ভারতে খরা
৩১ জুলাই ২০১২দিল্লির আবহাওয়া দপ্তরের খবর অনুযায়ী, জুলাই মাস পর্যন্ত দেশে গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে ২৫ শতাংশ কম৷ মহারাষ্ট্র, কর্নাটক, হরিয়ানা, পাঞ্জাব, গুজরাট, পশ্চিম রাজস্থানে খরা অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে৷ বৃষ্টি কম হওয়ায় হিমাচল ও উত্তরাখন্ডের মতো জলবিদ্যুতের ওপর নির্ভরশীল রাজ্যগুলির সামনে বিদ্যুৎ সংকট আসন্ন৷ সেখানকার নদীগুলিতে অল্প বৃষ্টির দরুণ জলের মাত্রা নেমে যাওয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছেনা৷ সেচের জন্য জলাধারগুলিতে যথেষ্ট জলও নেই৷
খরা পরিস্থিতির মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ নিতে মঙ্গলবার দিল্লিতে বসে কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রীর নেতৃত্বে বিশেষ মন্ত্রীগোষ্ঠীর বৈঠক৷ স্থির হয়, প্রাথমিকভাবে সরকার জোর দেবে গবাদি পশুর খাদ্য, সেচ ও পানীয় জলের ব্যবস্থাপনা, কৃষিকাজের জন্য বিদ্যুৎ ও ডিজেলের ওপর ভর্তুকি বাড়ানো, কৃষি উৎপাদন উপকরণের দাম বৃদ্ধি রোধ ইত্যাদিতে৷
কেন্দ্রীয় কৃষি সচিবের মতে, ২০১২-১৩ সালের খাদ্যশস্য উৎপাদন কখনই গত বছরের মতো হবেনা৷ গত বছর হয়েছিল ২৬ কোটি টন৷ এবছরে খরিফ মরশুমে ধান চাষের এলাকা ১০ শতাংশ, মোটা দানা শস্য ২৩ শতাংশ এবং তুলো চাষের এলাকা ৭ শতাংশ কম৷
পরিকল্পনা কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান বলেন, সবথেকে চিন্তার বিষয় রাজস্ব ঘাটতি৷ বার্ষিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৭.৫ শতাংশ৷ সেটা বর্তমান অবস্থায় মোটেই সম্ভব নয়৷ বড়জোর হবে ৬ থেকে ৬.৫ শতাংশ৷ গ্রামীণ আয় মার খাওয়ায় আর্থিক সংস্কার স্থগিত রাখতে হবে৷ অর্থনীতি ও রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতার মধ্যে একটা ফাঁক থেকে যাবে৷ তাই এই দুয়ের মধ্যে কীভাবে সামঞ্জস্য রাখা যায়, সেটা দেশের নেতৃত্বকে ভাবতে হবে৷
উল্লেখ্য, ভারতের ১২৫ কোটি লোকের মধ্যে ৬০ কোটি লোক কৃষি-নির্ভর৷ দুই-তৃতীয়াংশ জমি বৃষ্টি-নির্ভর৷ কিন্তু বৃষ্টিপাতের ধরণধারণ বদলে যাচ্ছে৷ বাড়ছে খামখেয়ালিপনা৷ আবহাওয়াবিদদের বৃষ্টির পূর্বাভাষ মিলছেনা৷ উপ-মহাদেশে বৃষ্টিপাতের পরিবর্তন কেন হচ্ছে, তার সম্ভাব্য কারণ গত ৬০ বছরে বায়ুমন্ডলের তাপমাত্রা বাড়ছে, গলছে হিমালয়ের হিমবাহ৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ