1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কৃত্রিম কোমা

গুডরুন হাইসে/আরবি৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪

ফর্মুলা ওয়ানের জীবন্ত কিংবদন্তি মিশায়েল শুমাখার মস্তিষ্কে আঘাত পেয়ে কোমায় আছেন গত এক মাস যাবত৷ ফ্রেঞ্চ আল্পসে স্কি করতে গিয়ে মাথায় ভয়ংকর আঘাত পান তিনি৷ তবে এখন তাঁকে সেই ‘গভীর ঘুম’ থেকে জাগিয়ে তোলার প্রক্রিয়ায় চলছে৷

https://p.dw.com/p/1B3hX
ছবি: picture-alliance/dpa

ফ্রান্সের গ্রেনবেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শুমাখারকে যে ওষুধ দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছিল, সেটা বন্ধ করা হয়েছে যাতে ধীরে ধীরে তিনি জেগে ওঠেন৷ সংবাদমাধ্যমে এ কথা প্রকাশ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন শুমির হাজারো ভক্ত৷ তবে এতে দীর্ঘ সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন শুমাখারের ম্যানেজার সাবিনে কেম৷ তাই প্রশ্ন উঠেছে কৃত্রিম কোমার প্রক্রিয়াটিকে নিয়ে৷

প্রশ্ন হলো: কী এই কৃত্রিম কোমা?

অ্যানেস্থেসিয়া দিয়ে দীর্ঘ সময়ের জন্য ঘুম পাড়িয়ে রাখাকে কৃত্রিম কোমা বলা হয়৷ মারাত্মক দুর্ঘটনা বা কঠিন কোনো অপারেশনের পর, ডাক্তাররা নিরাময় প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করার জন্য দীর্ঘস্থায়ী ঘুমে পাঠিয়ে দেন রোগীকে৷

Michael Schumacher Porträt
কৃত্রিম কোমায় আছেন শুমাখারছবি: TOSHIFUMI KITAMURA/AFP/GettyImages

মস্তিষ্কে আঘাত লাগা মারাত্মক হতে পারে

অনেক সময় ভীষণভাবে হোঁচট খেলে বা পড়ে গেলে মস্তিষ্কে প্রচণ্ড লাগতে পারে, ফুলেও যেতে পারে৷ হাঁটু কিংবা হাতে চোট লাগলে ফোলাটা চারিদিকে ছড়িয়ে পড়তে পারে৷ কিন্তু মস্তিষ্ক হাড় দিয়ে ঘেরা৷ তাই এর ভেতরে চাপটাও বেশি হয়৷ এই অবস্থা জীবন বিপন্নকারী৷ এমনটা হলে চাপ কমানোটা অত্যন্ত জরুরি৷ এ জন্য রোগীর দেহের তাপ ৩২ থেকে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস নামানো হয়৷ এতে শরীরের মেটাবলিজম প্রক্রিয়ায় চাপ কমে৷ অক্সিজেনের ব্যবহার কম হয়৷ এই সব করা না হলে স্নায়ুকোষ মরে যেতে পারে এবং স্থায়ী ক্ষতিও হতে পারে৷

বিশ্রাম নিতে দেওয়া হয়

এই সময় শরীরকে যতদূর সম্ভব বিশ্রাম নিতে দেওয়া হয়৷ নিবিড় পর্যবেক্ষণে থাকলে শরীর অনেক কাজ করা থেকে অব্যাহতি পায়৷ নিশ্বাস-প্রশ্বাসের দায়িত্ব নেয় একটি যন্ত্র৷ হার্টবিট ও উচ্চরক্তচাপের দিকে সর্বদা লক্ষ্য রাখা হয়৷ রোগীকে স্টমাক টিউব কিংবা সেলাইন দিয়ে খাওয়ানো হয়৷

কৃত্রিম কোমার মাধ্যমে কঠিন আঘাতের ফলে হওয়া ‘স্ট্রেস' থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত থাকে রোগী৷ দীর্ঘস্থায়ী অ্যানেস্থিয়ার ফলে ভুক্তভোগীদের ব্যথার অনুভূতি হয় না৷ কারণ ওষুধ দিয়ে ব্যথা-বেদনার অনুভূতি অপসারিত করা হয়৷

রোগীকে কতদিন কৃত্রিম কোমায় রাখা দরকার, তা নির্ভর করে আঘাত কতটা গুরুতর তার ওপর৷ কারো কারো ক্ষেত্রে কয়েকদিনেই সঙিন অবস্থাটা পার করা যায়৷ আবার কোনো কোনো রোগীকে কয়েক সপ্তাহ অচেতন অবস্থায় নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখে দিতে হয়৷

পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঝুঁকিও থাকে

অন্যদিকে অচেতন অবস্থা দীর্ঘায়িত হতে থাকলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঝুঁকিও বেড়ে যায়৷ থ্রম্বোসিস বা রক্তনালীতে রক্ত জমাট বেঁধে যেতে পারে৷ ফুসফুসের সংক্রমণ, কার্ডিওভাসকুলারের সমস্যা, পেশি ও ইমিউন সিস্টেমে দুর্বলতা ইত্যাদি দেখা দিতে পারে৷ এজন্য রোগীকে প্রয়োজনের বেশি অচেতন অবস্থায় রাখতে চান না চিকিৎসকরা৷ মস্তিষ্কের চাপ তেমন সংকটপূর্ণ না হলে রোগীকে কৃত্রিম কোমা থেকে জাগিয়ে তোলা হয়৷ অ্যানেস্থেসিয়া ও ব্যথার ওষুধ ধীরে ধীরে কমিয়ে দেওয়া হয়৷ আর শরীরও ধীরে ধীরে নিশ্বাস-প্রশ্বাসের মতো কার্যক্রম নিজের হাতে তুলে নেয়৷

রোগীরা অবশ্য এতদিন পর জেগে উঠে অনেক কিছুই স্মরণ করতে পারেন না৷ অনেক সময় বিভ্রান্ত ও আক্রমণাত্মকও হয়ে ওঠেন তাঁরা৷ স্থায়ীভাবে মস্তিষ্কের ক্ষতি হয়েছে কিনা, সেটা নির্ধারণ করা যায় রোগী কৃত্রিম কোমা থেকে জেগে উঠলে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য