1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শতকের শেষে গরম যাবে চরমে

৩ আগস্ট ২০১৭

দক্ষিণ এশিয়ায় দেশগুলোতে গ্রীষ্মে গরমের মাত্রা বেড়েই চলেছে৷ সাম্প্রতিক এক গবেষণা বলছে বৈশ্বিক উষ্ণতা নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে ২১০০ সালের শেষ নাগাদ আর্দ্র গরম এতটাই চরমে উঠবে যে মানুষের বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে৷

https://p.dw.com/p/2hdkm
ছবি: Reuters/S. Pamungkas

দক্ষিণ এশিয়ায় বিশ্বের এক পঞ্চমাংশ মানুষের বাস৷ জার্নাল সায়েন্স অ্যাডভান্স তাদের নতুন প্রতিবেদনে ভয়াবহ দাবদাহ সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়ে বলছে, গ্রীষ্মের তাপপ্রবাহ যদি এমন রূপ ধারণ করে, যেখানে তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতা অনেক বেশি হয়, সেসময় কোনো সুরক্ষা ছাড়া মানুষের বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে যাবে৷

দু'টো জলবায়ু মডেলের ভিত্তিতে গবেষণাটি করা হয়েছে৷ একটি হলো ‘বিজনেস-অ্যাজ-উইজুয়াল’ পরিস্থিতি, যেখানে বলা হচ্ছে, জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ন্ত্রণে জোরালো পদক্ষেপ না নেয়া এবং দ্বিতীয়টি হলো বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি গড়ে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে রাখা

তবে এবারে গবেষণাটিতে কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে, যা আগে কখনো হয়নি৷ আর তা হলো এটি কেবল তাপমাত্রার উপর জোর দেয়নি৷ গবেষকরা বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন ‘ওয়েট-বাল্ব টেম্পারেচার', অর্থাৎ তাপমাত্রা, আর্দ্রতা এবং এর সমন্বয়ে মানুষের শরীর ঠান্ডা হতে কত সময় লাগে এই তিনটি বিষয়ের সমন্বয়কে৷ গবেষণায় ‘ওয়েট-বাল্ব টেম্পারেচার’ এর মাত্রা ধরা হয়েছে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস৷ অর্থাৎ এর উপরে তাপমাত্রা পৌঁছালে মানুষের বেঁচে থাকা কঠিন হবে৷ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই শতকের শেষ নাগাদ ‘বিজনেস-অ্যাজ-উইজুয়াল’ পরিস্থিতিতে দক্ষিণ এশিয়ার কয়েকটি দেশে ‘ওয়েট-বাল্ব টেম্পারেচার’ ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হবে, অর্থাৎ মানুষের সহনীয় তাপমাত্রার উপরে উঠে যাবে৷

দক্ষিণ এশিয়ার ৩০ ভাগ মানুষ এই চরম দাবদাহের শিকার হবে বলে জানানো হয়েছে প্রতিবেদনে৷ এতে আরও বলা হয়েছে যেসব এলাকা ঘনবসতিপূর্ণ এবং কৃষিজমি রয়েছে, যেসব এলাকা হয়ে উঠবে চরমভাবাপন্ন৷ কৃষক, মজুর ও শ্রমিকদের বেশিরভাগই কাজ করেন বাইরে, অর্থাৎ ফ্যান বা এয়ারকন্ডিশনের সাহায্য পাবেন না তারা৷ ফলে হিট স্ট্রোকের কবলে পড়বেন তারা৷ বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তান আগামী কয়েক দশকে সবচেয়ে বেশি তাপ্রবাহের কবলে পড়বে বলে জানানো হয়েছে প্রতিবেদনে৷ ২০১৫ সালে এর কিছুটা প্রভাব দেখা গেছে৷ ঐ বছর গ্রীষ্মে চরম দাবদাহে ভারত ও পাকিস্তানে সাড়ে তিন হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে৷

তবে গবেষকরা বলছেন, তারা যে মডেল তৈরি করেছেন এটা একটা আশা জাগাতে পারে৷ কারণ এই মডেলে উল্লেখ করা হয়েছে, কী কী পদক্ষেপ নিলে ‘ওয়েট-বাল্ব টেম্পারেচার’ বৃদ্ধির মাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখা সম্ভব হবে৷ বর্তমানে এই তিনটি দেশে ‘ওয়েট-বাল্ব টেম্পারেচার’-এর মাত্রা ৩১ ডিগ্রিতে পৌঁছে গেছে৷

গবেষণাটির প্রধান গবেষক যুক্তরাষ্ট্রের এমআইটি-র গবেষক এলফাতিহ এলতাহিরহে সংবাদ সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ‘‘কার্বন নিঃসরণ হ্রাসের মাধ্যমে আমরা এই বিপদ থেকে রক্ষা পেতে পারি৷ এটা এমন একটা বিষয় যা এড়িয়ে যাওয়ার বা উপেক্ষা করার উপায় নেই৷’’

এপিবি/ডিজি (এপি, এএফপি, রয়টার্স)