শিশুদের প্রতিহিংসার বলি বানাবেন না
১৫ অক্টোবর ২০১৯এই হত্যার সঙ্গে তার পরিবারের দুই তিন জনের সম্পৃক্ততা পাওয়ার কথা জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী৷
পুলিশ বলছে, প্রতিহিংসাবশত, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে বা মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে এই হত্যাকাণ্ড হতে পারে৷ কারণ তুহিনের বাবাসহ পরিবারের কয়েকজন সদস্য বিভিন্ন মামলার আসামি৷ এলাকায় তাদের একাধিক প্রতিপক্ষ রয়েছে, এক পক্ষ আরেক পক্ষকে ঘায়েল করতে চায়৷
সোমবার নারায়ণগঞ্জে চারতলার ছাদ থেকে ফেলে দেড় বছরের শিশু আশফাক জামান জাহিনকে হত্যা করেছে তার মা রোকসানা৷ গত ২৯ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে মোরসালিন নামের ১০ বছরের সন্তানকে গলাকেটে হত্যা করেন তার বাবা মোসাঈদ৷ গত বছরের ৫ ডিসেম্বর ঢাকার বাংলা মোটরে তিন বছরের শিশু সাফায়েতকে খুন করেন তার মাদকাসক্ত বাবা নুরুজ্জামান কাজল৷ ২০১৫ সালে সিলেটের কুমারগাঁওয়ে চোর অপবাদে সামিউল আলম রাজন নামে ১৩ বছর বয়সের এক শিশুকে প্রায় আধাঘণ্টা ধরে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়৷
বাংলাদেশে বাবার হাতে সন্তান, সন্তানের হাতে বাবা-মাসহ আপনজনদের হাতে খুনের ঘটনা ঘটছে৷ কোনো কোনো ক্ষেত্রে নির্মম ভীষৎসতা, অমানবিক পৈচাশিকতা, বর্বর আর অসভ্যদের মত খুন করা হচ্ছে শিশুদের৷
যে শিশুটির আনন্দ নিয়ে, হেসেখেলে বেড়ে ওঠার কথা সে বড়দের দ্বন্দ্ব-সংঘাতের কী বুঝে? বড়রা, হ্যাঁ আপনারা নিজেদের ঝামেলাগুলো মিটিয়ে ফেললেই পারেন৷ বিচার-শালিসে বসে কাজ না হলে পুলিশ ডাকুন, মামলা করুন, আদালতে যান৷ যে কোনো ঝামেলা মিটিয়ে ফেলার বহু রাস্তাই তো খোলা আছে৷ তবে কেন শিশুদেরর টার্গেট করেছন? ওদের কী দোষ? ওরা তো আপনাদের এই রাজনীতি বুঝে না, ওদের তো এসব লাভ-লোকসান বোঝারও কথা না৷
শুধু আইন, আদালত আর নিয়মকানুনের ঘেরাটেপে বন্দী থেকে নয়, সব কিছুর ঊর্ধ্বে উঠে যত শিশু হত্যা হয়েছে সেসবের দ্র্রুত বিচার করতে হবে৷ নজির সৃষ্টি করতে হবে এমন জঘন্য অন্যায় করলে কম সময়ে সর্বোচ্চ সাজা এবং তার বাস্তবায়ন হয়৷ যত টাকাওয়ালা, যত প্রভাবশালী, যত ক্ষমতাধরই হোক না কেন শিশুদের খুন করে, শিশুদের নির্যাতন করে কেউ পার না পায়- সেই নজির সৃষ্টি হলে শিশুদের গায়ে হাত দেয়ার আগে মানুষরূপী প্রাণিগুলো হয়ত আরেকবার ভাববে৷
সবার প্রতি অনুরোধ, দয়া করে শিশুদের প্রতিহিংসার বলিতে পরিণত করবেন না৷ ওদের সুস্থ-স্বাভাবিক বিকাশে সহায়তা করুন৷ বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ কাণ্ডারীদের সুষ্ঠুভাবে বেড়ে উঠতে দিন, সবাই মিলে সেই পরিবেশ সৃষ্টি করুন৷