মুম্বই-তে ফ্লেমিঙ্গোরা আসে
৪ আগস্ট ২০১৬মেগাসিটি মুম্বই-তে দু'কোটির বেশি মানুষ থাকেন৷ তাদের অর্ধেকের বেশি থাকেন ঝুগ্গি, অর্থাৎ বস্তিতে৷ আবার মুম্বইতে এ ধরনের অসাধারণ প্রাকৃতিক দৃশ্যও দেখতে পাওয়া যায়, কেননা থানে ক্রিকে প্রতিবছর ত্রিশ হাজারের বেশি ফ্লেমিঙ্গো পাখি আসে উত্তরের গুজরাত রাজ্য থেকে; কিছু পাখি আসে এমনকি মধ্যপ্রাচ্য থেকে৷
খাঁড়ির উত্তর দিকটা গতবছর থেকে সংরক্ষিত এলাকা বলে ঘোষণা করা হয়েছে৷ এখানে ম্যানগ্রোভ অরণ্যের কোনো কমতি নেই৷ শুধুমাত্র নৌকো করে এখানে আসা যায়৷
মেরিন বায়োলজিস্ট এন বাসুদেবন বনবিভাগের হয়ে কাজ করেন৷ মুম্বই-এর ম্যানগ্রোভ অরণ্যের সুরক্ষা তাঁর দায়িত্বে৷ বাসুদেবন বলেন, ‘‘বসন্তে জোয়ার এলে গোটা এলাকাটা নোনাজলে ভরে যায়৷ এ ধরনের পরিস্থিতিতে অন্য গাছ বাড়তে পারে না৷ কিন্তু ম্যানগ্রোভদের খাপ খাইয়ে নেওয়ার বিশেষ ক্ষমতা আছে, যে কারণে তারা সব সত্ত্বেও বাড়তে পারে৷ ম্যানগ্রোভদের সে ক্ষমতা না থাকলে, গোটা জঙ্গলটাই নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতো৷''
থানে ক্রিকের ম্যানগ্রোভ অরণ্যে নানাধরনের উদ্ভিদ ও প্রাণী থাকে৷ খাদ্যের কোনো অভাব নেই৷ ফ্লেমিঙ্গোরা যে অ্যালজি বা সমুদ্রশৈবাল খায়, তা গজায় খাঁড়ির কাদায়; ভাটা এলে সেগুলো বেরিয়ে পড়ে৷ এছাড়া কাদার মধ্যে অনেক ঝিনুক, শামুক, কাঁকড়া লুকিয়ে থাকে - তাও খায় ফ্লেমিঙ্গোরা৷ বহু মাছ ও কাঁকড়া ম্যানগ্রোভ অরণ্যে ডিম পাড়ে৷
তবে মুম্বই শহরের মাঝখানে এই বায়োটোপ যে একেবারে প্রকৃতির স্বর্গ, এমন নয়৷ শৌচাগার আর নিষ্কাশন পদ্ধতির অভাবে ময়লা জল সরাসরি সাগরে গিয়ে পড়ে, যেমন পড়ে প্লাস্টিক ও অন্যান্য বর্জ্য৷ তার ফলে ম্যানগ্রোভ অরণ্যের শ্বাসমূল বুজে আসে৷ পরিবেশের ক্ষণভঙ্গুর ভারসাম্য ব্যাহত হয়৷ বাসুদেবন জানালেন, ‘‘আমরা সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছি, তার মধ্যে নগর কর্তৃপক্ষও আছেন৷ কয়েক বছরের মধ্যেই তা কার্যকরী হবে বলে আমার বিশ্বাস৷ একটি বড় সিউয়েজ ট্রিটমেন্ট ফেসিলিটি বসাতে হবে, শুধু এক জায়গায় নয়, বিভিন্ন জায়গায়৷''
পরিবেশ দূষণ একমাত্র বিপদ নয়৷ গোটা মুম্বই জুড়ে বেআইনি বসতি একটা বড় সমস্যা৷ কোথাও কোথাও নতুন বস্তি তৈরি জন্য ম্যানগ্রোভ অরণ্য কেটে ফেলা হয়েছে৷ এও এক কঠিন বাস্তব৷