জার্মানিতে মেয়াদের আগেই টিকার সুযোগ
৩০ জুন ২০২১চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যেই জার্মানির সব ইচ্ছুক মানুষকে করোনা টিকার প্রথম ডোজ নেবার সুযোগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সরকার৷ টিকাদান কর্মসূচি যথেষ্ট গতি পাওয়ায় এবং যথেষ্ট পরিমাণ টিকার সরবরাহের কারণে জুলাই মাসেই সেই প্রতিশ্রুতি পালনের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে৷ সরকারি সূত্র অনুযায়ী জুলাই মাসে এক কোটি ৭০ লাখ থেকে এক কোটি ৮০ লাখ মানুষকে করোনা টিকার প্রথম ডোজ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া যাবে৷ অবশিষ্ট সব মানুষের জন্য বায়োনটেক-ফাইজার অথবা মডার্না কোম্পানির এমআরএনএ টিকার ব্যবস্থা করছে জার্মান সরকার৷ যথেষ্ট সংখ্যক মানুষ সেই সুযোগ গ্রহণ করলে হেমন্তকালের মধ্যে জার্মানিতে করোনা সংকটের মাত্রা অনেক কমে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে৷ উল্লেখ্য, জার্মানিতে ১২ বছরের কম বয়সিদের জন্য টিকার অনুমোদন দেওয়া হয় নি৷
করোনা ভাইরাসের চরম ছোঁয়াচে ও বেশি মারাত্মক ডেল্টা সংস্করণের কারণে টিকাদান কর্মসূচির গতি বাড়ানোর তাগিদ বাড়ছে৷ জার্মানিতে সংক্রমণের হার ধারাবাহিকভাবে কমে গেলেও আক্রান্তদের মধ্যে ডেল্টার অনুপাত বেড়ে চলেছে৷ করোনা টিকার দুটি ডোজ নেবার ১৪ দিন পর এই ভেরিয়েন্ট থেকে সুরক্ষার মাত্রা যথেষ্ট বেড়ে যায় বলে একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে৷ তাই ঠিক সময়ে দ্বিতীয় ডোজ নেবার উপর জোর দেওয়া হচ্ছে৷ জার্মানিতে কিছু মানুষ সেই সুযোগ হাতছাড়া করছেন বলে অনুমান করা হচ্ছে৷ বিরোধী সবুজ ও উদারপন্থি দল সরকারের উদ্দেশ্যে টিকার সব ডোজ নিতে উৎসাহ দিতে প্রচার অভিযান ও আকর্ষণীয় উদ্দীপনার প্রস্তাব দিয়েছে৷
এদিকে ডেল্টা সংস্করণের কারণে ইউরোপে করোনা সংক্রমণের হার আবার বাড়তে শুরু করেছে৷ বিশেষ করে ব্রিটেন ও রাশিয়ায় ডেল্টা মাথাচাড়া দেওয়ায় সংক্রমণের হার গত সপ্তাহের তুলনায় ২০ শতাংশেরও বেশি বেড়ে গেছে৷ তবে ফ্রান্স, জার্মানি ও ইটালির মতো দেশে এই হার এখনো কমে চলায় কিছুটা স্বস্তির কারণ রয়েছে৷ গ্রীষ্মে ভ্রমণ ও পর্যটনের কারণে সেই প্রবণতা কতদিন বজায় থাকবে, তা নিয়ে অবশ্য সংশয় রয়েছে৷
ভ্রমণের ক্ষেত্রে কড়া বিধিনিয়মের মাধ্যমে ডেল্টা সংস্করণের প্রসার যতটা সম্ভব নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছে জার্মানির মতো দেশ৷ ব্রিটেন, রাশিয়া ও পর্তুগালের মতো উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ দেশ থেকে জার্মানিতে প্রবেশ করলে এমনকি টিকাপ্রাপ্ত মানুষদেরও দুই সপ্তাহের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনের নিয়ম পালন করতে হচ্ছে৷ জার্মানির রবার্ট কখ ইনস্টিটিউটের সূত্র অনুযায়ী সাম্প্রতিক কালে বিদেশ থেকে জার্মানিতে প্রবেশ করা মানুষের কারণে জার্মানিতে সংক্রমণের হার খুবই নগণ্য৷ গত চার সপ্তাহের হিসেব অনুযায়ী, মাত্র দুই শতাংশ ক্ষেত্রে বিদেশ থেকে আসা মানুষের কারণে সংক্রমণের সন্দেহ করা হচ্ছে৷ তবে ৪২ শতাংশ ক্ষেত্রে কোনওরকম সূত্র পাওয়া না যাওয়ায় সংক্রমণের উৎস সম্পর্কে কিছু বলা যাচ্ছে না৷
এসবি/কেএম (ডিপিএ, এএফপি)