নারায়ণগঞ্জে খালেদা
১৩ মে ২০১৪মঙ্গলবার ১১টার দিকে খালেদা জিয়া গুলশানের বাসা থেকে রওয়ানা হয়ে দুপুরের দিকে নিহত প্যানেল মেয়র ও কাউন্সিলর নজরুল ইসলামের বাসায় যান৷ সেখানে তিনি নিহতদের স্বজনদের সমবেদনা জানান৷ এ সময় খালেদা জিয়ার সঙ্গে দলের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন৷ তাঁদের সহানুভূতি জানানোর পর, খালেদা জিয়া নিহত আইনজীবী অ্যাডভোকেট চন্দন কুমার সরকারের সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুঁড়ির বাসায় যান৷ সমবেদনা জানানোর পর খালেদা জিয়া গুম, খুন এবং অপহরণের জন্য সরকারকে দায়ী করে বলেন, ‘‘সারা দেশে গুম, খুন ও অপহরণের জন্য দায়ী সরকার৷ এ জন্য সরকারকে পদত্যাগ করা উচিত৷ অবিলম্বে আমি এই সরকারের পদত্যাগ দাবি করছি৷''
নিহতদের পরিবারকে উদ্দেশ্য করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘‘হত্যার নেপথ্যে কারা জড়িত এ বিষয়ে আপনারা সাহসী ভূমিকা রাখছেন৷ এখন আপনাদের হুমকি দেয়া হচ্ছে৷'' এছাড়া এ সব পরিবারের কিছু হলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারিও দেন বিএনপি নেত্রী৷
তিনি র্যাব ১১-এর কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘‘র্যাব ১১-র প্রধান নিজেকে খুব ‘পাওয়ারফুল' মনে করেন৷ কারণ তিনি একজন মন্ত্রীর জামাই৷ তাছাড়া তাঁদের সঙ্গে গুম, খুন ও অপহরণে জড়িত অবৈধ প্রধানমন্ত্রীর সম্পর্ক রয়েছে৷ এ জন্য তারা নিজেদেরকে আইনের ঊর্ধে মনে করেন৷ অবিলম্বে এই ঘটনায় যাঁরা জড়িত তাঁদের গ্রেপ্তার ও সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে হবে৷'' তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘হত্যাকাণ্ডের মূল আসামি নূর হোসেনকে র্যাবই দেশের বাইরে পাঠিয়ে দিয়েছে৷ তারা এখন নিজেদের রক্ষায় ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে৷''
তিনি বলেন, ‘‘এদের সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা না হলে প্রতিবাদে নারায়ণগঞ্জসহ সারা দেশের মানুষ রাস্তায় নেমে আসবে৷ আমরাও রাস্তায় নামতে বাধ্য হবো৷''
বিএনপির চেয়ারপার্সন বলেন, ‘‘এই বাহিনী এখন জনগণের বিপক্ষে দাঁড়িয়েছে৷ এদের আর প্রয়োজন নেই৷ র্যাব যতদিন থাকবে, ততদিন আতঙ্ক থাকবে৷ শান্তি থাকবে না৷''
খালেদা বলেন, ‘‘আর নয় চোখের পানি, আর নয় গুম, খুন ও অপহরণ৷ এ সব বন্ধ করতে সরকারকে বিদায় নিতে হবে৷ এরা ক্ষমতায় থাকলে গুম, খুন ও অপহরণ বন্ধ হবে না৷ তাই এই সরকার যতক্ষণ ক্ষমতায় থাকবে, ততক্ষণ প্রতিবাদ করতে হবে৷''
নিহত প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম ও আইনজীবী চন্দন সরকারের বাসায় স্বজনদের সঙ্গে সাক্ষাতের পর খালেদা জিয়ার বক্তব্য কয়েকটি টিভি চ্যানেল সরাসরি সম্প্রচার করে৷ এ সময় ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় টেলিভিশন চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর৷
বিএনপি চেয়ারপার্সনের নিহতদের পরিবারকে সমবেদনা জানাতে ১৪ই মে নারায়ণগঞ্জ যাওয়ার কর্মসূচি ছিল৷ ঐ দিন নিহতদের পরিবারের সদস্যদের একসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ডেকে পাঠানোয় বিএনপি চেয়ারপার্সনের সফরের তারিখ একদিন এগিয়ে মঙ্গলবারের জন্য নির্ধারণ করা হয়৷
অন্যদিকে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ঢাকায় বলেন, ‘‘হত্যাকাণ্ডের শিকার পরিবারের সদস্যদেরকে সহানুভূতি জানাতে নয়, বরং দীর্ঘদিন পর নতুন করে সহিংসতা বাড়ানোর লক্ষ্যে নতুন করে উস্কানি দিতেই খালেদা জিয়া নারায়ণগঞ্জ গেছেন৷''