মাথাপিছু আয়ে ভারত থেকে আবারো এগিয়ে বাংলাদেশ
১৩ অক্টোবর ২০২১আইএমএফ মঙ্গলবার ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক (ডব্লিউইও) প্রকাশিত রিপোর্টে বাংলাদেশ ও ভারতকে করোনার প্রভাব কাটিয়ে বড় প্রবৃদ্ধি অর্জন করার কথা বলা হয়েছে৷ ভারতের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হবে বেশি, ৯ দশমিক ৫ শতাংশ, বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হবে ৪ দশমিক ৬ শতাংশ৷ ভারতের প্রবৃদ্ধি বাড়লেও গত বছর ভারতের অর্থনীতি বেশি মাত্রায় কমে গিয়েছিল, এ কারণেই আবার এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ এসেছে বাংলাদেশের সামনে৷
এক বছর আগে আইএমএফ এবারের মতোই ডব্লিউইও প্রকাশ করে জানিয়েছিল, ২০২০ সালে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হবে ৩ দশমিক ৮ শতাংশ, আর ভারতের প্রবৃদ্ধি কমে হবে ঋণাত্মক, অর্থাৎ (-) ১০ দশমিক ৩ শতাংশ৷ এর ফলে ২০২০ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপি হবে ১ হাজার ৮৮৮ ডলার ও ভারতের হবে ১ হাজার ৮৮৭ ডলার৷ অর্থাৎ বাংলাদেশ গতবার ঠিক এক ডলারে এগিয়ে ছিল৷
আইএমএফ এখন জানাচ্ছে, ২০২০ সালে প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩ দশমিক ৫ শতাংশ৷ তবে ভারতের প্রবৃদ্ধি ছিল ঋণাত্মক, (-) ৭ দশমিক ৩ শতাংশ৷ ফলে শেষ পর্যন্ত তাদের হিসাবে ২০২০ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপি হয় ১ হাজার ৯৬১ দশমিক ৬১৪ ডলার এবং ভারতের ১ হাজার ৯২৯ দশমিক ৬৭৭ ডলার৷ আসলে শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপি বেশি হয়েছিল ৩১ দশমিক ৯৩৭ ডলার৷
মূলত এবার রেকর্ড পরিমাণ প্রবৃদ্ধি অর্জন করার কথা বলা হলেও গত বছরের উচ্চ ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধির প্রভাবেই ভারত এখনো পিছিয়ে আছে৷ এমনকি আগামী বছরও ভারত পিছিয়ে থাকবে বলে মনে করে আইএমএফ৷ এবছরের পূর্বাভাসে বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপি বেশি হবে ২২ দশমিক ৩৫ ডলার৷
ভারত যেখানে অনেক এগিয়ে
বাংলাদেশ মাথাপিছু জিডিপিতে এগিয়ে গেলেও আকারের দিক থেকে ভারত বিশ্বের অন্যতম বড় অর্থনীতির দেশ৷ এবং ভারতের অর্থনীতিও বাংলাদেশের তুলনায় ১০ গুণ বড়৷ কোন দেশ কতটা সম্পদশালী তা সে দেশের নাগরিকদের ক্রয়ক্ষমতা দিয়ে বোঝা যায়৷ বিভিন্ন দেশের অর্থনীতিকে তুলনা করার জন্য ক্রয়ক্ষমতার সমতা বা পারচেজিং পাওয়ার প্যারিটির (পিপিপি) ভিত্তিতে জিডিপির আকার হিসাব করা হয়৷ আইএমএফের তথ্য বলছে, চলতি বছরে পিপিপির ভিত্তিতে জিডিপির হিসাবে বিশ্বে ভারতের অংশ ৭ দশমিক শূন্য ৩৯ শতাংশ, এবং বাংলাদেশের অংশ মাত্র শূন্য দশমিক ৬৫৯ শতাংশ৷
জিডিপিতে বাংলাদেশ পরপর দুই বছর ছাড়িয়ে গেলেও বেশ কিছু সামাজিক সূচকে বাংলাদেশ ভারতকে আরও সাত বছর আগে ছাড়িয়ে গেছে৷ বলা যায়, ভারতের মেয়েদের তুলনায় বাংলাদেশের মেয়েদের শিক্ষার হার বেশি ও নারীপ্রতি জন্মহার কম৷ নবজাতক ও পাঁচ বছরের নিচে শিশুমৃত্যুর হারও ভারতের চেয়ে কম বাংলাদেশে৷
এনএস/কেএম (প্রথম আলো)