‘ব়্যাপিড রেসপন্স টিম’
২ এপ্রিল ২০১২মানুষ ও বন্য জন্তুর মধ্যে হিংস্র সংঘাত নতুন কিছু নয়৷ কিন্তু এটা বাড়ছে উদ্বেগজনকভাবে৷ ভারতে প্রতি বছর মানুষের হাতে মারা পড়ছে কয়েক হাজার বন্যপ্রাণী৷ কারণটা সহজবোধ্য৷ জনবসতি ও শিল্প প্রকল্পের জন্য নির্বিচারে ধ্বংস করা হচ্ছে বনভূমি৷ খাদ্যের সন্ধানে হিংস্র জন্তু হানা দিচ্ছে লোকালয়ে৷ তাড়া খেয়ে আক্রমণ করছে মানুষকে৷ আর পাল্টা আক্রমণে মানুষের হাতে মরছে বন্যজন্তু৷ তারওপর আছে চোরাশিকারিদের দৌরাত্ম৷
দোষ কাউকেই দেয়া যায়না৷ এক পক্ষের প্রাণের তাগিদ, অপরপক্ষের আত্মরক্ষার৷ দোষ যদি থাকে তা হলো বন কেটে বসতি গড়া৷ এটা নিয়ন্ত্রণের জন্য আসাম সরকার গঠন করেছে ব়্যাপিড রেসপন্স টিম৷ রাখা হয়েছে ২৪ ঘণ্টার হেলপ লাইন৷ খবর পাওয়ামাত্র সেই টিম দৌড়ে যাবে সুসজ্জিত বাহন নিয়ে৷ তাতে আছে প্রশিক্ষিত বনকর্মী, পশু চিকিৎসক, ঘুম পাড়ানি ওষুধ ইত্যাদি৷
পশ্চিমবঙ্গের অবস্থাটা কেমন? রাজ্যের চিফ কনজার্ভেটর অব ফরেস্ট বি. মন্ডল বললেন, মানুষ ও বন্যজন্তুর হানাহানিটা বেশি হয় হাতির সঙ্গে৷ এটা নিবারণ করা যাবেনা৷ কারণ প্রথমত হাতির সংখ্যা বাড়ছে৷ আর দ্বিতীয়ত, হাতি পরিযায়ী জন্তু৷ এক জায়গায় থাকেনা৷ রাতেই এদের হামলা হয় বেশি৷
চিতাবাঘের ক্ষেত্রেও তাই৷ বন্যপ্রণী সংরক্ষণ রাজ্যে ভালো বলে চিতাবাঘের সংখ্যা বেড়েছে৷ এছাড়া, গ্রামে গরু, ছাগল, মুরগি সহজে পাওয়া যায়, ধরাও সহজ৷ তাই চিতাবাঘ গ্রামে ঢোকে৷ চোরা শিকারও প্রায় বন্ধ৷ রাজ্যে বনভূমি ধ্বংসের কথা অস্বীকার করে বন সংরক্ষণ মহাঅধিকর্তা বললেন, ১৯৮০ সালে বন সংরক্ষণ আইন চালু হবার পর বনাঞ্চল ধ্বংস খুব একটা হয়নি৷ পশ্চিমবঙ্গে তো নয়ই৷ অন্যান্য রাজ্যে বড় বড় শিল্প প্রকল্পের দরুণ কিছুটা হয়ত হয়ে থাকতে পারে৷
উল্লেখ্য, আসামে বন্যপ্রাণীর আদমসুমারি রিপোর্টে দেখা গেছে, রাজ্যে হাতির সংখ্যা যথেষ্ট বেড়েছে৷ ২০০৯ সালে ছিল ৫২৪৬৷ আর এ বছরে হয়েছে ৫৬২০৷ বেড়েছে গন্ডারের সংখ্যাও৷ আসামের পরিতোয়া অভয়ারণ্যে এক শৃঙ্গী গন্ডার ছিল ৮৪টি, রাজীব গান্ধী অভয়ারণ্যে ছিল ৬৪টি৷ এ বছর তা বেড়ে হয়েছে যথাক্রমে ৯৩ ও ১০০টি৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ