Jackson death stuns world, spotlight on role of drugs
২৬ জুন ২০০৯একটা প্রশ্নও ক্রমশ বড় হয়ে উঠছে -- কেন মাত্র ৫০ বছর বয়সে চিরবিদায় নিলেন মাইকেল জ্যাকসন?
৫০ বছর এমন কী বয়স, যার আগামী জুলাইয়ে দশ বছরেরও বেশি সময়ের অঘোষিত নির্বাসনপর্ব শেষ করে মঞ্চে ফেরার কথা, সেই মাইকেল জ্যাকসন কেন এ বয়সে হঠাৎ চলে গেলেন পৃথিবী ছেড়ে? বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় দুপুরে লস এঞ্জেলেসের এক হাসপাতালে ‘পপ সম্রাট'-এর আকস্মিক মৃত্যু হয়৷ তারপর সময় যত গড়াচ্ছে, বাড়ছে কৌতুহল--- কেন এই আকস্মিক মৃত্যু?
রহস্যের ঘেরাটোপ থেকে আসল সত্যিটা বেরিয়ে আসতে কয়েকদিন অন্তত লাগবে এটুকু ধরেই নেয়া যায়৷ মার্কিন কর্তৃপক্ষও সেরকম ইঙ্গিতই দিয়েছে৷তবে সন্দেহ ডালপালা ছড়াচ্ছে কথায় কথায়৷পপ সম্রাটকে হারানোর জন্য অনেকে তার চিকিৎসকদের দুষছেন৷ জ্যাকসন পরিবারের মুখপাত্র ব্রায়ান অক্সম্যান বলেছেন, মাইকেল জ্যাকসনের আকস্মিক বিদায় দুঃখজনক হলেও এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই৷ তাঁর মতে, মাইকেল জ্যাকসনকে যে পরিমান ওষুধ খাওয়ানো হতো তাতে তাঁর এই পরিণতিই স্বাভাবিক৷অক্সম্যান জানান, পারিবারিক সূত্রে তিনি জানতে পেরেছেন, জ্যাকসন প্রচুর ওষুধ খেতেন৷ মাইকেল জ্যাকসনের সাবেক প্রোডিউসার তারাক বেন আম্মারও ব্রায়ান অক্সম্যানের সঙ্গে একমত৷ তারাক সরাসরি বলেছেন, এ মৃত্যুর জন্য চিকিৎসকরাই যে দায়ী এটা একদম পরিস্কার৷ চিকিৎসকরাইতো তাঁর চেহারাটা নষ্ট করেছিলেন, ব্যথা কমানোর জন্য তারাই তো তাঁকে এতগুলো করে ওষুধ খাওয়াতেন! তিউনিসীয় এই সঙ্গীত প্রযোজক তাঁর ক্ষোভ প্রকাশ করতে গিয়ে আরো বলেছেন, জ্যাকসন ছিলেন মনোব্যধিগ্রস্ত, সারাক্ষণ শুধু রোগ নিয়ে ভাবতেন আর ওই হাতুড়ে ডাক্তারগুলো সবসময় ওঁর পাশেই থাকতেন৷ এ কারণে ওঁ অসুস্থ হলেও দেখে কখনো বোঝা যেতো না৷
এদিকে জার্মান প্লাস্টিক সার্জন মাথিয়াস গেনজিওর বলছেন, প্লাস্টিক সার্জারির জন্য মাইকেল জ্যাকসন মারা গেছেন এ কথা ভাবা একেবারেই ঠিক হবে না৷ জার্মান এস্থেটিক সার্জারি অ্যাসোসিয়েশন-এর সেক্রেটারি গেনজিওর বলেছেন, প্লাস্টিক সার্জারির সময় বা পরে যেসব ওষুধ দেয়া হয় তা রোগীর কোনো ক্ষতি করে না৷ তাঁর ধারণা, মাইকেল জ্যাকসন ডাইসোমোরফোবিয়ায় ভুগছিলেন, যে রোগে ভুগলে রোগী সবসময় নিজেকে কুৎসিত ভাবে৷
মৃত্যুর কারণ যা-ই হোক, তাঁর অগণিত ভক্ত জানেন, সবচেয়ে বড় সত্যি হলো, চাঁদের দেশে হাঁটার ভঙ্গিতে নেচে নেচে আর প্রাণ মাতানো গান গেয়ে আর কেউ কোনোদিন তাদের স্বপ্নলোকে নিয়ে যাবেননা৷ মাইকেল জ্যাকসন যে আর নেই! শুধু ভক্তরা কেন, সঙ্গীত জগতের অনেক সুপারস্টারও এখন জ্যাকসন-শোকে কাতর৷সেলিন ডিওন জ্যাকসনকে ‘জীবনের চেয়ে বড়' বললেও তাঁর মৃত্যুকে সঙ্গীতের জন্য বড় ক্ষতি হিসেবে উল্লেখ করেছেন৷ মৃত্যুর জন্য মাইকেল জ্যাকসনের অতিরিক্ত মানসিক চাপকেই দুষেছেন তিনি৷ব্রিটেনের পপ গ্রুপ দ্য বী গীজ মনে করে, পপসম্রাটকে ব্যক্তিজীবন উপভোগ করার স্বাধীনতাটুকু দিলেও তিনি আরো কিছুকাল বেঁচে থাকতেন৷ পপ সম্রাজ্ঞী ম্যাডোনা কারণ অনুসন্ধানে যাননি, কাঁদতে কাঁদতে শুধু বলেছেন, ‘পৃথিবী একজন গ্রেটকে হারিয়েছে, তবে তিনি চলে গেলেও তাঁর গান চিরকাল বেঁচে থাকবে৷'
প্রতিবেদক : আশীষ চক্রবর্ত্তী, সম্পাদনা: আবদুস সাত্তার