ভারত পারে, বাংলাদেশ পারবে না?
১৪ অক্টোবর ২০১৯ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআই-এর সভাপতি হচ্ছেন সৌরভ গাঙ্গুলি৷ বাঙালি বলে সৌরভকে নিয়ে নতুন করে গর্ব করছেন অনেকেই৷ বিসিসিআই-র সাবেক সভাপতিদের দীর্ঘ তালিকায় বাঙালির নাম আগেও বেশ কয়েকবার এসেছে৷ ভারতের হয়ে দাপটে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা প্রথম ব্যক্তি হিসেবেও যে সৌরভ এই দায়িত্ব পেতে চলেছেন তা-ও নয়৷
আসলে বিসিসিআই অনেকদিন ধরেই এক ধরনের নেতৃত্ব-সংকটে ছিল৷ জগমোহন ডালমিয়ার মৃত্যুর পর থেকেই সংকটের শুরু৷ তারপর শশাঙ্ক মনোহর দায়িত্ব নিলেও এক বছরের বেশি টিকতে পারেননি৷ অনুরাগ ঠাকুর এক বছর আর সিকে খান্না দুই বছরের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সভাপতি হয়ে ‘ঠেকার কাজ'ই চালিয়েছেন৷ একই দায়িত্বে আপাতত ১০ মাস থাকছেন সৌরভ৷ এ সময়ের মধ্যেই ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য ভালো কিছু করে দেখাতে হবে৷
কাজটা কঠিন আর সৌরভ গাঙ্গুলী তো কঠিনকে জয় করে অভ্যস্তই৷ সে কারণে তাঁর কাছে সবার প্রত্যাশা একটু বেশি৷ বাংলার ক্রিকেটার থেকে ভারতীয় দলে জায়গা পাকা করতে কী লড়াইটাই না লড়েছিলেন! প্রাথমিক ব্যর্থতায় হতাশ হয়েছিলেন অনেকে৷ প্রশ্ন উঠেছিল দলে থাকার যোগ্যতা নিয়ে৷ চার বছর পর আবার (১৯৯৬) সুযোগ পেয়েই লর্ডস টেস্টে দারুণ এক সেঞ্চুরি! সেটা ছিল প্রথম জবাব৷
১২ বছরের ক্যারিয়ারে আরো বহুবার সমালোচনায় বিদ্ধ হয়েছেন৷ কখনোই থেমে থাকেননি সৌরভ৷ ভারতীয় দলের প্রথম বাঙালি অধিনায়ক হয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়েছেন আরো৷এক সময়ের সমালোচকেরাও এখন তাঁর প্রশংসায় মুখে ফেনা তোলেন৷ হবেই তো, ভারতীয় ক্রিকেটের বদলে যাওয়ার শুরু তো তাঁর হাত ধরেই!
ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গলের প্রধান হয়ে প্রশাসক হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করেছেন ক্রিকেট বিশ্বের ‘দাদা'৷ এখন আরো বড় ময়দানে ‘দাদাগিরি' কেমন হয় সেটাই দেখার৷
তবে ভালো ক্রিকেটার ভালো প্রশাসকও হলে তাঁর হাতে দেশের ক্রিকেট সবচেয়ে বেশি নিরাপদ৷ বিসিবি আগের কোনো সভাপতির মধ্যে এই সমন্বয়টা পায়নি৷
প্রশ্ন হলো, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) কবে পাবে এমন সমন্বয়?
বিসিবি সভাপতির পদে মাশরাফি, সাকিব, মুশফিক বা অন্য কোনো ক্রিকেটারকেও একদিন দেখা যাবে, এমন আশা কি আমরা করতে পারি? বাংলাদেশ কি সেই পথে এগোচ্ছে? অনিল কুম্বলে, রবি শাস্ত্রীরা অবসরের পর জাতীয় দলের কোচও হতে পারেন৷ বাংলাদেশে কি তার জন্যও তৈরি হচ্ছে?