শোকাচ্ছন্ন নরওয়ে, সন্ত্রাসের শিকড়ের খোঁজে পুলিশ
২৪ জুলাই ২০১১রাজধানী অসলো এবং এর পার্শ্ববর্তী দ্বীপ উটোয়ায় অল্প সময়ের ব্যবধানে ঝরে গেছে এক ঝাঁক তরুণ প্রতিভা৷ প্রথমে রাজধানীর সরকারি ভবনে এবং এরপরেই উটোয়া দ্বীপে যুব শিবিরে সমবেত তরুণদের উপর হামলায় একদিনেই হারিয়ে গেছে নরওয়ের ৯৩টি তাজা প্রাণ৷ তাই শোকের ছায়া নেমে এসেছে সাধারণ মানুষের কুটির থেকে রাজ প্রাসাদ পর্যন্ত৷ প্রাসাদ থেকে বেরিয়ে এসেছেন রাজা পঞ্চম হারাল্ড, রানী সোনিয়াসহ রাজ পরিবারের সদস্যরা৷ গির্জায় মিলিত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ইয়েন্স স্টল্টেনব্যার্গ থেকে শুরু করে দেশের শীর্ষ নাগরিকরা৷ পথে নেমেছেন স্বজন হারানো মানুষ৷ সাথে এনেছেন বাগানের সেরা ফুল এবং একঝাঁক বাতি হারানো কুঁড়িগুলোর প্রতি শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করতে৷ জোড়া হামলার শিকার স্বজনদের শোক আর আশায় বুক বেঁধে অশ্রুসজল নয়নে বিদায় দিলেন দেশবাসী৷
প্রধানমন্ত্রী স্টল্টেন্যবার্গ বিশেষ প্রার্থনায় এসে বললেন, ‘‘প্রতিটি মৃত্যুই ট্রাজেডি তথা বিয়োগান্তক আর এতোগুলো প্রাণের অকালে ঝরে পড়া একটি জাতীয় ট্রাজেডি৷'' জোড়া হামলায় হারিয়ে যাওয়া তরুণদের মধ্য থেকে তাঁর বিশেষভাবে পরিচিত দুই তরুণের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর আবেগময় মন্তব্য, ‘‘এটা কোনভাবেই বোধগম্য নয় যে, তারা চিরদিনের জন্য হারিয়ে গেছে৷'' তিনি আরো বলেন, ‘‘আমরা একটি ছোট্ট দেশে বাস করি৷ কিন্তু আমরা এই দেশকে নিয়ে গর্বিত৷ আমরা এর মূল্যবোধ থেকে কখনই বিচ্যুত হবো না৷'' এই সহিংস হামলায় হতাহত ব্যক্তিদের সবার নাম ও ছবি শীঘ্রই প্রকাশ করা হবে বলেও ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী স্টল্টেনব্যার্গ৷
এদিকে, প্রধানমন্ত্রীর ভাষায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে নির্মম এই সহিংস ঘটনার সাথে জড়িতদের খোঁজ পেতে অসলোয় বিশেষ চিরুনি অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ৷ অসলো পুলিশের মুখপাত্র আন্ডের্স ফ্রিডেনব্যার্গ জানিয়েছেন, রাজধানীর পূর্বাঞ্চলে বিশেষ অভিযান শুরু করেছে তারা৷ এটি মূলত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের তদন্তের স্বার্থে পরিচালিত বলে উল্লেখ করেন তিনি৷ বার্তা সংস্থা এনটিবি জানাচ্ছে, রবিবার অসলোর কেন্দ্রস্থল থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দূরের স্লেটেলোয়েকা অঞ্চলে পুলিশ অভিযান চালিয়েছে৷ এই অভিযানের সময় বেশ কিছু সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে বলে খবর দিচ্ছে টিভিটু এবং ভ্যার্ডেন্স গ্যাঙ্গ পত্রিকা৷ তবে পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, এই অভিযানে আটক সন্দেহভাজন কয়েকজনকে আবারও ছেড়ে দেওয়া হয়েছে৷
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম