মালদায় তৃণমূল নেতা খুন রাজ্যের সার্বিক অরাজকতার খণ্ডচিত্র
৩ জানুয়ারি ২০২৫মালদায় তৃণমূলের সহ সভাপতি ছিলেন দুলালচন্দ্র সরকার। তিনি ইংরেজবাজারের কাউন্সিলরও ছিলেন। বৃহস্পতিবার প্রকাশ্য দিবালোকে তিনজন দুষ্কৃতী একটি বাইকে করে এসে তাকে গুলি করে হত্যা করে। সে সময় নিজের প্লাইউডের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন দুলাল।
ঘটনায় পুলিশ এখনো পর্যন্ত দুই জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের মধ্যে একজন বিহারের কাটিহারের বাসিন্দা। অন্যজন ইংরেজবাজারের বাসিন্দা। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম মহম্মদ সামি আখতার এবং টিঙ্কু ঘোষ। একজনের বয়স ২০ অন্যজনের ২২। কেন তারা দুলালকে খুন করলো, অন্য কারো নির্দেশে একাজ করা হয়েছে কি না, সে বিষয়ে এখনো পর্যন্ত কোনো তথ্য দেয়নি পুলিশ। তবে ধৃতদের জেরা করা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।
ঘটনার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে মালদায় গেছেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনও মালদায় পৌঁছেছেন মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে।
এদিকে মুখ্যমন্ত্রী, যিনি রাজ্যের পুলিশমন্ত্রীও বটে এই ঘটনার জন্য আঙুল তুলেছেন পুলিশের দিকে। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ''অবশ্যই পুলিশের গাফিলতিতে খুন হয়েছে।ওর উপরে আগেও আক্রমণ করা হয়েছিল। আগে নিরাপত্তা পেত, পরে তা তুলে নেওয়া হয়।''
প্রশ্ন উঠছে এখানেই। সাবেক আইপিএস অফিসার সন্ধি মুখোপাধ্যায় ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ''রাজ্যের পুলিশমন্ত্রী শাসকদলের এক নেতা খুন হওয়ার পর যখন পুলিশের দিকেই আঙুল তোলেন, তখন বোঝা যায়, সার্বিকভাবে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক কোন পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে।'' গোটা রাজ্যজুড়েই আসলে অরাজকতা চলছে। কিছুদিন আগে আরেক তৃণমূলনেতাকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর চেষ্টা হয়েছিল খোদ কলকাতা শহরে। দিকে দিকে শাসক-বিরোধী সংঘর্ষ চলছে। শাসকদলের ভিতরেই গোষ্ঠী কোন্দল চলছে। সংঘর্ষ হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে পুলিশমন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী যখন নিজের পুলিশের দিকেই আঙুল তোলেন, তখন বোঝা যায়, পরিস্থিতি ঠিক কোন পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে।
প্রবীণ সাংবাদিক আশিস গুপ্তা ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ''পশ্চিমবঙ্গে যে এক অরাজক অবস্থা চলছে, এই ঘটনাগুলিই তার প্রমাণ। প্রতিদিন কোনো না কোনো ঘটনা ঘটে চলেছে। যেখানে নেতারাই সুরক্ষিত নন, সেখানে সাধারণ মানুষের কী অবস্থা, তা বলাই বাহুল্য।''
এসজি/জিএইচ (পিটিআই)