1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভোপাল গ্যাস বিপর্যয়ের ৩০ বছর

অরুণ শঙ্কর চৌধুরী২ ডিসেম্বর ২০১৪

১৯৮৪ সালের দোসরা থেকে তেসরা ডিসেম্বরের রাত্রে ভারতের মধ্য প্রদেশ রাজ্যের ভোপাল শহরে ইউনিয়ন কার্বাইড ইন্ডিয়া লিমিটেড'এর কারখানা থেকে বিষাক্ত গ্যাস বেরিয়ে হাজার-হাজার মানুষ হতাহত হন: এটি ছিল বিশ্বের বৃহত্তম শিল্প দুর্ঘটনা৷

https://p.dw.com/p/1Dy8n
Bildergalerie Bhopal Amnesty International EINSCHRÄNKUNG
ছবি: Image courtesy Amnesty International © Raghu Rai/Magnum Photos

মার্কিন ইউনিয়ন কার্বাইড কর্পোরেশন'এর ভারতীয় শাখা ইউসিল দ্বারা পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত ভোপাল কারখানায় সেভিন নামধারী কীটনাশকটি উৎপাদন করা হতো যে প্রক্রিয়ায়, তা'তে মাঝপথে মিথাইল আইসো-সায়ানেট বা এমআইসি নামক অতিশয় বিষাক্ত গ্যাসটি উৎপন্ন হয়৷

দুর্ঘটনার রাত্রে একটি এমআইসি ট্যাঙ্কে পানি ঢুকে গ্যাস নির্গত হয়৷ এই গ্যাস এবং অপরাপর কমবেশি বিষাক্ত রাসায়নিক গ্যাস প্রায় এক ঘণ্টা ধরে নির্গত হয়ে কারখানার কাছের বস্তিগুলিতে ছড়িয়ে পড়ে: বিষাক্ত গ্যাসের প্রকোপে পড়েন পাঁচ থেকে সাত লাখের বেশি মানুষ৷ মধ্য প্রদেশ রাজ্য সরকারের এফিডেভিট অনুযায়ী গ্যাসের প্রকোপে প্রাণ হারান ৩,৭৮৭ জন মানুষ - যদিও অন্যান্য সূত্র ১৬ থেকে ২৫ হাজার অবধি মানুষের প্রাণহানির দাবি তুলেছে৷ আহতের সরকারি সংখ্যা ৫ লাখ ৫৮ হাজার একশো পঁচিশ৷

দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে বিতর্ক রয়েছে: আদালতের ভিতরে এবং বাইরে৷ ভারত সরকার এবং স্থানীয় এনজিও'দের দাবি, কারখানা কর্তৃপক্ষের অক্ষমতা এবং বাজে মেরামতির কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে৷ অপরদিকে ইউসিল'এর বিশ্বাস, এ'টি ছিল একটি অন্তর্ঘাতের ঘটনা এবং কারখানার এক কর্মী এই অন্তর্ঘাতের জন্য দায়ী৷ সেই কর্মী নাকি হোসপাইপ দিয়ে ৬১০ নং এমআইসি ট্যাঙ্কে পানি ঢুকিয়ে এই দুর্ঘটনা ঘটিয়েছেন৷

দুর্ঘটনার পর পরই ভারত সরকার অকুস্থলে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে দেন - এমনকি ইউনিয়ন কারবাইড কর্পোরেশেনের প্রতিনিধিদেরও কারখানায় ঢুকতে দেওয়া হয়নি৷ দুর্ঘটনার তদন্তের ভার দেওয়া হয় পুরোপুরি সিএসআইআর বা সরকারি কাউন্সিল অফ সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ প্রতিষ্ঠানের হাতে৷ ঘটনার কার্যকারণ নির্ধারণ, দোষীদের খোঁজ, ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত চিন্তা, এ'সবের আগেও আসে পীড়িত জনগণের চিকিৎসা৷ স্থানীয় ডাক্তার অথবা হাসপাতালগুলি এতবড় একটা বিপর্যয়ের মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত ছিল না৷ থাকে অগণিত মৃতদেহ সৎকারের প্রশ্ন৷ সেই সঙ্গে প্রায় দু'হাজার গৃহপালিত পশুর লাশ সরাতে হয়েছে৷

ক্ষতিপূরণ নিয়ে যে দীর্ঘমেয়াদি আইনি প্রক্রিয়া শুরু হয়, তা'তে ইউনিয়ন কার্বাইড, ভারত সরকার এবং মার্কিন সরকার, সবাই সংশ্লিষ্ট ছিলেন৷ ১৯৮৫ সালেই ভারত সরকার আইন করে সরকারকে ভোপাল দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের একমাত্র প্রতিনিধি বলে ঘোষণা করেন৷ ১৯৮৬ সালের মার্চে ইউনিয়ন কার্বাইড ৩৫ কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রস্তাব দেয়৷ সে'বছরের মে মাসেই গোটা মামলা ভারতীয় আদালতের এক্তিয়ারে চলে আসে - অর্থাৎ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ক্ষতিপূরণের মামলা করার পথ ধাপে ধাপে বন্ধ হতে থাকে৷

শেষমেষ ১৯৮৮ সালের নভেম্বরে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট দু'পক্ষকে কোনো একটি আপোশে আসতে বলে৷ ১৯৮৯ সালের সেই আদালত-বহির্ভূত সমঝোতা অনুযায়ী ইউনিয়ন কার্বাইড ৪৭ কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ দিতে সম্মত হয় এবং অবিলম্বে তা প্রদানও করে৷ সব সত্ত্বেও দেখা যায় যে, ২০০৪ সালেও ভারতের সুপ্রিম কোর্ট সরকারকে ক্ষতিপূরণের বাদবাকি অর্থ পীড়িতদের হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দিচ্ছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য