সংলাপের উদ্যোগ নেয়ার অনুরোধ
২০ নভেম্বর ২০১৩মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিরোধী ১৮ দলীয় জোটের ২০ জন প্রতিনিধি বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন৷ তাঁরা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে প্রায় এক ঘণ্টা দেশের বর্তমান রাজনৈতিক সংকট এবং বিরোধী দলের প্রস্তাবনা নিয়ে কথা বলেন৷ বৈঠক শেষে বঙ্গভবনের সামনে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, তাঁরা বর্তমান রাজনৈতিক সংকটের কথা রাষ্ট্রপতির কাছে তুলে ধরেছেন৷ রাষ্ট্রপতি যেহেতু রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ অভিভাবক তাই রাষ্ট্রপতিকে সমঝোতা এবং সংলাপের উদ্যোগ নেয়ার অনুরোধ করা হয়েছে৷ রাষ্ট্রপতি সংকট নিরসনে তাঁর সাংবিধানিক ক্ষমতার মধ্যে উদ্যোগ নেয়ার কথা বলেছেন, বলে জানান মির্জা ফখরুল৷ তিনি বলেন, তাঁরা রাষ্ট্রপতিকে সব দলের অংশগ্রহণে অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা বলেছেন৷
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব এর বাইরে আলোচনার বিস্তারিত না জানলেও প্রতিনিধি দলের কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিএনপি এখনো শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনকালীন সর্বদলীয় সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থানে অনঢ় রয়েছে৷ তবে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের অবস্থান থেকে সরে গিয়ে এখন সমঝোতার সর্বদলীয় সরকারে তাঁদের আপত্তি নেই৷ তবে তার সঙ্গে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, প্রশাসনে দলীয় নিয়োগ এবং বদলি আলোচনার ভিত্তিতে নিরপেক্ষ অবস্থানে আনা এবং নির্বাচনের ৯০ দিন আগে সংসদ ভেঙে দেয়ার শর্ত জুড়ে দিয়েছে৷ এসব শর্তপূরণ সাপেক্ষে তাঁরা সর্বদলীয় সরকারে যোগদান এবং নির্বাচনে অংশ নিতে রাজি আছেন৷ আর রাষ্ট্রপতিকে এসব বিষয় নিয়েই সংলাপ এবং সমঝোতার উদ্যোগ নেয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন খালেদা জিয়া৷
সুশাসনের জন্য নাগরিক, সুজন এর সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার মনে করেন, রাষ্ট্রপতির দ্রুতই সংলাপের উদ্যোগ নেয়া উচিত৷ তাঁর সাংবিধানিক ক্ষমতা কি, তা বিবেচনা না করে রাষ্ট্রের অভিভাবক হিসেবেই এই উদ্যোগ নেয়া উচিত৷ কারণ রাষ্ট্রপতির উদ্যোগের একটি নৈতিক গুরুত্ব আছে৷ তিনি বলেন সংলাপ ছাড়া বর্তমান সংকট নিরসনের আর কোনো পথ নেই৷ নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য করতে হলে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে৷ নয়তো দেশ সংঘাতের দিকে এগিয়ে যাবে৷ তাতে কোনো দলই লাভবান হবে না৷
বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি ছাড়াও ১৮ দলীয় জোটের জামায়াত, ইসলামী ঐক্যজোট. এলডিপি, জাগপা, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (জেপি), কল্যাণ পার্টি, বাংলাদেশ লেবার পার্টি, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন৷