লিবিয়া সম্মেলন: ক্ষীণ আশার আলো
২০ জানুয়ারি ২০২০অনেকদিন ধরে জার্মানি বৈশ্বিক বিভিন্ন ইস্যুতে তার ভূমিকা পালনে হিমশিম খাচ্ছিলো৷ বা অন্যভাবে বললে বলা যায় যে, অন্যতম শিল্পোন্নত দেশ ও ইউরোপের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্র হওয়া সত্ত্বেও জার্মানি দায়িত্ব পালন করতে পারছিল না৷
এই অবস্থায় রবিবার ফ্রান্স, রাশিয়া, তুরস্ক ও মিশরের প্রেসিডেন্টকে বার্লিনে স্বাগত জানান জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷ ব্রিটেন ও ইটালির প্রধানমন্ত্রীও ছিলেন সেখানে৷ যুক্তরাষ্ট্র তার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে আর আরব আমিরাত, ইইউ ও আফ্রিকান ইউনিয়ন তাদের প্রতিনিধিদের বার্লিনে পাঠিয়েছিল৷
আর লিবিয়ার দুই পক্ষ - জাতিসংঘ সমর্থিত সরকারের প্রধান ফায়েজ এল-সারাজ ও লিবিয়ার একটি বড় অংশের নিয়ন্ত্রণ নেয়া খলিফা হাফতারও বার্লিনে উপস্থিত ছিলেন৷ তবে তাঁরা একে অপরের সঙ্গে সরাসরি কোনো কথা বলেননি৷ এর মধ্য দিয়েই আসলে লিবিয়ার বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে একটা ধারণা পাওয়া যায়৷
২০১১ সালে গাদ্দাফির পতনের পর থেকে লিবিয়ায় গৃহযুদ্ধ চলছে৷ এর সমাধানে বিভিন্ন সময় আন্তর্জাতিক অনেক পক্ষ যুক্তও হয়েছে৷ তবে তারপরও সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের তুলনায় লিবিয়ার পরিস্থিতি কমই গুরুত্ব পেয়েছে৷
লিবিয়া নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজনে অন্যদের চেয়ে জার্মানি সুবিধাজনক অবস্থানে ছিল৷ কারণ, ২০১১ সালে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে লিবিয়া নিয়ে ভোটের সময় জার্মানি অনুপুস্থিত ছিল৷ গাদ্দাফির বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালাতে ভোট দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও ফ্রান্স৷ ঐ সময় ভোট দানে বিরত থাকায় জার্মানির অনেক সমালোচনা হলেও সেদিনের সেই সিদ্ধান্ত বর্তমানে সুবিধা হয়ে দেখা দিয়েছে৷ ফলে জার্মানি সফলভাবে লিবিয়া সম্মেলন আয়োজন করতে পেরেছে৷
ইউরোপীয়রা নিজেদের স্বার্থেই চাইবে লিবিয়া পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকুক৷ কেননা, উত্তর আফ্রিকা থেকে ইউরোপে শরণার্থীদের আসার প্রধান পথ এখন লিবিয়া৷ বছর চারেক আগে ইউরোপে আসা শরণার্থীদের ঢল এই অঞ্চলে পপুলিস্ট ও জাতীয়তাবাদী মনোভাবকে উসকে দিয়েছিল৷
বাস্তবায়ন হওয়ার আগ পর্যন্ত বার্লিন সম্মেলনে নেয়া সিদ্ধান্তগুলো শুধু একটি কাগজ মাত্র৷ তবে কিছু না করার চেয়ে এটি ভালো৷
ইয়েন্স থুরাও/জেডএইচ