1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের সম্পর্কে আপনার যা জানা উচিত

২১ সেপ্টেম্বর ২০১৭

দ্য আরকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) সম্প্রতি একতরফা যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়েছে৷ এই বিদ্রোহী গোষ্ঠী আগস্টে পুলিশের উপর হামলা চালালে অভিযান শুরু করে দেশটির সেনাবাহিনী৷ ফলে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয় কয়েক লাখ রোহিঙ্গা৷

https://p.dw.com/p/2kPvP
রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের ঠেকাতে নিরাপত্তা বাহিনীর পাহারা
ছবি: Reuters/M. Ponir Hossain

দ্য আরকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি বা আরসা-র সদস্য কারা?

মিয়ানমার সরকার তাদের সন্ত্রাসী বলে আর মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ আছে দাবি করে৷ তারা গরিলা পদ্ধতিতে হঠাৎ করে নিরাপত্তা বাহিনীর উপর হামলা চালায়৷ সর্বশেষ ২৫ আগস্ট তাদের হামলায় ১২ নিরাপত্তা রক্ষী মৃত্যুবরণ করেছিল৷ বিশ্লেষক এবং স্থানীয় মানুষের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, এই বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নেতৃত্বে আছেন পাকিস্তানে জন্ম নেয়া আতা উল্লাহ, যিনি আবু আম্মার নামেও পরিচিত৷

মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলের রাখাইন রাজ্যে, যেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বাস, এই গ্রুপ কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে৷ এই অঞ্চলে মিয়ানমারের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের উপর অনেক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে৷ 

এই গ্রুপ কীভাবে সৃষ্টি হয়?

মিয়ানমারে ২০১২ সালে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার পর হারাকা আল-ইয়াকিন নামে যাত্রা শুরু করে বিদ্রোহী গ্রুপটি৷ তবে গতবছরের অক্টোবরে তাদের অবস্থান বড় আকারে প্রকাশ পায় যখন এর সদস্যরা মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষীদের উপর হামলা করে৷ সেই হামলায় নয় পুলিশ সদস্য প্রাণ হারান৷

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের উপর বহু বছর ধরে চলা নিপীড়নের ফলাফল হচ্ছে এই বিদ্রোহী গোষ্ঠী৷ রোহিঙ্গাদের সেদেশের নাগরিকত্ব দেয়া হয় না৷ আর স্থানীয় কর্তৃপক্ষ তাদেরকে বাংলাদেশ থেকে অবৈধ অনুপ্রেবশকারী হিসেবে বিবেচনা করে৷ সেদেশের সংখ্যাগুরু বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধেও রোহিঙ্গাদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণের এবং সহিংসতার অভিযোগ রয়েছে৷

জঙ্গিবাদী ইসলামিস্ট গোষ্ঠীর সঙ্গে কি তাদের যোগাযোগ আছে?

গত ডিসেম্বরে ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ বা আইসিজি-র একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় যে, বিদ্রোহী গ্রুপটি তৈরি হয়েছে সৌদি আরবে থাকা রোহিঙ্গাদের নিয়ে, যারা অতীতে আন্তর্জাতিক জিহাদিদের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ এবং সহায়তা নিয়েছিল৷ মিয়ানমার সরকারের দাবি, এই বিদ্রোহীরা বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানে প্রশিক্ষণ নিয়েছে৷ তবে আতা উল্লাহ দাবি করেছেন, আরসা-র সঙ্গে বিদেশি ইসলামিস্টদের কোনো যোগাযোগ নেই

তাদের কি পর্যাপ্ত অস্ত্রশস্ত্র এবং অর্থ রয়েছে?

বিদ্রোহী গোষ্ঠীটির অস্ত্রশস্ত্র তেমন একটা নেই৷ তারা কোথাও হামলার সময় মূলত ঘরে তৈরি বোমা, চাকু এবং লাঠিসোটা ব্যবহার করে৷ তাদের সেকেলে তলোয়াড় এবং বর্শাও ব্যবহার করতে দেখা গেছে৷ আইসিজি মনে করে, আরসা সম্ভবত বিদেশে বসবারতরত রোহিঙ্গাদের এবং সৌদি আরব ও মধ্যপ্রাচ্যে থাকা দাতাদের কাছ থেকে অর্থ সহায়তা পায়৷

আতা উল্লাহ কে?

আইসিজি-র প্রতিবেদন অনুযায়ী, আতা উল্লাহ-র জন্ম পাকিস্তানের করাচিতে৷ তবে তিনি বড় হয়েছেন সৌদি আরবে৷ তিনি আরবি ভাষা এবং রাখাইনে প্রচলিত বাংলা কথ্য ভাষায় পারদর্শী৷ ২০১২ সালে সৌদি আরব থেকে উধাও হওয়ার আগে তিনি সম্ভবত পাকিস্তানে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন৷ আতা উল্লাহ সরাসরি আরসার কর্মকাণ্ডের নেতৃত্ব দিচ্ছেন৷ তার সঙ্গে আধুনিক গরিলা লড়াইয়ের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত আরো কয়েকজন রয়েছেন বলে জানা গেছে৷

প্রতিবেদন: আশুতোষ পান্ডে/এআই