির্ভর করছে ক্ষমতাসীন সরকার কী চায় তার ওপর৷ শাহদীন মালিক বলেন, যদি আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না যায়, তাহলেও তাদের মনোনীত রাষ্ট্রপতি ক্ষমতায় থাকবেন৷ কারণ একমাত্র অভিশংসন ছাড়া রাষ্ট্রপতিকে তার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে সরানোর কোন সুযোগ নেই৷ আর অভিশংসন খুব সহজ নয় বলে জানান শাহদীন মালিক৷ মেয়াদ শেষে পরবর্তী রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত তিনি দায়িত্ব পালন করে যাবেন৷ তাই কোন বিব্রতকর অবস্থা যাতে সৃষ্টি না হয়, সেদিকেও আওয়ামী লীগের খেয়াল রাখা উচিত বলে তিনি মনে করেন৷
তবে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে কোন দলই এখনো প্রকাশ্যে কোন কথা বলা শুরু করেনি৷ রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের মৃত্যুতে বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে ৩ দিনের জাতীয় শোক৷ তাঁর মরদেহ বৃহস্পতিবার ঢাকায় আনার পর বঙ্গভবনে গার্ড অফ অনার জানানো হয়েছে৷ প্রধানমন্ত্রী এবং বিরোধী দলীয় নেত্রী শ্রদ্ধা জানিয়েছেন৷ রাষ্ট্রপতি বুধবার বিকেলে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান৷