ভোটার হলেন সন্তু লারমা
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১দীর্ঘ বছরে ধরে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের জনগণের নাগরিক সুবিধা আদায়ে আন্দোলন করছেন এ নেতা৷ ফলে বাংলাদেশের তিন পাহাড়ি জেলাসহ আদিবাসীদের অধিকার নিয়ে কাজ করেন এমন অনেক মানুষের কাছেই তিনি বেশ জনপ্রিয়৷
১৯৪৪ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি রাঙামাটি জেলার মহাপুরম এলাকায় জন্ম সন্তু লারমার বয়স এখন ৭৭৷ তবে এতো বছর দেশের ভোটার হিসেবে লিপিবদ্ধ ছিলেন না তিনি৷ তাই ছিল না জাতীয় পরিচয়পত্রও৷
বলা হয়ে থাকে যে, আঞ্চলিক পরিষদের আইনে তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে নতুন ভোটার তালিকা প্রণয়নের দাবিতে দীর্ঘদিন ভোটার হওয়া থেকে বিরত ছিলেন সন্তু লারমা৷
তবে গত মাসে জনপ্রিয় এ প্রবীণ নেতা রাঙ্গামাটি জেলায় ভোটার হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বাংলাদেশে ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম৷ আর সে অনুসারে বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্রও পাচ্ছেন তিনি৷
রাঙামাটি জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. শফিকুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘‘নিয়মানুসারে তিনি ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করার আবেদন করেছেন এবং আমরা তাকে অন্তর্ভুক্ত করেছি৷ তিনি সেই অনুসারে জাতীয় পরিচয়পত্রও পাবেন৷''
অগাস্টে মাসের ২৯ তারিখ তিনি ভোটার হয়েছেন বলে জানান শফিকুর রহমান৷
দীর্ঘ বছর বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র না নেওয়া পাহাড়ি এ নেতা কেন হঠাৎ করেই ভোটার তালিকায় নাম লিপিবদ্ধ করলেন সে বিষয়ে অবশ্য কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি৷
তবে ধারণা করা হচ্ছে যে, করোনা ভাইরাসের মহামারির কারণেই হয়তো ভোটার হয়েছেন এ নেতা৷ কেননা সরকারের সিদ্ধান্ত আছে যে, জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকলে কোভিড-১৯ এর টিকা পাওয়ার সুযোগ নেই৷
এদিকে রাঙ্গামাটির জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ইতিমধ্যে করোনা ভাইরাসের দুটি টিকাই নিয়েছেন তিনি৷ ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তির পর সার্ভার থেকে পাওয়া অস্থায়ী জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে তিনি টিকা নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন রাঙামাটির সিভিল সার্জন ডা. বিপাশ খীসা৷
উল্লেখ্য, শিক্ষা জীবনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন সন্ত লারমা৷ তিনি ১৯৮৩ সালে নিহত পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি নেতা মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার ছোট ভাই৷
১৯৭৬ সালে বড় ভাইয়ের হাত ধরে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সশস্ত্র শাখা ‘শান্তিবাহিনীতে' যোগদান করেন৷ পরে ভাইয়ের মৃত্যুর পর সংগঠনের নেতৃত্ব দিতে এগিয়ে আসেন তিনি৷
পরে ১৯৯৭ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের পর গঠিত পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান তিনি৷ প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় এখনও সেই দায়িত্বে বহাল আছেন সন্তু লারমা৷
আরআর/কেএম (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)